বুধবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৫

প্রতিনিয়ত নতুন উদ্যমে পথ চলা শ্রেয়

প্রতিনিয়ত নতুন উদ্যমে পথ চলা শ্রেয়

সংলাপ ॥ সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জনগণের স্বার্থই তার সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার। কিন' বর্তমানে দেশের জনগণের অগ্রাধিকার কোন্‌টি সে কথা কি প্রধানমন্ত্রী এখন জানতে পারছেন? বা জানার চেষ্টা করেছেন?
আওয়ামী লীগের মতো একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সাথে জনগণের দূরত্ব তৈরি হবে, অর্থাৎ তারা জনগণের অগ্রাধিকার কোন্‌টি তা তারা বুঝতে অক্ষম হয়ে উঠবেন-সে কথা বাহ্যিক দৃষ্টিতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এখন যেন তাই হচ্ছে। যদিও ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়’-এ মনোভাব পোষণ করেন এমন নেতাকর্মীর সংখ্যা এ দলটিতেই এখন আশংকাজনক হারে কমে যাচ্ছে। দিন বদলের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসা মহাজোট সরকারের প্রধানমন্ত্রীর আদর্শিক দৃঢ়তা এবং কর্মক্ষমতা দেখে  স্বভাবতই হতাশ হচ্ছে ষড়যন্ত্রকারী রাজনীতিক, ক্ষমতালোভী রাজনৈতিক দলগুলো এবং বিদেশী চাটুকাররা, কিন্তু আওয়ামী রাজনীতিকদের এখনও টনক নড়েনি।
জনগণের চাওয়া-পাওয়া অর্থাৎ জনগণ প্রকৃত অর্থেই কী চায় তা একটি সরকার বুঝতে না পারলে তবে ধরে নেয়া যায় যে, সরকারের ভেতরে বা ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে কোথাও না কোথাও একটি গলদ আছে। যে-গলদের কারণে সরকার দেশের বাস্তব পরিস্থিতি বা জনগণের অগ্রাধিকার কোনটি তা বুঝতে পারছেন না বা দল হতে সেই পরিস্থিতি বুঝতে দেয়া হচ্ছে না। ফলে জনগণ ক্রমেই হতাশ হয়ে পড়ছে সরকারের ওপর। আর মহাজোট সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের প্রতি বহমান আস্থায় ভাটা পড়ছে বলে দেখা যাচ্ছে, যা দেশের বেশ কয়েকটি জনমত জরীপে ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে।
অবশ্য বিরোধী দলীয় সকল রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকান্ডে যে জনগণ খুশী তাও কিন্তু নয়। জনমত জরীপগুলোতে দেখা যাচ্ছে, বিরোধী দলগুলোর মধ্যে কয়েকটি দলের জনপ্রিয়তা কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু সেখানে তাদের কৃতিত্বের কিছু নেই। আমাদের দেশের রাজনীতির চরিত্রগত একটি দিকই হচ্ছে, ক্ষমতায় থাকলে জনপ্রিয়তা কমতে থাকে।
এ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের কাজের সুফল জনগণ পাচ্ছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক অংশের জনগণের মধ্যে সাড়া জাগিয়েছে-এ কথা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। কৃষকদের মধ্যে সার বিতরণ সরকারের  আরও একটি বড় অর্জন। খাদ্য উৎপাদনেও সরকারের কৃতিত্ব রয়েছে। অর্থাৎ জনগণের স্বার্থ সম্পর্কে যথাযথভাবে অবহিত হয়ে সেগুলো বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ হয়েছে সেখানে সরকারের সফলতা ঠিকই এসেছে। জনগণও তার সুফল ভোগ করেছে। তবে অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজিতে সার্বিক অঙ্গনে সাধারণ মানুষ এখনো জিম্মি হয়ে আছে তা সরকারকে বুঝতে হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, জনগণের স্বার্থ ও অগ্রাধিকার কোন্‌টি তা বুঝতে হলে বৃহত্তর স্বার্থে সরকারকে আরও অনেক আন্তরিক ও সজাগ হতে হবে। সবজান্তা গণমাধ্যমে উঠে আসা সমস্যাগুলো অহেতুক না ষড়যন্ত্রমূলক না প্রকৃত জরুরি তা চিহ্নিত করে সঠিক সমাধানে আরও অনেক তৎপর হতে হবে। অযোগ্য ও অদক্ষ মন্ত্রীদের সরিয়ে যোগ্যদেরকে কাজের জায়গা করে দিতে হবে। সমালোচনাকে ভয় ও উপেক্ষা না করে তা থেকে সমাধানের উপায় বের করে আনতে হবে। সরকারের প্রতি জনগণের আস্থার মান আরও উন্নত করতে নতুন উদ্যোমে প্রতিনিয়ত কাজ করার এখনই সময়। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন