মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৪

চাওয়া পাওয়া

চাওয়া পাওয়া

দিগন্ত ॥ আল্লাহ্‌ সর্বত্রই বিরাজমান। এমন কোন স্থান নেই যেখানে তিনি অনুপস্থিত। অতএব, তাঁকে এখান থেকে ওখানে খুঁজে বেড়ানো মূর্খতা। আল্লাহকে খোঁজা এবং খুঁজে পাওয়ার ধারণাতেই রয়েছে ভ্রান্তি। কিভাবে তাঁকে খুঁজতে এবং খুঁজে পেতে পারি যিনি এখন এখানেই রয়েছেন? সুতরাং আল্লাহকে পাওয়ার জন্য প্রচেষ্টা নয় বরং আল্লাহকে দেয়ার প্রশ্নটাই প্রধান। আমরা শুধু পেতে চাই, এমনকি আল্লাহকেও পেতে চাই আমরা। আমাদের এই চাওয়ার মধ্যেই আছে সংকীর্ণতা। পাওয়ার জন্য আমাদের লোভ, ব্যক্তিস্বার্থ, সংকীর্ণতা ও ক্ষুদ্রতার প্রাচীর নিজেকে পৃথক করে রেখেছে সত্য থেকে।
আল্লাহকে পাওয়ার জন্য কোন প্রচেষ্টাই আমরা করতে পারি না। প্রচেষ্টা করতে পারি কেবল দেয়ার জন্য। দিতে দিতে যখন ব্যক্তি স্বার্থের প্রাচীরটি ভেঙ্গে যাবে তখনই একের সাথে একাত্ম হওয়া যাবে। কিন্তু এই দেয়া পাওয়ার লোভে নয়। দিতে হবে পাওয়ার লোভটুকুই।
আল্লাহ তায়ালা যা দেয়ার তার সবই দিয়ে দিয়েছেন। জীবন প্রাপ্তির পর দেয়ার পালা আমাদের। আল্লাহ যেভাবে সব দিয়ে দিয়েছেন আমরাও যদি সেভাবে সব দিয়ে দিতে পারি তাহলে তার সাথে একাত্ম হওয়ার সুযোগ আসে। নিজেকে আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করার প্রচেষ্টাই উপাসনা। দিনে দিনে ভক্তি-দ্বারা, সেবার দ্বারা তাঁর মধ্যে নিজেকে ব্যাপ্ত করে দেয়ার প্রচেষ্টাই তাঁর উপাসনা।
আমরা যেন কখনো অভিযোগ না করি যে আল্লাহকে পাচ্ছি না। আমরা যেন বলতে পারি নিজেকে আল্লাহর হাতে তুলে দিতে পারছি না কেন? আমাদের যা কিছু আছে সবই কেন তোমায় দিতে পারি না প্রভু! সকল শক্তি কেন ব্যয় করতে পারি না কেবল তোমার জন্য? আমাদের যত দুঃখ, যত বেদনা সে কেবল নিজেকে ঘোচাতে পারছি না বলেই, সেটা ঘুচলেই দেখতে পাবো যা চাই তা পেয়েই বসে আছি।

তন্ময় হয়ে যাওয়াটা কেবল ধ্যানের ব্যাপার নয় এটা হচ্ছে সমস্ত জীবনেরই ব্যাপার। সকল অবস্থায়, সকল চিন্তায়, সকল কাজে এ উপলব্ধি যেন থাকে যে, আমরা তাঁর মধ্যেই আছি, কোথাও বিচ্ছেদ নেই। এই উপলব্ধি যেন প্রতিদিনই ক্রমে ক্রমে একান্ত সহজ হয়ে আসে যে, আমাদের দেহ, চিন্তা ও ইচ্ছায় তিনিই বিরাজ করছেন। আমরা আছি তাঁরই মধ্যে, আমরা করছি তাঁরই শক্তিতে এবং ভোগ করছি তাঁরই দান। এই বোধটিকে সহজ করে তুলতে হবে নিশ্বাস-প্রশ্বাসের মতো, তাহলেই হলো।   

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন