ক্ষমতা
না জনতা -
সরকার
কার সাথে - কোন পথে
পবিত্র
মক্কা-মদিনা বার বার জিয়ারত করে, বিদেশীদের সাহায্য নিয়ে, মিথ্যাচার-দুর্নীতি চলতে
দিয়ে, প্রশাসন কাঠামো নিজেদের মতো করে পরিবর্তন করে, রাজনৈতিক ইসলাম ও ধর্মান্ধদের
সাহায্য নিয়ে ক্ষমতায় আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকা যায় কিন্তু সর্বস্তরে সত্য প্রতিষ্ঠায়
বজ্র কঠোর না হলে জাতির আশীর্বাদ পাওয়া কঠিন। জাতির আশীর্বাদ না পেলে আল্ল্লাহ্র
রহমত পাওয়া দুরূহ হয়ে ওঠে। বাংলাদেশ ওলী-আল্লাহ্দের দেশ। সহস্রাধিক সাধক এই
মাটিতে শুয়ে আছেন। তাঁরাও দেশ ও জাতির কল্যাণে সত্য প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত প্রাণ
ছিলেন ও আছেন। তাই দেশের ৭০ ভাগ মানুষ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তাঁদেরকে অন্তরের
অন্তঃস্থলে ধরে রেখেছেন। আল্লাহ্ও তাঁদের সহায় আছেন। সবকিছুর উর্দ্ধে উঠে সার্বিক
অঙ্গনে সত্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশ ও জাতির কল্যাণে যিনি কান্ডারি হবেন - তিনি
অবশ্যই জাতি ও ওলী-আল্লাহ্দের আশীর্বাদ এবং সর্বোপরি আল্লাহ্র রহমত হতে বঞ্চিত
হতে পারেন না। ইতিহাসই তার প্রমাণ।।
আবু নাঈম ॥ অভিধান খুঁজে দেখা যায়, ‘সংস্কার’ (যা
বর্তমান বাংলাদেশের সব মানুষের জন্য জরুরী) অর্থ প্রতিযত্ন, মেরামত, শুদ্ধি,
পরিস্করণ, ধারণা, বিশ্বাস, পরিপাটিকরণ ইত্যাদি ২৭টি অর্থবোধক শব্দ। সংস্কার একটা
পথ বা পদ্ধতি যা সময়, পরিবেশ ও অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর ভর করে কোনো দেশ ও জাতি
উন্নতির দিকে যায় এবং পরীক্ষিত ফলাফলের ওপর নির্ভর করে আবারও সংস্কারের পথে এগিয়ে
যায়। এ পথে চলার শেষ নেই। এটা ব্যক্তি জীবন, সমাজ জীবন, রাষ্ট্র জীবনে অবশ্যই ঘটতে
হবে এবং ঘটে চলেছে বলেই আমরা ব্যক্তি জীবনে প্রতিদিন প্রতিটি কর্মের মধ্যে
পরিবর্তন আনতে পারছি সময় ও পরিবেশের সাথে তাল মিলিয়ে। পরিবর্তনের ধারায় যারা যে
বিষয়ে পাথেয় কুড়িয়ে চলেছেন তারাই হচ্ছেন সে বিষয়ে জ্ঞানবান > পরবর্তীতে দূরদর্শী
> পরবর্তীতে দিব্যজ্ঞানী। অন্ততঃপক্ষে যারা একটা বিষয়ে জ্ঞানবানের পর্যায়ে যেতে
পারেন তারাই সে বিষয়ে পৃথিবীর, রাষ্ট্রের, সমাজের বা ব্যক্তি জীবনের দিক নির্দেশনা
দিতে পারেন। তাই দেখা যায়, জ্ঞানবান হওয়ার জন্য?যুগে যুগে স্ব-শিক্ষার ওপর জোর
দেয়া হয়েছে শিক্ষাই উন্নতির বাহন বলে। যে জাতি যত স্ব-শিক্ষায় শিক্ষিত সে জাতির
মধ্যে ততো জ্ঞানবান, দূরদর্শী ও দিব্যজ্ঞানী আছেন। তারা যখন দেশ ও জাতিকে নেতৃত্ব
দেন সেই দেশ ও জাতি তখন উন্নতির চরম শিখরে ওঠার পথে অগ্রসর হয়। আর যারা ওই পথ ধরে
হাঁটতে পারেননি তারা ব্যক্তি জীবনে, সমাজ জীবনে এবং রাষ্ট্রীয় জীবনে দিকনির্দেশনা
দিতে থাকলে যে কোনো পরিস্থিতিতে ক্ষমতা হাতে পেয়ে, তাহলে দেশ ও জাতির উন্নতি
ব্যাহত হবেই এবং জাতির মধ্যে হতাশা প্রকটভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠে সন্ত্রাস,
দুর্নীতি, রাহাজানি, খুন ইত্যাদি বেড়ে যাবে। এর মধ্যেই অগ্রসররা যুগের সাথে তাল মিলিয়ে
সংস্কার চাইবে এবং প্রয়োজনে জাতিকে সেই
পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে যে পথে সংস্কারের ধারা স্থবির না হয়ে চলমান থাকে (যদিও তার
মধ্যে ক্ষমতাসীন হওয়ার চূড়ান্ত লক্ষ্য বিদ্যমান থাকে)।
অপ্রিয় হলেও সত্য বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আজ
পর্যন্ত কোনো আদর্শিক শ্রেণীর ঐকতানে দেশ ও জাতির উন্নতির জন্য একরৈখিক পথের পথিক
হয়ে আমরা এগিয়ে যেতে পারিনি ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থের দ্বন্দ্বের জন্য। ফলে
বারবার দ্রুত সংস্কার ঘটবে বা ঘটাতে হবে এটা সুনিশ্চিত।
বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের সর্বস্তরের পেশাজীবী মানুষ
যখন সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে তখন বর্তমান রাজনীতিকরাই
একমাত্র শক্তি যারা ওই পথে নিজেদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারেন নাই।? প্রশাসন ও
নির্বাচন কমিশনের সংস্কার করে নয়, জাতীয় জীবনে সর্বক্ষেত্রে উন্নতির লক্ষ্যে
একরৈখিক সংস্কার কার্যক্রম এনে বর্তমান সরকারই পারে অবিলম্বে বাংলাদেশ বিরোধী ও
ধর্মীয় উগ্রবাদীদের কবল হতে নিজেদের মুক্ত করে নিজের শক্তির ওপর দাঁড়িয়ে দেশ ও
জাতির স্বার্থে রাজনৈতিক ইসলামওয়ালাদের এবং উগ্রবাদী ও সন্ত্রাসীদের শনাক্ত করে
জাতির সামনে তাদের মুখোশ খুলে তাদের প্রতিষ্ঠানসমূহ বাজেয়াপ্ত করে জনগণের সঙ্গে
একাত্ম হয়ে জনকল্যাণ করতে। সরকারই পারে যোগ্য ব্যক্তিত্ব যোগ্যস্থানে বসিয়ে দেশ ও
জাতির সেবা করার সুযোগ সৃষ্টি, কঠোর হস্তে স্বাধীন প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে সার্বিক
মিথ্যাচার বন্ধ করে জাতির আস্থা ফিরিয়ে আনতে। নচেৎ চক্রান্তকারীদের খপ্পরে পড়ে রাজনৈতিক ইসলামধারীদের সাহচর্যে
থেকে যত কথা আর কার্যক্রম বর্তমান সরকার নিক না কেন তা বিফলে যাবে এবং আগের
অন্যান্য সরকারকে যেমন জাতি (?) চিহ্নিত করেছে তেমনি বিশ্বাসঘাতকতার মানদন্ডে
বর্তমান সরকারকে চিহ্নিত করতে পারে কারণ বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি।
এখনো হাতে যথেষ্ট সময় আছে। বর্তমান সরকার কোনদিকে যাবেন
এটা সরকারের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। এ দেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে সরকারের দৃষ্টি
আকর্ষণ করতে চাই - ক্ষমতার চেয়ে জনতা বড়, দলের চেয়ে দেশ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন