মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৩

নির্বাচনে যাবে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জেপি



নির্বাচনে যাবে
আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জেপি

সংলাপ ॥ আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি  (জেপি) আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে। গত সোমবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক  কার্যালয়ে ১৪ দলের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আমরা মনে করি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া একান্ত প্রয়োজন। শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। আমরা চাই দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং সেই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি (জেপি) অবশ্যই অংশ  নেবে। বিএনপি নির্বাচনে না  গেলেও জেপি নির্বাচনে যাবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে মঞ্জু বলেন, নির্বাচনে কে এলো কে এলো না তা প্রত্যেকের গণতান্ত্রিক অধিকার। উনি করলে আমি করবো, উনি না করলে আমি নেই- এমন নয়। যারা চাইবেন আসবেন, যারা চাইবেন না - আসবেন না। এজন্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়া যাবে না।
অতীতেও সব সময় আমরা একই রকম ভূমিকা নিয়েছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ’৯৬ ও ’৯৮ সালেও আমরা ছিলাম সাংবিধানিক পদক্ষেপের পক্ষে। মহাজোটে যোগ দিচ্ছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মহাজোটের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন আদর্শ আছে। তারা কয়েকটি বিষয়ে একমত হয়ে মহাজোট গঠন করেছেন। আমরা মহাজোটের সঙ্গে এক জায়গায় একমত হয়েছি। সেটা হলো, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বহাল রাখতে হলে নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। বিএনপি নির্বাচনে না এলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা নির্বাচনের পরের বিষয়। প্রধান দল, বিরোধী দল, বড় বিরোধী দল কিংবা ছোট বিরোধী দল অংশগ্রহণ করলো কিনা তা বিষয় নয়। এটা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। এ সময় জেপির নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহিম, মফিজুল হক ও কেন্দ্রীয় নেতা সাদেক সিদ্দিকী।
১৪ দলের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, ন্যাপের নেতা ইসমাঈল হোসেন প্রমুখ। রাশেদ খান মেনন বলেন, নির্বাচন জনগণের উৎসব। এতে সবার অংশগ্রহণ দরকার। কিন্তু নির্বাচন বানচালের চেষ্টা প্রতিহত করার দায়িত্ব জনগণের। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ১৪ দল সে দায়িত্ব পালন করবে। এটা সরকার বদলই শুধু নয়, বাংলাদেশের অস্তিত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অস্তিত্বের প্রশ্ন। আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নির্বাচনে আসার ঘোষণায় আমাদের কাজ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমরা মতবিনিময় সভায় কিছু বিষয়ে একমত হয়েছি। আমরা মনে করি, সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখতে নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই, সবার অংশগ্রহণে এবং যে কোন প্রতিকূল অবস্থায়ও যথাসময়ে নির্বাচন চাই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সর্বদলীয় সরকারের অঙ্গীকারকে সমর্থন করছি আমরা। আমরা মনে করি হরতাল-নৈরাজ্য করে নির্বাচন ব্যাহত করা যাবে না, ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। দ্রুততম সময়ে তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মোহাম্মদ নাসিম আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী অনেক চেষ্টা করেছেন শান্তিপূর্ণ সংলাপ আয়োজনের। কিন্তু কোন ভাবেই বেগম জিয়ার দল এতে কর্ণপাত করেনি। আমরা আশা করি, তারা সহিংসতার রাজনীতি পরিহার করে সংলাপের ধারায় ফিরবেন, আলোচনার মাধ্যমে তাদের দাবি-দাওয়া জানিয়ে সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসবেন। তিনি বলেন, নির্বাচন অবশ্যই করতে হবে। নির্বাচনের প্রক্রিয়া না রাখলে আরও ভয়াবহ বিপর্যয় হতে পারে। এ জন্য মহাজোট ও জাপা নির্বাচনে অংশ নেবে। এ জন্য আমরা উভয় জোট ও দল যে কোন ত্যাগ স্বীকার করবো। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, অনেক সময় শান্তির প্রয়োজনে শক্তির প্রয়োগ করতে হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানাই, বিভিন্ন শপিং মলে আরও সদস্য নিয়োজিত করুক। দোকানদারদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্যে উৎসাহিত করুক। কারও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষয়ক্ষতি হলে তাৎক্ষণিক প্রতিবিধান করা দরকার। আমরা মনে করি, সাংবিধানিকভাবেই অন্তবর্তী সরকারের প্রধান থাকবেন শেখ হাসিনা। এই প্রশ্নে কোন আপস হতে পারে না।   

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন