মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০১৩

দুনিয়াতে কাফেরের শাস্তির বিধান নেই


দুনিয়াতে কাফেরের শাস্তির বিধান নেই

 

সাদিকুল হক ॥ অন্যায়ভাবে কোন জনপদকে তোমার প্রতিপালক ধবংস করেন না, যদি তার অধিবাসীরা নিজেদেরকে সংশোধন করে নেয়।’ (১১ সুরা হুদ : ১১৭)।

আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে অন্যায়-অবিচারের কোনো আশঙ্কা নেই। অতীতে যেসব জাতিকে ধ্বংস করা হয়েছে, তারা প্রকৃতপক্ষেই ধ্বংসের শিকার হওয়ার মতো মারাত্মক অপরাধে যুক্ত ছিল। উক্ত আয়াতে মুসলিহূন শব্দের মাধ্যমে এমন সব লোককে বোঝানো হয়েছে, যারা কাফের-মুশরিক হওয়া সত্ত্বেও লেনদেন, আচার-ব্যবহার এবং নীতি-নৈতিকতায় ভালো, যারা মিথ্যা কথা বলে না, ধোঁকাবাজি করে না, অন্যের কোনো ক্ষতি করে না। শুধু কাফের বা মুশরিক হওয়ার দোষেই দুনিয়াতে কোনো জনপদ বা জাতির ওপর আল্লাহ্‌র শাস্তি নাজিল হয় না, যতক্ষণ না তারা পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি করে। যুগে যুগে দেশে দেশে আল্লাহর যত গজব নাজিল হয়েছে, এর নেপথ্যে মিথ্যা বলা, লেনদেনে দুর্নীতি, নৈতিকতার অবক্ষয়, ধোঁকাবাজি ও অন্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ দায়ী। উল্লিখিত অপরাধকর্মসমূহের দুনিয়াতে শাস্তির বিধান আছে। আল্লাহ তায়ালার অস্তিত্ব বা বিধানকে প্রত্যাখ্যান অথবা তাঁর সঙ্গে অন্য কোনো কিছুর পূজা-উপাসনা করা কুফরি ও শিরকি তথা মহাপাপ। কিন্তু এসব পাপের জন্য আল্লাহ মানুষকে দুনিয়াতে শাস্তি দেন না। আল্লাহর বিধান মোতাবেক,  মানুষ এসব পাপের শাস্তি ভোগ করবে পরকালে।

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদকে (সা.)-কে কাফেররা অনেক অত্যাচার করেছে, অনেক গালিগালাজ ও নির্যাতন করেছেন কিন্তু তিনি (সা.) তাতে রাগান্বিত হয়ে তাদের শাস্তি দেননি। এখনও যদি কেউ ইসলামের অবমাননা করে তবে নবী মোহাম্মদ (সা.) এঁর অনুসারীদেরও উচিত ধৈর্য ধারণ করা এবং উত্তম ভাষায় ইসলামের শিক্ষা ও আদর্শ তাদের সামনে উপস্থাপন করা। ইসলামের অবমাননাকারীদের না বুঝিয়ে আঘাত করা বা হত্যা করার কোন বিধান কুরআনে নেই। কুরআনের আদেশ - কাফেররা যা বলে, তজ্জন্যে আপনি সবুর করুন এবং সুন্দরভাবে তাদের পরিহার করে চলুন’ (সুরা মুজাম্মেল: ১০)। অপমান ও অবমাননার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আদেশ কুরআনে নেই।

রসুল (সা.) অবিশ্বাসীদের বিদ্রূপে ব্যথিত না হয়ে তাদের সংশোধনের জন্য আল্লাহর দরবারে কেঁদে কেঁদে প্রার্থনা করতেন - হে আল্লাহ তুমি তাদেরকে ক্ষমা করো কারণ এরা বুঝে না

আমাদের দেশে যারা ইসলামের হেফাজতে করতে চায় তারা কি ইসলামের অবমাননাকারীদের সংশোধনের জন্য একবারও আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন? শান্তিবাদী বা ইসলামপন্থীদের আন্দোলন হবে শান্তিপূর্ণ। শান্তিবাদী আন্দোলনে জ্বালাও-পোড়াওয়ের কোন স্থান নেই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন