মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৩

আল্লাহর আরশ কোথায়?

আল্লাহর আরশ কোথায়?

সাদিকুল হক ॥ পশ্চিমা রাজনৈতিক শক্তির সৃষ্ট তথাকথিত এক সমপ্রদায় প্রচার করে থাকে, আল্লাহ তায়ালা সর্বত্র বিরাজমান নন, আরশে সমাসীন। তারা নিজেদের এই দাবির পক্ষে সুরা হাদীদের ৩ নং আয়াত দলিল হিসেবে পেশ করেন। না বুঝে কুরআনের একটি আয়াত দিয়ে কুরআনের মৌল চেতনাকেই অস্বীকার করা আল্লাহদ্রোহীতা!
কোন নির্দিষ্ট স্থানে সীমাবদ্ধ থাকা দেহধারী সত্তার বৈশিষ্ট্য। সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, সকল সৃষ্টির স্রষ্টা কোন নির্দিষ্ট দেহে অবস্থান করেন না। সকল দেহই তার দেহ। কুরআনের অনেক আয়াতে সর্বব্যাপী আল্লাহর অস্তিত্বের ঘোষণা রয়েছে।  যেমন - “আর যখন আমার বান্দা আমাকে ডাকে, তখন নিশ্চয়ই আমি তার পাশেই থাকি। আমি আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দেই যখন সে ডাকে। (সুরা বাকারাঃ ১৮৬)। “আর আমি বান্দার প্রাণরগের চেয়েও বেশি নিকটবর্তী। (সুরা কাফঃ ১৬)। “অতপর এমন কেন হয় না যে, যখন প্রাণ ওষ্ঠাগত হয় এবং তোমরা তাকিয়ে থাক। এবং তোমাদের চেয়ে আমিই তার বেশি কাছে থাকি। কিন্তু তোমরা দেখতে পাওনা। (সুরা ওয়াকিয়াঃ ৮৩-৮৫)। “পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। সুতরাং যেদিকেই মুখ ফিরাও, সেদিকেই রয়েছেন আল্লাহ। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞাত। (সুরা বাকারাঃ ১১৫)। “তোমরা যেখানেই থাক না কেন, তিনি তোমাদের সাথে আছেন। (সুরা হাদীদঃ ৪)। “যখন তিনি তার সাথীকে বললেন ভয় পেয়ো না, নিশ্চয় আমাদের সাথে আল্লাহ আছেন। (সুরা হাদীদঃ ৪০)। “তিনজনের মাঝে এমন কোন কথা হয় না যাতে চতুর্থ জন হিসেবে তিনি উপস্থিত না থাকেন এবং কখনও পাঁচজনের মধ্যে কোনও গোপন কথা হয় না, যাতে ষষ্ঠজন হিসেবে তিনি উপস্থিত না থাকেন। এমনিভাবে তারা এর চেয়ে কম হোক বা বেশি, তারা যেখানেই থাকুক, আল্লাহ তাদের সঙ্গে থাকেন। (সুরা মুজাদালাঃ ৭)। আল্লাহর কুরসী আসমান ও জমিন ব্যাপৃত। (সুরা বাকারাঃ ২৫৫)।
যদিও আল্লাহ তায়ালা সর্বত্রই বিরাজমান তবুও আল্লাহর উদ্দেশ্যে আমরা আকাশের দিকে তাকাই কিংবা বলে থাকি “উপরে একজন আছেন। ডান, বাম, উপর, নিচ সবদিকেই তিনি আছেন তবুও আমরা উপরের কথা বলি কারণ তাঁর মর্যাদা সকলের উপরে। জিব্রাইল উপর থেকে নিচে নেমে আসেন এর অর্থও এটা নয় যে জিব্রাইল উপরের কোন স্থানে থাকেন। পুলিশ আসে উপরের নির্দেশে, এর অর্থ এই নয় যে, পুলিশ উপরে থাকে। সম্মান ও মর্যাদার দিক থেকে যিনি উপরে তার নির্দেশকেই বলা হয় উপরের নির্দেশ।
আল্লাহ তায়ালা সর্বত্রই বিরাজমান। তিনি আকাশে আছেন জমিনেও আছেন, বাহিরেও আছেন ভিতরেও আছেন, নিচেও আছেন উপরেও আছেন। এক সমপ্রদায় প্রশ্ন করে তবে কি তিনি নোংরা স্থানেও থাকেন? কুরআনের আয়াত মাথায় নিয়ে কি মানুষ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে পারে না? নিশ্চয়ই পারে। কুরআন নিয়ে মানুষ সর্বত্রই যেতে পারে, যায়ও। চিন্তাজগতে কুরআন নিয়ে যেমন টয়লেটে গেলে কুরআনের কোন অসম্মান হয় না তেমনি আল্লাহও সর্বত্র বিরাজমান থাকলে তাঁর কোন বেইজ্জতি হয় না। জগতে যা কিছু নোংরা এবং অপবিত্র বলা হয় তাও আল্লাহরই সৃষ্টি এবং তাতেও তিনি আছেন।
সুরা হাদীদের ৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে  - “অতঃপর তিনি আরশে সমাসিন হলেন।নিশ্চয়ই তাই। তবে আল্লাহ তায়ালার এই আরশ হচ্ছে বিশ্বাসীর চিন্তাজগত।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন