‘উলামায়ে ছু’ থেকে সাবধান
!
সাদীকুল হক ॥
যেসব আলেম লোভের বশবর্তী
হয়ে, টাকা পেয়ে,
অন্যের প্ররোচনায় কোন দল বা সমপ্রদায়ের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কর্মসূচী
দেয় তাদেরকে বলা হয় উলামায়ে ছু। শুধুমাত্র কুরআন শিখলেই কাউকে আলেম বলা যায় না, যারা কুরআনের শিক্ষাকে নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করে এবং মানুষকে সত্য
ও সঠিক পথ প্রদর্শন করে তারাই প্রকৃত অর্থে আলেম। আর যারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা
লাভ করে বটে কিন্তু নিজের জীবনে তার প্রতিফলন ঘটায় না এবং ব্যক্তিস্বার্থে কিংবা গোষ্ঠীস্বার্থে
কুরআনকে ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্তির দিকে ঠেলে দেয় তারা হলো উলামায়ে ছু, আলেম নামের কলঙ্ক বা ভ্রষ্ট আলেম।
সুরা আ’রাফের ১৭৬ নং আয়াতে সাড়ে তিন হাজার বছর আগের একটি ঘটনা সংক্ষেপে বর্ণনার মাধ্যমে
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন অর্থলোভী ও স্বার্থপর আলেমদের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করেছেন। বনি
ইসরাঈলের এক আলেম অনেক শিক্ষা লাভ করেছিল কিন্তু পার্থিব জীবনের কামনা-বাসনা ও ব্যক্তিস্বার্থে
সে মোহাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। ফলে তার শিক্ষা মূল্যহীন হয়ে যায় এবং তাকে চরম লাঞ্ছনা ও অপমানের
সম্মুখীন হতে হয়। জাব্বারীন সমপ্রদায়ের কাছ থেকে বিরাট অংকের ঘুষ খেয়ে উক্ত আলেম হযরত
মুসা আলাইহিস সালামের বিরুদ্ধে বদদোয়া করল। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এই অপকর্মের শাস্তিস্বরূপ
তার জিহ্বা কুকুরের মতো ঝুলিয়ে দিলেন। “তার অবস্থা হলো কুকুরের মতো, ওকে তুমি কষ্ট দিলে সে জিহ্বা বার করে হাঁপাতে থাকে, আর তুমি কষ্ট না দিলেও জিহ্বা বার করে হাঁপায়।” (৭ সুরা আরাফ:১৭৬ )।
আলেমদের জন্য এ ঘটনা থেকে শিক্ষণীয় বিষয় হলো, কোন আলেম যেন ঘুষ গ্রহণ
করে আল্লাহর অনুমোদনহীন বিষয়ে বক্তব্য দিয়ে দেশ ও জাতিকে বিভ্রান্ত না করে। আকাশের
নীচে ঘুষ বা উপঢৌকন গ্রহণকারী আলেমরাই সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট জীব। যুগে যুগে উলামায়ে
ছু দ্বারা ইসলামের যে ক্ষতি হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে তা ইসলামের চরম শত্রুরাও করতে পারে
নি।
উলামায়ে ছুদের তৎপরতা
এদেশের হক্কানী আলেম-উলামা, পীর-মাশায়েখগণ ইতিমধ্যে বুঝে গিয়েছেন। কে, কার কাছ থেকে টাকা খেয়ে ধর্মের নামে কি করছে সেদিকে যদি ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা সতর্ক
দৃষ্টি না দেয় তাহলে বাংলাদেশে ইসলাম নিয়ে ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারীর সংখ্যা বাড়বে! উলামায়ে
ছুদের তৎপরতা সম্পর্কে ধর্মপ্রাণ মানুষকে সবসময়
সাবধান ও সতর্ক থাকতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন