মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ভোটাধিকারের পবিত্রতা রক্ষা জরুরি!

ভোটাধিকারের পবিত্রতা রক্ষা জরুরি!

শেখ বর্ষা ॥ ১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে চতুর্থবারের মতো উপজেলা পরিষদের নির্বাচন।  দেশের অন্যান্য জেলার মতো নরসিংদীতেও এখন চলছে প্রার্থীদের বিরামহীন প্রচার আর ভোট প্রার্থনা। ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করা নাগরিক অধিকার। এই অধিকার এমনভাবে প্রয়োগ করা উচিত যেন দলীয় বা গোষ্ঠীগত বিবেচনার কাছে জনগণের কল্যাণের বিষয়টি হারিয়ে না যায়। নগদ অর্থের বিনিময়ে, কোনো চাপের মুখে কিংবা ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থে ভোটাধিকার প্রয়োগ সমাজ ও দেশের শান্তি-মঙ্গলের জন্য কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। প্রার্থীর অর্থ-বিত্ত-প্রতাপ ভোট পাওয়ার যোগ্যতা হওয়া উচিত নয়। ভোট পাওয়ার যোগ্য ঐ প্রার্থী যার দ্বারা দেশের সম্পদ লুন্ঠিত হবে না, সমাজে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়বে না, গরীব ও মেহনতি মানুষের ক্ষতি হবে না। তাই ভোট দেয়ার আগে ভোটারদের গভীরভাবে চিন্তা করা দরকার, বিচার-বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার যে, প্রার্থীদের মধ্যে যিনি দুর্নীতি, ব্যক্তিস্বার্থ ও দলগত স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে এলাকার সমৃদ্ধি ও উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেবেন তাকেই তিনি ভোট দেবেন।

অন্যায়কে যে বাধা দেয় না সেও অন্যায়ের অংশীদার হয়। অন্যায়কে বাধা দিয়ে ন্যায় প্রতিষ্ঠার একটি সুযোগ হলো নির্বাচন। দেশের এক একটি এলাকায় সত্য, ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সেখানকার নির্বাচিত স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অত্যন্ত কার্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আমাদের পবিত্র সংবিধানেও শক্তিশালী  ও কার্যকর স্থানীয় সরকারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো স্বাধীনতার ৪২ বছর পরেও এই স্থানীয় সরকার এখনো কাঙ্খিত প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ধারণ করতে পারেনি। এর জন্য দেশের বিরাজমান আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক অবস্থা যেমন দায়ী, তেমনি দায়ী দেশের শক্তিশালী আমলাতন্ত্র। স্থানীয় সরকার শক্তিশালী হোক, সেটা অনেকেই চায় না, আর এই না চাওয়ার কারণও নিঃসন্দেহে কায়েমী স্বার্থ। এই সকল কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে, দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে বসবাসকারী মানুষের জনপদে শান্তি ও ন্যায়ের পক্ষের একজন জনপ্রতিনিধি নির্বাচন সত্যিকার অর্থেই একটি দুরূহ কাজ, কিন্তু অসম্ভব নয়। একমাত্র একটি অঞ্চলের আত্মসচেতন ভোটাররাই এই অসম্ভব কাজটিকে সম্ভব করে তুলতে পারেন। আর আসন্ন উপজেলা নির্বাচন সেই কাজের ভার ভোটারদের ওপর অর্পন করে দিয়েছে। পবিত্র কুরআনে আছে, ‘মানুষ যার জন্য চেষ্টা করে তা ব্যতীত তার জন্য কিছুই নেই'। ভোটাধিকার তাই একটি পবিত্র  আমানত। এই আমানতের অর্থাৎ, ভোটাধিকারের পবিত্রতা রক্ষায়  প্রতিটি ভোটার অত্যন্ত সচেতন ও সজাগ হবেন-এটাই আজ জাতির বিবেক ও সত্যানুসন্ধিৎসুদের একান্ত কামনা। ভোটাধিকারের পবিত্রতা রক্ষা করাই বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জরুরি কাজ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন