ইসলামে নারী অধিকার
সাদিকুল হক ॥ কুরআনের দৃষ্টিতে নারী পুরুষের মতই স্বাধীন সত্তা। সুরা নিসার প্রথম আয়াতে আল্লাহ্ তায়ালা সমগ্র বিশ্বের মানবজাতিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, -“হে মানব সমাজ! তোমারা সেই প্রভুকে ভয় কর যিনি তোমাদেরকে একই আত্মা থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তা থেকে তার জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং সেই জোড়া থেকে বহু পুরুষ ও নারী ছড়িয়ে দিয়েছেন।” আল্লাহ্ তায়ালা একই প্রাণ থেকে সৃষ্টি করেছেন নারী-পুরুষকে। নারী এবং পুরুষ যেন একই নদীর দু’টি ধারা। তাই সৃষ্টিগত দিক থেকে নারী এবং পুরুষের মধ্যে কোন ভেদাভেদ নেই এবং উভয়ই পরিপূর্ণ মানব সত্তা। দুনিয়া এবং আখেরাতে কোথাও নারী এবং পুরুষের জন্য আল্লাহ্ অসম আচরণ করবেন না। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, “পুরুষ ও নারীদের মধ্যে যে-ই সৎকাজ করে এবং ঈমানদার হয়, তাকেই এক অভিনব পবিত্র জীবন শক্তি দান করব এবং এই সকল লোককে তাদের ভাল কাজ অনুযায়ী আমি পুরস্কৃত করব।” (সুরা নহল : ৯৭)।
আল্লাহ্ নারী এবং পুরুষ উভয়ের জন্যই সত্য এবং ন্যায়ের পথ প্রদর্শন করেছেন। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যারা এ পথ অনুসরণ করবে তাদেরকে সমানভাবে পুরস্কৃত করা হবে। কুরআনের ঘোষণা - “নিশ্চয়ই মুসলমান পুরুষ ও নারীগণ, মোমেন পুরুষ ও নারীগণ, ভক্ত পুরুষ ও নারীগণ, সত্যবাদী পুরুষ ও নারীগণ, সহ্যকারী পুরুষ ও নারীগণ, বিণয়ী পুরুষ ও নারীগণ, দাতা পুরুষ ও নারীগণ, রোজা পালনকারী পুরুষ ও নারীগণ, এবং নিজেদের লজ্জাস্থান রক্ষাকারী পুরুষ ও নারীগণ, এবং আল্লাহ্কে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও নারীগণ - তাদের জন্য আল্লাহ্ ক্ষমা ও মহা পুরষ্কার রেখেছেন।” (সুরা আহজাব : ৩৫)। নারী পুরুষের মতোই পরিপূর্ণ মানব সত্তা। নারী যদি কোনদিক দিয়ে অপূর্ণ থাকতো তাহলে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রেও তারতম্য থাকতো। আল্লাহ্ তায়ালা এমন কোন বৈষম্য মূলক বিধান দেননি যে, পুরুষ একমাস রোজা রাখবে আর নারী অর্ধমাস রোজা রাখবে কিংবা পুরুষ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে আর নারী পড়বে আড়াই ওয়াক্ত!
কুরআনের দৃষ্টিতে নারীদের সাথে সদাচরণ করা প্রত্যেক পুরুষের জন্য ফরজ। আল্লাহর আদেশ - “তোমরা নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন যাপন করো, এমনকি তোমরা যদি তাদের পছন্দ নাও করো! এমন তো হতে পারে যে, যা কিছু তোমরা পছন্দ করো না,
তার মধ্যেই আল্লাহ্ তায়ালা তোমাদের জন্যে অফুরন্ত কল্যাণ নিহিত রেখেছেন।” (সুরা নিসা
: ১৯)।
সভ্যতার ইতিহাসে সর্বপ্রথম মোহাম্মদ (সা.)-ই নারীকে মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেন এবং ঘোষণা করেন - মানবজাতি সবকিছুর ঊর্ধ্বে এক জাতি এবং নারী ও পুরুষ উভয়েরই পারস্পরিক সমান অধিকার রয়েছে। বিদায় হজ্জের ভাষণে মহানবী (সা.) সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন - ‘নারীর প্রতি পুরুষের যেমন অধিকার রয়েছে, তেমনি রয়েছে পুরুষের প্রতি নারীর অধিকার।’ ইসলাম প্রত্যেক নর-নারীর জন্য জ্ঞান অর্জন করাকে ফরজ বলে ঘোষণা করেছে। রসুল (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন - “তোমাদের কন্যাসন্তান থাকলে কিংবা বোন থাকলে তাদেরকে অবশ্যই ভাল খেতে দেবে, ভাল পরতে দেবে এবং সুশিক্ষা দেবে।” বিশ্বনবী মোহাম্মদ (সা.) বলেছেন, “তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে শিক্ষা দাও কেননা তারা এমন যুগে বসবাস করার জন্য সৃষ্টি হয়েছে, যা তোমাদের যুগ নয়।” বস্তুতই আমরা এখন এমন এক যুগে বসবাস করছি যে যুগে নারীকে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত রেখে সামাজিক, অর্থনৈতিক কোন মুক্তিই আসতে পারে না।
ইসলাম - সম্পত্তির মালিকানায়, অর্থোপার্জন, এবং অন্যান্য সকল নাগরিক অধিকার সমূহে নারী-পুরুষের সমান অধিকার দিয়েছে। অর্থোপার্জনের ক্ষেত্রে নারীর অধিকার সম্পর্কে কুরআনের নির্দেশ - “পুরুষ যা উপার্জন করেছে, তাতে তাদের অধিকার রয়েছে এবং নারীরা যা উপার্জন করেছে তাতে তাদের অধিকার রয়েছে।” (সুরা নিসা ঃ ৩২)। মহানবী (সা.) -এঁর স্ত্রী খাদিজা (রা.) ছিলেন একজন ব্যবসায়ী এবং মহানবী (সা.) স্বয়ং স্ত্রীর পক্ষে সে ব্যবসা দেখাশোনা করতেন।
কুরআন নারীদের যুদ্ধে যাবার অধিকার দিয়েছে। কুরআন বলছে - “তারাই বিশ্বাসী যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করার পর সন্দেহ রাখে না এবং ধনপ্রাণ দিয়ে আল্লাহ্র পথে সংগ্রাম করে, তারাই সত্যনিষ্ঠ।” (সুরা হুজুরাত ঃ ১৫)। এ আয়াতের মাধ্যমে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাবার অনুমতি দেয়া হয়েছে। কুরআন থেকে যুদ্ধে যাবার অনুমতি প্রাপ্তির পর পুরুষের পাশাপাশি বিশ্বাসী নারীরাও ঝাপিয়ে পড়েন রণাঙ্গনে। উম্মে আম্মারা (রা.) ছিলেন একজন মহিলা সাহাবী। ওহোদের যুদ্ধে যোগদান করে তিনি পুরুষদের মতই অতুলনীয় বীরত্ব, দুর্দমনীয় সাহসিকতা ও অসাধারণ দৃঢ়তা প্রদর্শন করেছিলেন। তিনি ভোরবেলা শয্যা ত্যাগ করে উঠে যেতেন এবং মুজাহিদদের খেদমত করার উদ্দেশে সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত হতেন। এই যুদ্ধের প্রথম দিকে মুসলিম বাহিনী বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু পরে তাদের মধ্যে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিল। এই সময়ে তিনি রসুলে করীম
(সা.)-এঁর নিকট উপস্থিত হয়ে তাঁর প্রতিরক্ষার উদ্দেশে তীর, তরবারি চালাতে শুরু করে দিলেন। এই সময় শত্রুপক্ষের নিক্ষিপ্ত তীর ও বল্লমের আঘাতে তাঁর দেহ ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায়। স্বয়ং নবী করিম
(সা.) তাঁর বীরত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেছেন। বলেছেন - ‘আমি ডানে ও বামে তাকিয়ে দেখেছি উম্মে আম্মারা (রা.) আমাকে রক্ষা করার জন্যে প্রবল বিক্রমে যুদ্ধ করছে। তাঁর পুত্রকে আহত করেছিল যে ব্যক্তি, তাকে সামনে পেয়ে তিনি তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন এবং ক্রমাগত তীর নিক্ষেপ করে করে তাকে হত্যা করে স্বীয় পুত্রের উপর আক্রমনের প্রতিশোধ নিয়েছিলেন। একজন অশ্বারোহী শত্রুসৈন্য তাঁর উপর আক্রমণ চালালে তিনি ঢালের আড়ালে আত্মরক্ষা করেন এবং শত্রুসৈন্যটির ফিরে যাওয়ার সময় তার অশ্বের পা কেটে দিলেন। এই সময় তাঁর পুত্র, মায়ের সাহায্যে এগিয়ে আসে এবং মা ও পুত্র মিলে শত্রুকে সম্পূর্ণ নিধন করেন।’ নবী করীম (সা.) নিজে এই দৃশ্য অবলোকন করে স্বতঃস্ফুর্তভাবে বলে উঠলেন - ‘আজ উম্মে আম্মারা তুলনাহীন সাহসিকতা ও দৃঢ়তা প্রদর্শন করেছেন।’ ওহোদ ছাড়াও খায়বর, হুনাইন ও ইয়ামামা’র যুদ্ধেও তিনি যোগদান করেছিলেন। ইয়ামামার যুদ্ধে লড়াই করতে করতে তাঁর হাত কাটা গিয়েছিল এবং সর্বাঙ্গে বহুসংখ্যক ক্ষত দেখা দিয়েছিল।
ঐতিহাসিক ইবনে ইসহাক লিখেছেন - খায়বরের যুদ্ধে নবী করীম (সা.) -এঁর সঙ্গে বিপুল সংখ্যক মহিলা সাহাবি যোগদান করেছিলেন। হাশর ইবনে জিয়াদের দাদী, আম্মা এবং আরও পাঁচজন মহিলাও এই যুদ্ধে যোগদান করেন। তাঁরা কি জন্যে এসেছেন জিজ্ঞেস করা হলে তাঁরা বললেন - ‘হে রসুল!
আমরা এসেছি এই উদ্দেশ্য নিয়ে যে, আমরা কবিতা পাঠ করব এবং এর সাহায্যে আমরা আল্লাহ্র পথে জেহাদের প্রেরণা যুগিয়ে সাহায্য করব। আমাদের সঙ্গে আহতদের চিকিৎসার ঔষধপত্র রয়েছে। তীর নিক্ষেপকারীদের হাতে আমরা তীর পরিবেশন করব এবং প্রয়োজন হলে ক্ষুধার্তদের ছাতু বানিয়ে খাওয়াব।’ উল্লেখ্য, জামালের যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ছিলেন স্বয়ং আয়েশা (রা.)।
বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশে নারী নেতৃত্বের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। যেমন -
১. জর্ডানের মত একটা পুরুষশাসিত ও রক্ষণশীল দেশেও বাদশাহ্ আবদুল্লাহ্ নিজ উদ্যোগে নারীর ক্ষমতায়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। ২০০৩ সালে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ বিলুপ্ত করে যে ৫৫ জন নতুন সদস্যকে মনোনীত করা হয় তার মধ্যে নারী সদস্য রয়েছেন ৭ জন। ১১০ সদস্য বিশিষ্ট পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে নারী সদস্য ৬ জন। ইতোমধ্যেই নারীদের নির্বাচিত হওয়া নিশ্চিত করতে বিশেষ কোটা পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।
২. বৃটেনের তুলনায় সুদানের পার্লামেন্টে নারী সদস্য সংখ্যা বেশি। লেবানন, আলজেরিয়ায় রয়েছেন মহিলা বিচারপতি।
৩. তুরষ্কের ‘লৌহ-মানবী’ বলে খ্যাত তানসু সিলার সেদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবার গৌরব অর্জন করেছেন। অধ্যাপক তানসু সিলার একজন খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদও বটে। একজন সুদক্ষ অর্থনীতিবিদ হিসেবে তানসু সিলার তুরষ্কের অর্থনীতি পুনর্গঠনে সুদূর প্রসারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
৪. পাকিস্তানের মত গোঁড়া মুসলিম দেশেও বেনজীর ভুট্টো প্রধান মন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেই ১৯৬৪ খ্রীষ্টাব্দে ফাতেমা জিন্নাহ্ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। খোদ জামাতে ইসলামও তখন তাকে সমর্থন জানিয়েছিলো।
৫. বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলের নেত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন নারী নেতৃত্ব।
এদেশে এমন একটা জাহেলী ধ্যান ধারণা বিদ্যমান রয়েছে যে, পর্দা একমাত্র নারীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য - পুরুষের ক্ষেত্রে নয়। কিন্তু কুরআন শুধুমাত্র নারীকে পর্দা পালনের নির্দেশ দেয়নি। বরঞ্চ এ নির্দেশ প্রথম দেয়া হয়েছে পুরুষকে। পর্দা বলতে ভিন পুরুষ এবং ভিন নারী থেকে নিজের মন মানসিকতা, চোখ, কান ও জবানকে হিফাজত করে যৌন জীবনকে পবিত্র রাখাকে বুঝায়। ইসলামে নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই পর্দা ফরজ করা হয়েছে। কুরআন বলছে
- “তুমি মোমেন পুরুষদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে (নিম্নগামী ও)
সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানসমূহকে হেফাজত করে, এটাই (হচ্ছে) তাদের জন্যে উত্তম পন্থা, (কেননা) তারা (নিজেদের চোখ এবং লজ্জাস্থান দিয়ে)
যা করে আল্লাহ্ তায়ালা সে সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ অবহিত রয়েছেন।” (সুরা আন নূরঃ ৩০)। “একইভাবে তুমি মোমেন নারীদেরও বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে (নিম্নগামী ও)
সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানসমূহকে হেফাজত করে, তারা যেন তাদের সৌন্দর্যকে প্রদর্শন না করে বেড়ায়, তবে তার (শরীরের) যে অংশ
(এমনিই) খোলা থাকে (সে সব অংশের কথা আলাদা), তারা যেন তাদের বক্ষদেশকে মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে রাখে...।” (সুরা আন নূরঃ ৩১)।
কুরআন নারীকে সৌন্দর্য প্রদর্শন না করতে বলেছেন কারণ, কুরআন চায় এমন একটা সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে যে সমাজে বাহ্যিক লাবণ্যতা নয়
- অন্তরের লাবণ্যতাকেই গুরুত্ব দেয়া হবে, অন্তরের জ্যোতিতে মানবীয় মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হবে নর-নারীর যৌনাবেগ। কুরআন চায় এমন একটা সমাজ প্রতিষ্ঠিত হোক যেখানে ব্যভিচার থাকবে না,
ধর্ষণ থাকবে না। পুরুষই ধর্ষণ করতে পারে তাই প্রথম পর্দা পালন করতে হবে পুরুষকেই। লজ্জাস্থানের হেফাজত এবং দৃষ্টিকে সংযত রাখাই পুরুষের পর্দা। কারণ, দৃষ্টিই ব্যভীচারের পথে প্রথম পদক্ষেপ। হজরত রাহ্য়া ইবন যাকারিয়া (আ.) -কে লোকেরা জিজ্ঞেস করেছিল - ‘ব্যভিচারের উৎস কি?’ তিনি বলেছিলেন - ‘চোখ।’
পুরুষ যদি নিজেদের চোখ নিয়ন্ত্রণে না রেখে এককভাবে তা নারীর উপর চাপিয়ে দেয় এবং নারীকে অবরুদ্ধ রাখতে চায় তবে তা হবে জুলুম। জুলুমের ফলাফল কখনোই ভাল হয় না। আল্লাহ্ জুলুমবাজদের পছন্দ করেন না।
রসুলুল্লাহ (সা.)-এঁর সময়ে নারী-পুরুষ একসাথে প্রার্থনা করেছেন। নারী ও পুরুষের মাঝখানে তখন কোন পর্দা ছিল না। রসুল (সা.)-এর সময়ে তা দোষের ছিল না,
কিন্তু এখন দোষের। কারণ হিসেবে বলা হয়, এই যুগের পুরুষ আর সেই যুগের মত নেই
- অনেক বেশি খারাপ হয়ে গেছে। পুরষ খারাপ হয়ে গেছে বলে সেই দায়িত্ব নারীকে নিতে হবে কেন?
নারীর স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রেখে কীভাবে সমাজ থেকে ব্যভিচার, ধর্ষণ, নারী-নির্যাতন রোধ করা যায় তা আজ নতুন করে ভাবতে হবে। নতুন করে ভাবতে হবে আমরা কীভাবে মুক্ত হব দারিদ্রের করালগ্রাস থেকে। মুসলমান নারী কি গৃহে বন্দিনী হয়ে থাকবে নাকি বেড়িয়ে আসবে ঘরের বাইরে, মুসলমান নারী কি অবগুন্ঠিত থাকবে নাকি মাথা উঁচু করে বিশ্বকে বলবে
- ‘দেখ! আমি মানুষ! আমি নারী!
এবং আমি মুসলমান! আমার ধর্ম আমাকে আমার উপার্জনে জীবিকা নির্বাহের নিশ্চয়তা দিয়েছে।’
আমরা একটা সুসভ্য সমাজ চাই। আর সে সমাজই সভ্য হতে পারে যেখানে নারী নিরাপদ। যেখানে নারী একাকী নির্জন রাস্তায় দিবালোকে কিংবা রাতের অন্ধকারে নির্ভয়ে বিচরণ করতে পারবে। আমরা এমন একটা সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যে সমাজে মোহাম্মদ (সা.)-এঁর ভাষায় - “যদি একজন সুন্দরী রমনী অলংকারে সজ্জিত হয়ে সানয়া থেকে হাজরামাওত পর্যন্ত একাকি পথ চলে তাহলে একমাত্র আল্লাহ্র ভয় ছাড়া আর কোন ভয় তাঁর মনে থাকবে না।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন