মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৩

যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির দাবিতে কলঙ্কিত স্বাধীনতা উদ্যান



যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির দাবিতে কলঙ্কিত স্বাধীনতা উদ্যান

নিষাদ হায়দার ॥ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকেই এসেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ডাক। এখানেই পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমর্পণে সৃষ্টি হয়েছিল বাংলাদেশ রাষ্ট্রের। গত ২৫ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে সেই স্বাধীনতার উদ্যানেই মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দন্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি চেয়ে শক্তির মহড়া দিলো জামাতে ইসলামী।
এটি হয়েছে বিএনপি-র রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে। আঠারো দলের জোটে মূলদল এখন বিএনপি নয় - জামাত। অন্তত আলোচিত জনসভায় এই সত্যটি স্পষ্ট হয়েছে দেশবাসীর কাছে। স্বাধীনতার উদ্যানে যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির দাবিতে জামাত-শিবিরের ব্যানার ফেষ্টুন মহামারিতে বিএনপি নেত্রী দেশের আগামী রাজনীতির বক্তৃতা দিচ্ছেন, এই দৃশ্য কোন স্বাধীনতাকামী কিংবা স্বাধীনতাকে ভালোবাসার মানুষের পক্ষে হজম করা সম্ভব নয়।
স্বাধীনতা উদ্যানে দাঁড়িয়ে তারা ব্যক্ত করেছেন কীভাবে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আওয়ামীলীগকে পঙ্গু করে জামাতের রাজত্ব কায়েম করবেন। একটি জাতির স্বাধীনতার চার দশক পর স্বাধীনতার বিরোধীদের এমন আস্ফালন আর কোন জাতির ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া যাবে না। জামাত তাদের ইচ্ছাকে কতদূর এগিয়ে নিতে পারবেন সে বিবেচনা পরে, কিন্তু এই মুহুর্তে বাঙালির ইতিহাসকে যে পায়ের নিচে ফেলেছেন সেটি তো সত্য! আর এই মূহুর্তটি তাদের হাতে এসেছে প্রধান বিরোধী দলের রাজনীতির কারণে। বিরোধী দল ক্ষমতার রাজনীতিতে এতটাই অন্ধ যে তারা স্বাধীনতাবিরোধীদের ছাড়া চলতে পারে না। অন্যদিকে প্রশ্ন জাগে, পলাতক আসামীরা কী করে ওখানে জমায়েত হয়ে দিব্যি বক্তৃতার ফোয়ারা ফোটালেন? কেন পুলিশ তাদেরকে দেখতে পেল না? বিএনপি নেত্রীর সমস্যা নেই তিনি তার রাজনীতির ঐতিহ্য ধারণ করেই জামাত-শিবির যুদ্ধপরাধীদের কাঁধে বসিয়ে স্বাধীনতা উদ্যানে পদদলন চালিয়েছেন। তারা গোড়া থেকেই যুদ্ধাপরাধীদেরকে চেনেন না , বিচারের ট্রাইব্যুনালকে মানেন না, যাদের রায় ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে তাদেরকে তারা রাজনৈতিক বন্দী মনে করছেন, সুতরাং স্বাধীনতা উদ্যান নিয়ে তাদের আকর্ষণ না থাকবারই কথা। এদেশে বিএনপির রাজনীতি শুরুই হয়েছিল স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী রাজাকার আলবদর শান্তিকমিটির পতিত মানুষগুলোকে নিয়ে। পঁচাত্তরের পর থেকে বিএনপি তাদেরকে ত্যাগ করেনি, বরং বিএনপির রাজনীতি তাদেরকে সুখ স্বপন স্বীকৃতি সবই দিয়ে আসছে। এ থেকেই বিএনপির রাজনীতিতে মুক্তিযুদ্ধ কী জিনিস তা অস্পষ্ট। আর সে কারণেই একজন মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার কাছে সংবিধান এখন স্রেফ “তেজ পাতা”। অর্থাৎ ফের তারা ক্ষমতা পেলে এ সংবিধান, ব্যবহার করা তেজপাতার মতোই ডাষ্টবিনে ফেলে দিবেন। দিতেই হবে, না দিলে তাদের কাঙিক্ষত যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করবেন কী করে? জোটের অন্যান্য যারা আছেন তারা সকলেই যে সহমত পোষণ করেন বা করবেন সেটাই স্বাভাবিক, সেটা তারাও গোপন করেন নি।
জামাতকে নিষিদ্ধ করার দাবি বহু পুরানো। গণজাগরণ মঞ্চ তাকে দিয়েছিলো নতুন গতি। দেশের সকল শ্রেণী পেশার স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ জামাতকে নিষিদ্ধ করার দাবির প্রতি তাদের সমর্থন এবং আন্দোলনে সম্পৃক্ততা যখনি প্রবল করতে শুরু করে, তখনি কোন এক অদৃশ্য সুতার টানে সে আন্দোলনকে ব্রেক কষে দেয়া হয়। বুঝতে অসুবিধা হয় না এর পিছনেও ছিল রাজনীতি। প্রচেষ্টা ছিলো জামাতকে বিএনপি থেকে আলাদা করার। কিন্তু সে   গুড়েবালি। এখন লেজে কুকুর নাড়াতে শুরু করেছে। সংলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে লেজের দৌরাত্ম্য যে আরো বহুগুণ বেড়ে যাবে তা কী একবারও ভেবেছেন স্বাধীনতার পক্ষের বিশিষ্টজনেরা? ইতিহাসে পুনরাবৃত্তি নেই, কিন্তু কথাটি আমাদের দেশে একেবারেই অচল। তার কারণ এখানের রাজনীতিতে গণতন্ত্র অচল, দুর্বৃত্তায়নই একমাত্র রাজনৈতিক লক্ষ্য।  আর সে কারণেই ইতিহাসের চাকা উল্টো দিকে ঘোরা শুরু করলে অবাক হবার কিছু নেই। স্বাধীনতা উদ্যানের প্রতি যে রাজনীতি সম্মান দেখাতে জানে না, সে রাজনীতি আর যা-ই হোক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েমে সমর্থ হবে না। অতীতেও হয়নি।
একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা ওকালতি করছেন যুদ্ধাপরাধীর মুক্তির জন্য। রাজনীতি করছেন তাদেরকে মসনদে ফিরিয়ে আনবার জন্য। হরতাল দিয়ে মানুষের জানমালের ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছেন রাজনীতির নামে। তা হলে তিনি আর মুক্তিযোদ্ধা থাকলেন কোথায়? আমাদের রাজনীতিতে সেটা আর কোন সমস্যা নয়, আমরা চিনি ক্ষমতা, বুঝি ক্ষমতা এবং জানি ক্ষমতাকেই। আর সে কারণেই আমরা মর্যাদা দিতে পারি না নিজের আত্মশক্তিতে জেগে ওঠা শাহবাগের মুক্তিযুদ্ধকে।
জাতি নির্বাচন চায়। না চেয়ে আর কোন পথ নেই। কোন রকম একটি নির্বাচন। তাই শর্টকাট পথটিই কাম্য। বাঙালি চরিত্রের এই বোধটিকে খুব ভালোভাবেই অনুধাবন করছে যুদ্ধাপরাধের রাজনীতি। আর সেটা বুঝেই তারা রাজপথ দখলের নিরবচ্ছিন্ন ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে আসছে। আর তা দেখে আমরাও আমাদের পুরাতন অভিধাটির প্রতি সুবিচার করতে কুন্ঠিত নই, ভাবখানা এমন - বীর্য যা দেখাবার তা একাত্তরেই দেখিয়ে ফেলেছি এখন আর প্রয়োজন নাই। তাই যুদ্ধাপরাধী আমাদের মাথার উপর বসে পা দোলালে ক্ষতি কী? এই ভাবনার পরিণতিতে আসছে নির্বাচন,  আমরাও উন্মাদ হবো, ওঠা নামানোর পালা বদলে তাই না?

সংবিধানকে ‘তেজপাতা' বলা রাষ্ট্রদ্রোহিতা


সময়ের সাফ কথা ....


সংবিধানকে ‘তেজপাতা' বলা রাষ্ট্রদ্রোহিতা


শাহ্‌ ফুয়াদ ॥ মহানগর বিএনপির আহবায়ক সংবিধানকে তেজপাতা বলেছেন। ২০০১ সালের অক্টোবরের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে এবং এরপরেও অনেক দিন ঢাকার মেয়র ছিলেন তিনি। গত ১৪ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির এক সমাবেশে দলের নেতাকর্মীদেরকে ‘দা-কুড়াল নিয়ে সরকারি দলকে মোকাবেলার আহ্বান জানানোর পর থেকে তাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। তাকে গ্রেফতারের জন্য গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গোপীবাগে তার বাড়িতে তল্লাশীও চালিয়েছিল। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের ইতিহাসের সাথে যে স্থানটি অত্যন্ত পবিত্র, গত ২৫ অক্টোবর বৃহষ্পতিবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় সভাপতির বক্তৃতায় তিনি বাংলাদেশের সংবিধানকে ‘তেজপাতা বলে উল্লেখ করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ব্যক্তিগত আকাঙ্খা চরিতার্থ করার জন্য যেভাবে সংবিধানের পরিবর্তন করেছেন, তাতে দেশে সংবিধান বলতে আর কিছু নেই। বর্তমান সংবিধানকে ‘হাস্যকর আখ্যায়িত করে তিনি আরও বলেছেন, এখন দেশে যে সংবিধান চলছে, তা জনগণের নয়, আওয়ামী লীগের। ১৮-দল ক্ষমতায় যেতে পারলে এই সংবিধানকে আপটুডেট করার কথাও বলেছেন তিনি।
নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে ক্ষমতায় গিয়ে সংবিধানকে পরিবর্তন, সংশোধন ও আপটুডেট করার ক্ষমতা অবশ্যই আছে। আর এর জন্যই তো গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য রাজনীতি করে থাকে। বাংলাদেশের ৪২ বছরেরও বেশি সময়ে সংবিধান নিয়ে সেজন্যই অনেক রাজনীতি হয়েছে। সংবিধানের অনেক কাঁটা-ছেড়া হয়েছে, সংশোধন হয়েছে। আর এর যত কাঁটা-ছেড়া বা সংশোধনই হোক না কেন তার সবই হয়েছে জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ভোটে। সাদেক হোসেন খোকার দল বিএনপিও এ পর্যন্ত নির্বাচনের মাধ্যমে তিন তিনবার ক্ষমতায় গিয়ে তাদের ইচ্ছামতো সংবিধানের পরিবর্তন ও সংশোধন করেছে এবং সেইসব সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে অনেক রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-১৯৭৯ সালের ৫ই এপ্রিল সংসদে যখন বিএনপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার অধিকারী, তখন সংবিধানের ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের সামরিক অভ্যুত্থানের পর হতে ১৯৭৯ সালের ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সামরিক সরকারের যাবতীয় কর্মকান্ডের ফরমান ও প্রবিধানের বৈধতা দান করা হয়, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ হিসেবে যা বহুল পরিচিত। ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় গিয়ে আওয়ামী লীগ সেই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে ১৫ আগষ্টের হত্যাকান্ডের বিচার ও এর রায় কার্যকর করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের কেউ সংবিধানকে ‘তেজ পাতা বলে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছে কেউ বলতে পারবে না। আর সংবিধানকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, হেয় করা যে কত বড় অপরাধ তার মতো রাজনীতিকের নিশ্চয়ই না জানার কথা নয়। সংবিধান নিয়ে এমন বক্তব্য অবশ্যই রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভের পর আওয়ামী লীগ তার মতো করে সংবিধান সংশোধন করবে-সেটা নিঃসন্দেহে অস্বাভাবিক কিছু নয়। তাই দেখা গেলো, ২০১১ সালের ৩০শে জুন সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিলুপ্ত করা হয়েছে। এই সংশোধনী জনগণের বিরুদ্ধে হয়েছে বলে কোনো দল মনে করলে তাকে অবশ্যই সাধারণ নির্বাচনে আবার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সংসদে গিয়ে এই ধারাটির বিলুপ্তি ঘটাতে হবে। এর আগে যে সংবিধান বহাল আছে সেই সংবিধানকে যথাযথ মর্যাদা দেওয়াই একজন রাজনৈতিক কর্মী বা নেতার স্বাভাবিক আচরণ। এর ব্যত্যয় ঘটলে সেই নাগরিক বা রাজনৈতিক কর্মীকে আইনের আওতায় এনে বিচারের সম্মুখীন করাই রাষ্ট্রের যথাযথ কর্তব্য। কারণ, বর্তমানে সংবিধানের আলোকেই এদেশটি, রাষ্ট্রটি কার্যকর রয়েছে, এই সংবিধানের আলোকেই খালেদা জিয়া সংসদে বিরোধী দলের নেত্রী। অন্যান্য নেতাদের কেউ কেউ জাতীয় সংসদের সম্মানিত সদস্য/সংরক্ষিত আসনের সদস্য আবার কেউ বা বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ। বিরোধী দলের একজন সদস্যও এখন পর্যন্ত জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন নি, বরং সবাই সংসদ সদস্য হিসেবে রাষ্ট্রের সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে চলেছেন। তাই সংবিধানকে ‘তেজ পাতা হিসেবে আখ্যায়িত করে সাবেক মেয়র যেভাবে এর অবমাননা করেছেন সেজন্য তাকে বিচারের কাঠগড়ায় সম্মুখীন করা এখন সময়ের দাবি। তিনি ১৯৭১ সালে একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন -একথা বিশ্বাস করাও এখন এদেশের সচেতন মানুষের কাছে এক লজ্জার ব্যাপার। স্মরণ করতে হয় বাংলার এই অমূল্য প্রবাদ বাক্যটি- ‘তরুলতা সহজেই তরুলতা, পশুপক্ষী সহজেই পশুপক্ষী, মানুষ প্রাণপণ প্রচেষ্টায় তবে মানুষ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাঁড়িয়ে ৭১-এর চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির দাবিতে জামায়াত-শিবির কর্মীদের সামনে যে সংবিধানকে ‘তেজপাতা বলতে পারেন তাকে আর কখনো মুক্তিযোদ্ধা বলা যাবে কি-না সে ব্যাপারে আজ স্পষ্ট ঘোষণা আসা দরকার।

সত্যপক্ষ সরকার চায় জাতি



সত্যপক্ষ সরকার চায় জাতি

শাহ্‌ আব্দুল বাতেন ॥ স্বাধীনতার পক্ষ এবং বিপক্ষ শক্তির মাঝে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে সমঝোতা নাটকের সূচনা হল গত ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যা থেকে। আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে এই সমঝোতা নাটকের মধ্যেই আবারও বেসামাল হয়ে উঠছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। এই সার্বিক অবস্থার শিরোনাম হতে পারে ‘একের ভিতরে তিন। যেমনঃ তত্ত্বাবধায়ক সরকার, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা, যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা। যা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার বাইরে দেশব্যাপী সংঘাত সহিংসতা সৃষ্টির এক অনিবার্য কারণ। বিশেষ করে ক্ষমতার নিত্য নেশায় মত্ত রাজনীতিকদের মধ্যে পারস্পারিক অনভিপ্রেত দ্বন্দ্ব অবিশ্বাস ও রুক্ষ-রুগ্ন রাজনীতির পরিণতি, দেশের কি পরিমাণ জান মাল বিনষ্টের মধ্য দিয়ে শেষ হবে - তা বলা মুশকিল। প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণে বলা যেতে পারে, দেশপ্রেম বিবর্জিত জাতীয় রাজনীতিতে বিশ্বাস অবিশ্বাস, পক্ষ-বিপক্ষ-নিরপেক্ষ ইত্যাদির ধুম্রজাল থেকে অসহায় সাধারণ জনগোষ্ঠীর ভাগ্যে আর কোন শান্তিপূর্ণ নিরাপদ পথের সন্ধান মিলছে না। কারণ জোটগতভাবে দেশের রাজনীতি আজ দুই ভাগে বিভক্ত। ফলে পূর্বাপর জোট সরকারগুলোর মেয়াদজুড়ে সরকার ও বিরোধী জোটের মধ্যে দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট গঠনমূলক চিন্তা ও কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কোন প্রকার সম্মিলিত উদ্যোগ বিগত বছরগুলোতে পরিলক্ষিত হয়নি। বিরোধী জোটের মাঝে মধ্যে সংসদে যাওয়া এবং উভয় জোট সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত বিভিন্ন স্থায়ী কমিটিগুলোতে কালে-ভাদ্রে
তাদের উপস্থিতিটুকু ছিল পদ-পদবী, ব্যবসা বাণিজ্য, স্বাস্থ্য-সেবা, বিদেশ ভ্রমণ ইত্যাদি রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা ভোগের নেশায়। জনগণের ভোটে নির্বাচিত এবং খাজনা-ট্যাক্সের অর্থে পরিপুষ্ট এসব সাংসদের নৈতিকতাহীন ভূমিকা, দেশবাসীর জন্য অনেক বড় দুর্ভাগ্যের বিষয়। এই দুর্ভাগ্য থেকে মুক্তির পথ আর কত দূর, কোন বিবেকবান মহলের চিন্তা সীমানায় তা স্থির করতে পারছেন কিনা জানা নেই।
মেয়াদের শেষপ্রান্তে বর্তমান মহাজোট সরকার, সাংবিধানিক পন্থায় আগামী জাতীয় নির্বাচন করার অঙ্গীকারে অনড়। ১৮ দলীয় বিরোধী জোট নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক কিংবা যে কোন নামের এমন একটি সরকারের অধীনে, নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবীতে অনড় থেকে ইতোমধ্যে দীর্ঘমেয়াদী হরতাল-অবরোধসহ নানা কর্মসূচী প্রদান ও হুমকি প্রদানে রত। ফলে দেশের অস্থির অবস্থা দিন দিন আরো অস্থির হচ্ছে। সময়ের কাঠগড়ায় দেশ জনতার জানমালের ক্ষয়ক্ষতির ফর্দ আরো দীর্ঘ হচ্ছে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ নামক এই মিশ্র ধারণাটি ভবিষ্যত বাংলাদেশ ও  প্রজন্মকে ভ্রান্ত পথের বন্ধুরতার দিকেই ঠেলে দিচ্ছে।
এবার প্রশ্ন হল, নিরপেক্ষতা কি এবং নিরপেক্ষ ব্যক্তি কে বা কারা? আমরা জানি, বিচারিক আদালতে বাদী-বিবাদী তথা প্রথম পক্ষ ও দ্বিতীয় পক্ষ নামে পক্ষদ্বয়ের যথার্থ প্রয়োগ রয়েছে। ধারণা করা হয়ে থাকে, এই দুই পক্ষের মাঝখানে মাননীয় আদালত নিরপেক্ষ। নিরপেক্ষ শব্দটির অর্থ বুঝায় কোন প্রকার পক্ষপাতহীনতা। তাহলে মাননীয় আদালত কি কোন প্রকার পক্ষবিহীন? - প্রশ্নই ওঠে না। কারণ মাননীয় আদালতের একটি কঠিন পক্ষ আছে। সেটি হল সত্যপক্ষ। সত্য পক্ষে অবস্থান করেই মাননীয় আদালত বাদী-বিবাদী পক্ষের মাঝে বিরাজিত বিরোধ বিপত্তির কবল থেকে সত্যকে উদ্‌ঘাটন করে রায় দিয়ে থাকেন। এখানে নিরপেক্ষ বা পক্ষপাতহীন কোন চরিত্রগত ভূমিকা নেই। কারণ পক্ষপাতহীন কোন চরিত্র ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় বা সত্য-মিথ্যার রহস্য বা মিশ্রনকে পৃথকিকরণে সক্ষম নয়। ১৯৯৬ সালে বর্তমান বিরোধী দলীয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায়, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক (তৎকালনি বিরোধী দলীয় নেত্রী) নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তনের দাবীকে পাগল ছাগল দিয়ে বুঝিয়েছিলেন। বর্তমান অবস্থায় এমন বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি না ঘটলেও ইতিহাস সময়ের ভাষায়ই কথা বলে।
উল্লিখিত মত বিস্তার শেষে আরেকটি ছোট অধ্যায়ে অনুপ্রবেশ করতে চাই। যেমন - জগতে ফেরেস্তারাও একটি পক্ষ অবলম্বনকারী দল। কেননা ফেরেস্তাগন স্রষ্টার আজ্ঞা বহনকারী। আর স্রষ্টা স্বয়ং মহাসত্য তথা সত্যপক্ষ। স্রষ্টা কারো উপর নির্ভরশীল কিংবা মুখাপেক্ষী নন। স্রষ্টা স্বাধীন। আর স্রষ্টার অনুশীলন, অনুকরণকারীও স্বাধীন। পাশাপাশি স্রষ্টার সৃষ্টি হিসেবে তাঁর আদেশ, উপদেশ, নিষেধ অমান্যকারীরা সন্দেহভাজন, স্বার্থান্বেষী, অন্যায় অসৎ ও মিথ্যাচার অবলম্বনকারী পক্ষ। তাহলে এই দুপক্ষের মধ্যে মানুষ মানুষের মাঝে নিরপেক্ষ মানুষ খুঁজে কোথায়? শাশ্বত রীতি অনুযায়ী এই দুপক্ষের বাইরে কোন মানুষ থাকতে পারে কি? এ প্রেক্ষিতে স্বভাবতই কারো মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, তাহলে ‘নিরপেক্ষ শব্দটির উৎস কোথায়? একেবারে  সহজ সরল ভাষায় বলতে গেলে, সমাজের চিন্তাশূন্য স্বার্থান্বেষী পক্ষপাতদুষ্ট একশ্রেণীর মানুষই ‘নিরপেক্ষ শব্দটির প্রবর্তক বলে বোধ করি। এই অজ্ঞতাগ্রস্ত অদূরদর্শী-চিন্তাশীল শ্রেণীটাই দেশ সমাজ ও রাষ্ট্রের অবাধ উন্নয়ন অগ্রগতির পথে সব সময়ই পর্যাক্রম অন্তরায়।
সত্য তথা ন্যায়নীতির পৃষ্ঠে আঘাত করে অপরাধী অপরাধ করে ব্যক্তি দল বা গোষ্ঠীস্বার্থের জন্য, আর বিচারক বিচার করেন তাঁর সত্য ও ন্যায়ের পক্ষ অবলম্বন করে। এখানে নিরপেক্ষ একটি অলীক ধারণা। আর এই ভ্রান্ত ধারণার উপর ভর করে বরাবরই একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনপূর্ব কোন ধ্বংসাত্মক চিত্র জাতির জন্য কাঙ্খিত নয়। জাতীয় নির্বাচন সমাগত হলেই বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন করার শোরগোল এবং হুমকির চোটে গোটা দেশ অস্থির-অশান্ত ও বিস্তর ক্ষয়-ক্ষতির শিকার হয়। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তারই এক ধারাবাহিক অনাকাঙ্খিত রূপ। যে রূপের বিষাক্ত ছোবলে ইতোমধ্যে অনেক জানমালের ক্ষতি হয়ে গেছে। এই ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি, গণতন্ত্র ও মানবতা বান্ধব নয়। এই পরিস্থিতি থেকে জাতির পরিত্রাণ আশু প্রয়োজন। বলাবাহুল্য যে, সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই জাতির প্রতিনিধিত্বকারী। ফলে জাতির এই আশু প্রয়োজনীয়তাকে মর্যাদার আসনে স্থান দিতে হলে, উভয় জোটকেই ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ, হিংসা-বিদ্বেষ, অহংকার, মিথ্যাচার ও আক্রমণাত্মক বক্তৃতা-বিবৃতি থেকে বেরিয়ে এসে একেবারে খোলা মনে বিশ্বাসের জায়গায় দাঁড়াতে হবে। একইসঙ্গে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ জনগণের আস্থা অর্জনে নির্বাচনপূর্ব শোভন আচরণ, গণমুখী কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে এবং এই বিশ্বাসের জায়গা থেকে যৌথ আন্তরিক প্রচেষ্টায় দক্ষ প্রশাসন, শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন, দূরদর্শী দেশী-বিদেশী পর্যবেক্ষক দল গঠন ও আনয়নের ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে যে কোন ধরনের সরকার পদ্ধতি বা সরকার প্রধানই থাক না কেন নির্বাচন সুষ্ঠু সুন্দর ও জনকল্যাণমুখী হতে বাধ্য। এখানে নিরপেক্ষ নামের সরকার প্রধান বা সরকার গঠনের প্রতিযোগিতায় থেকে শুধু সময় সম্পদ নষ্ট করা যাবে - কিন্তু গণমুখী রাজনীতি দেশপ্রেম ও নীতি-নৈতিকতার প্রশ্নে শান্তি শৃঙ্খলার অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছা যাবে না। এর বাইরের রাজনীতি যারা অব্যাহত রাখতে চান, তারা শুধু রাজনীতিক বা রাজনীতিজীবী হতে পারেন। কিন্তু রাজনীতিবিদ হতে পারেন না। মনে রাখা আবশ্যক যে, সত্যের সাথে মিথ্যার আপোষ বা সমঝোতা হতে পারে না। তৈল যেমন পানির সাথে মিশে না, তেমনি সত্যও মিথ্যার সাথে মিশে যেতে পারে না। স্বাধীনতা উত্তর ৪২ বছর ধরে স্বাধীনতার স্বপক্ষ ও বিপক্ষ শক্তির মধ্যে এমন ধারাই প্রবাহিত হয়ে আসছে। অতএব এমন একটি অনৈতিক কাজ কেউ যদি করে বা করাতে চায়, তাহলে ‘সত্য মিথ্যার কালিমায় কলংকিত হয়েই থাকবে। দেশবাসী আর আত্মপ্রবঞ্চনাময় রাজনীতির স্রোতে ভাসতে চায় না, চায় দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদদের নেতৃত্বে সত্য প্রতিষ্ঠিত হোক। আর এজন্য দরকার একটি সত্যপক্ষ   সরকার, কমিশন বা প্রতিষ্ঠান যারা সত্যনির্বাচন নিশ্চিত করবে।

ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি শোধে অঙ্গ বিক্রি



ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি শোধে অঙ্গ বিক্রি

সংলাপ ॥  ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি শোধ করতে বাংলাদেশের গরিব মানুষেরা নিজের অঙ্গ বিক্রি করছে বলে বিবিসির এক অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। সোমবার বিবিসির অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  ঋণের টাকা পরিশোধ করতে বাংলাদেশের অনেক গরিব মানুষ নিজেদের অঙ্গ বিক্রি করছে। ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো মাত্রাতিরিক্ত সুদ নেয় বলেও ওই প্রতিবেদনে বলা হয়। “দারিদ্র্য দূর করার একটি পদক্ষেপের অংশ হিসেবে অগণিত মানুষ ক্ষুদ্রঋণ দাতাদের ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ছে। এরপর তারা এমন একটি অবস্থায় পড়ছে যেখানে তারা ঋণের অর্থ শোধ করতে অপারগ,” সোফি কাজিনের এক প্রতিবেদনে এ খবর বেরিয়েছে। এতে বলা হয়, “ঋণ শোধের সর্বশেষ অবলম্বন হিসেবে অনেকে নিজের অঙ্গ বিক্রি করেছেন এবং বেরিয়ে এসেছেন দারিদ্র্যের কষাঘাত থেকে।
প্রতিবেদনে এ বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দেয়া হয় যে, “এই ঋণ দাতা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রকৃত অর্থে গড়ে উঠেছে ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে, যাদের বিদ্যমান ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেয়ার সামর্থ্য নেই। এগুলো গড়ে উঠেছে নারী উদ্যোক্তা তৈরি ও নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে।
ঋণের অর্থ সংগ্রহের পদ্ধতি এবং ঋণগ্রহীতারা একাধিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়েছেন কি না, সে বিষয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর যথাযথ যাচাই-বাছাই না করার বিষয়টিও উঠে এসেছে বিবিসির প্রতিবেদনে।
ফলে, এটা একটি দুষ্ট চক্র তৈরি করে যেখানে একটি ঋণের কিস্তি শোধ করতে ঋণ গ্রহীতারা অন্য এনজিও থেকে ঋণ করে। পরে অনেকে আর ঋণ শোধ করতে পারে না। তখন কিস্তি দেয়ার জন্য অঙ্গ বিক্রির মতো  চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেয় অনেকে - বলা হয় কাজিনের প্রতিবেদনে।
এ ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে, যার বেশিরভাগই জয়পুরহাটের কালাই গ্রামের।  
বাংলাদেশিদের অঙ্গ বিক্রির ওপর গবেষণাকারী মনিরুজ্জামানের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, অঙ্গ বিক্রি করা অনেকে তাকে বলেছেন- ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি শোধের চাপে পড়ে তারা এটা করেছেন।
একজন মনিরুজ্জামানকে বলেছেন, এনজিও কর্মকর্তাদের মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে তিনি গ্রাম ছেড়েছেন।
এনজিওর সামাজিক ও অর্থনৈতিক চাপ এতো অসহনীয় ছিল যে, তিনি কিডনি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন,” বলেন মিসিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক মনিরুজ্জামান।
দীর্ঘদিন ধরে নোবেলজয়ী ইউনূসের ‘কর্তৃত্বে থাকা গ্রামীণ ব্যাংকের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, “বেশিরভাগ গ্রহীতারই তাদের অ্যাকাউন্টে ঋণের অর্থের অন্তত ৭৫ ভাগ সঞ্চয় আছে।
তবে তাদের সুদের হার মাত্রাতিরিক্ত, তা ব্যাংকের সুদের হারের চেয়ে অনেক বেশি।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক ঋণের ওপর ২৭ শতাংশ, আর গ্রামীণ ব্যাংক ২০ শতাংশ সুদ নিয়ে থাকে।
সাম্প্রতিক গবেষণার বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এ খাতে ঋণ শোধের পদ্ধতি এবং বাংলাদেশের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আয় করার তেমন সুযোগ না থাকাটাই মূলত এ সমস্যার সৃষ্টি করছে।
ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে সামষ্টিক ঋণ কমে আসে বলে বিশ্ব ব্যাংক দাবি করলেও এবং এর মাধ্যমে ১০ লাখ বাংলাদেশি দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছে বলে একটি গবেষণায় দেখানো হলেও আরেকটি গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৬-০৭ সালে মাত্র ৭ শতাংশ ঋণ গ্রহীতা দারিদ্র্য সীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন।