বীরকন্যা প্রীতিলতা -
এক অনির্বাণ
প্রেরণা
সংলাপ
॥ প্রীতিলতা বাঙালি জাতির গর্ব। এক অগ্নিশিখার নাম চট্টগ্রামের
মেয়ে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। মেধাবী ছাত্রী প্রীতিলতা ঢাকার ইডেন কলেজ
থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় সারাদেশে মেয়েদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন। অতঃপর
তিনি কলকাতা বেথুন কলেজ থেকে
পড়াশোনা শেষ করে
প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন
চট্টগ্রামের ড. খাস্তগীর স্কুলে। সে সময় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন চলছে পুরোদমে। প্রীতিলতা যোগ দেন
মাস্টারদা সূর্যসেনের সশস্ত্র সংগ্রামের দলে। এরই
অংশ হিসেবে তিনি বিভিন্ন
সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন। সর্বশেষ
অংশ নেন চট্টগ্রামের
ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণে। যার বাইরে
লেখা ছিল, ‘কুকুর ও ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ।’
এই চরম অপমানকর
কথাটি মুছে দিতে
এবং ব্রিটিশদের নির্যাতন প্রতিহত করার এ সফল অভিযান শেষে ফেরার
সময় এক ব্রিটিশ
সৈনিকের হাতে গুলিবিদ্ধ
হন তিনি। ব্রিটিশদের
হাতে ধৃত হয়ে
তাদের প্রদত্ত শাস্তিবরণের বিনিময়ে প্রাণরক্ষার চেয়ে তিনি
সগৌরবে বেছে নেন
আত্মাহুতির পথ। নিজের
সঙ্গে রাখা পটাশিয়াম
সায়ানাইড বিষ পান
করে তৎকালীন ভারতবর্ষের স্বাধীনতার বেদীমূলে জীবন উৎসর্গ
করেন তিনি। এভাবেই
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনকে সফলতার পথে আরও
এক ধাপ এগিয়ে
নিয়ে যান এই অগ্নিকন্যা। বীরকন্যা প্রীতিলতার আত্মাহূতি দিবস এক অনির্বাণ প্রেরণার দিন। মাস্টারদা
সূর্যসেন, ক্ষুদিরাম, প্রীতিলতা, ইলামিত্র এঁরাইতো বাঙালি জাতির অহংকার। এটা খুবই
দুঃখজনক যে, প্রীতিলতার আত্মাহুতি
দিবসকে অনেক সংবাদমাধ্যমে
মৃত্যুদিবস বলা হচ্ছে। প্রীতিলতার মৃত্যু নেই। মৃতদের
কাছ থেকে মানুষ
প্রেরণা পায় না। যাঁদের কাছ থেকে
প্রেরণা আসে তাঁরা চিরঞ্জীব।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন