জনগণ শান্তি ও সত্যের পথে যেতে
চায় -
অর্ধসত্য-মিথ্যার পথে নয়
* তিনি সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং মিথ্যাকে ব্যর্থ করেন- যদিও অপরাধীরা
ইহা অপছন্দ করুক না কেন। ৮ঃ৮।
* আল্লাহ নিজ কালাম সমূহ দ্বারা সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেন যদিও অপরাধীগণ ইহাকে
অপছন্দ করে। ১০ঃ৮৩।
* আমরা তাহাদিগকে কর্ণ, চক্ষু এবং হৃদয় দান করিয়াছিলাম। কিন্তু তাহাদের
কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয় কোন কিছুইতাহাদের উপকারে আসিল না, কারণ তাহারা অস্বীকার করিত এবং
যে আযাব লইয়া তাহারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করিত উহাই তাহাদিগকে পরিবেষ্টন করিয়া ফেলিল। ৪৬ঃ২৭।
* সত্যকে মিথ্যা বলিয়া প্রত্যাখ্যানকারীদের জন্য দুর্ভোগ। ৮৩ঃ১১।
সংলাপ ॥ একরৈখিকভাবে লক্ষ্যকে কেন্দ্র
করে চিন্তাপ্রবাহের মাঝে ভ্রাম্যমান থাকলে বিবেকের অবস্থান খুঁজে পাওয়া যায়। আর বিবেক
থেকে উদ্ভব হয় চেতনা। চেতনাকে সুদৃঢ় করে যুক্তি। চেতনা স্থান-কাল-পাত্রের উপর নির্ভরশীল।
বস্তুবাদী দর্শনের বিষয়বস্তুর মতো ধর্মীয় দর্শনের বিষয়বস্তু সমূহ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত
ও নির্ভরশীল। বস্তু যেমন গতিশীল ও প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল ঠিক তেমনি মানুষের ধর্ম ও
ধর্মচিন্তা ছিল-আছে-থাকবে গতিশীল ও পরিবর্তনশীল। অর্থাৎ সদা সর্বদাই পুরাতন থেকে নতুনের
উত্তরণ এবং সম্মুখমুখী। তাই ধর্ম সর্ব সময়ে বর্তমান।
মানব
সমাজে ধর্ম কোন বিচ্ছিন্ন ব্যবস্থা নয়। প্রাকৃতিক দেহ সম্পদের উপর আধিপত্য বিস্তার,
সংস্কার ও সংকীর্ণতার মূল খুঁজতে গেলেই ধর্মের উৎপত্তি পাওয়া সহজ হবে। ধর্ম যখন আধিপত্যবাদীদের
(তা সমাজের যে অঙ্গনে বা স্তরেই হোক না কেন) হাতিয়ার হয়ে যায় তখন ধর্মের ভয়াবহ রূপ
ধরা পড়ে মানবসমাজে উগ্র ধর্মান্ধতা হয়ে।
আধিপত্যবাদীরা
সব সময়েই ধর্মকে ছলে-বলে-কলে কৌশলে এমনভাবে মোড়ক দিয়ে রেখে আসছে যাতে সাধারণ মানুষের
কাছে ধর্মের আসল রূপ 'শান্তি' ও 'সত্য' না বেরিয়ে পড়ে। তাই ধর্মের প্রগতিশীলতা এবং
মেহনতী মানুষের হাতিয়ার হতে পারেনি এখনও পারছে না আর এজন্য প্রয়োজন সর্বাগ্রে ব্যক্তিস্বার্থের
উর্দ্ধে একনিষ্ঠ, শান্তিপ্রিয়, সত্যবাদী, নির্ভীক, দেশপ্রেমিক রাজনীতিক দল ও সরকার।
শ্রমজীবী
মানুষ হলো ধর্মভীরু, সংগ্রামী বিশেষ করে বাংলাদেশে। সমাজ কাঠামো পরিবর্তন করে প্রগতির
পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন ধর্ম যে স্বভাব, শান্তি ও সত্যের আঁধার
তা ব্যাপকভাবে প্রচার করা। শুধু তাই নয় আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে ধর্মের বা জীবন চলার পথে
মানুষের প্রগতির পথে কোন পরিবর্তন আনবে না কিন্তু সহায়ক এটা পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দেয়ার
জন্য রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে যারা সত্যকার দেশ ও জাতির জন্য নিবেদিত প্রাণ হতে চায়
তাদের প্রথমে শান্তি ধর্মকে ধারণ-লালন-পালন করতে হবে। ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে
সার্বিক শান্তি দিয়ে মোকাবেলা করতে হবে আধিপত্যবাদীদের- এটাই প্রকৃত ধার্মিকের কাজ।
বাংলাদেশের
বড়ো বড়ো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ধর্ম-ব্যবসায়ী, ধর্মবেত্তারা এমনভাবে ঢুকে পড়ে মিথ্যাচারের
প্রভাব বিস্তার করে বসে আছে যাতে মনে হয় রাজনীতিকরা আফিমের নেশায় বুঁদ হয়ে আছে। দীর্ঘ
৩৮ বছরে শ্রমজীবী মানুষকে তারা ধর্মের দোহাই দিয়ে, বেহেস্তের প্রলোভন দেখিয়ে, ভবিষ্যতের
কথা বলে মিথ্যাচারের মাধ্যমে ধর্মের নামে ব্যবসার জাল বিছিয়ে শোষণ এবং শাসন করে যাচ্ছে।
এদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে উঠতি রাজনীতিক লুটেরা শ্রেণী। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আজ বাংলাদেশের
রাজনীতিকদের উপর থেকে আস্থা হারাতে হারাতে এমন এক পর্যায়ে চলে যাচ্ছে যে, যে কোন সময়ে
যে কোন অঙ্গনে কোন ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চললে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এটাই বাংলাদেশের
বাস্তবতা।
তাই
মিথ্যাচার ছেড়ে দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য রাজনীতিকরা রাজনীতি করুন, ধর্ম-ব্যবসায়ী
ধর্মবেত্তারাও ধর্মজীবী না হয়ে ধর্মের সত্যকে তুলে ধরুন নচেৎ আপনাদের কথাও কেউ কানে
নেবে না।
বাংলাদেশে
আপনাদের চেহারা জনসম্মুখে প্রকাশ হয়ে পড়েছে। আপনারা নবী মুহাম্মদ (সঃ)-এঁর ধর্ম ইসলাম
(শান্তি) প্রতিষ্ঠার জন্য কোন কর্মকান্ড করছেন না বরং ওহাবী-এজিদি-মওদুদী পন্থা অনুসরণ
করে মুখে মুহাম্মদী ইসলামের কথা বলে সম্পদের পাহাড় বানানোয় ব্যস্ত। দেশবাসী আপনাদের
সব সম্পদের খবর পেয়ে গেছে। জনগণ রুখে দাঁড়ালে মধ্যপ্রাচ্যের পোশাক ও সংস্কৃতি দাড়ি-টুপি-জোব্বা
আপনাদের জন্য কাজে লাগবে না। তাই অদূর ভবিষ্যতের জন্য রাজনীতিক সহ পেশাজীবীরা সজাগ
হোন। সময় ও পরিস্থিতি কাউকে ছাড় দেয় না। কেহই আল্লাহর আইনের বাইরে নয়। এটাই স্মরণ রাখার
চেষ্টা করলে জাতির জন্য শ্রেয় এবং দেশের উন্নতির জন্য চলার পথের সহায়ক হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন