গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে
সব দলের অংশগ্রহণ!
আল্লামা মোহাম্মদ সাদেক
নূরী ॥ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের আসন্ন নির্বাচন সম্পর্কে একটি মহলের
নানা মুখে প্রায়শঃ উচ্চারিত হচ্ছে ‘সব দলের অংশ গ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন’ প্রবাদ বাক্যের মতো। গ্রহণযোগ্যতা কার্যকর নির্বাচনের অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য। বিষয়টি
বিতর্কের উর্দ্ধে। কিন্তু নির্বাচন ‘গ্রহণযোগ্য’ হওয়ার সাথে নির্বাচনে ‘সব দলের অংশগ্রহণ’ শর্ত হতে পারে না।
কারণ, কোন নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করা বা না করা প্রত্যেকের ঐচ্ছিক বিষয় এবং একান্ত নিজস্ব
সিদ্ধান্ত। সুতরাং নির্বাচন ‘গ্রহণযোগ্য’ হওয়ার ক্ষেত্রে ‘সবদলের অংশগ্রহণ’-এর শর্তারোপ অসংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক এবং অবাস্তবও
বটে।
উল্লেখ্য যে, অন্যান্য সংসদীয় পদ্ধতির সরকারের মতো সাংবিধানিক নিয়মে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের
পূর্ব নিয়ন্ত্রণ,
তত্ত্বাবধান ও তদারকিতে সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হবে। নির্বাচনে
অবাধ ও নিরপেক্ষ পরিবেশে সম্ভব সর্বাধিক ভোটারের মতামত প্রতিফলিত হলেই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা
প্রতিষ্ঠিত হয়। এ ক্ষেত্রে কোন দল বা ব্যক্তির অংশগ্রহণ, কোন বিবেচ্য বিষয় হতে পারেনা। এখানে ভোটারদের অংশগ্রহণ আর নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা-ই
কেবল বিচার্য। নির্বাচনের সাংবিধানিকতা এবং গণতান্ত্রিক প্রাতিষ্ঠানিকতা স্থায়ী এবং
নিশ্চিৎ করার ক্ষেত্রে এর কোন বিকল্প নেই। নির্বাচনের সময়ে সাংবিধানিক ব্যবস্থার বাইরে
নিত্য নতুন ‘ফর্মুলা’
দিয়ে গণতন্ত্রকে নিজের মতো করে ব্যবহার/অপব্যবহার করার চেষ্টা
হ’তে পারে;
গণতন্ত্রের চর্চা হবে না; গণতন্ত্রের মর্মকথা
জনগণস্বার্থ রক্ষিত হবে না।
তবে, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা, যোগ্যতা,
দক্ষতা এবং প্রয়োজনীয় সরকারি সহযোগিতা ও সুবিধাদির ব্যাপারে
পরামর্শাদি অবশ্যই বিবেচনার দাবি রাখে। তা’ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তি ও দলের
পক্ষ থেকে উক্ত বিষয়াদি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষনের জন্য সংবিধান ও নির্বাচন বিধির আওতায়
দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়োগ করাও যেতে পারে, নির্বাচনকে সুষ্ঠু
এবং সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে বাধাগ্রস্থ করার উদ্দেশ্যে বুমেরাং হতে পারে যা সব রাজনৈতিক দলের জন্য প্রযোজ্য।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন