পাহাড়ে মৃত্যুর মিছিল
প্রকৃতির প্রতিঘাত নাকি
আমাদের কর্মফল?
·
‘তিনিই
জমিনের বুকে সুদৃঢ় পাহাড় সমূহ স্থাপন করেছেন, যাতে করে জমিন তোমাদের নিয়ে স্থির থাকতে
পারে’। (সূরা আন-নাহল:আয়াত-১৫)।
·
‘তিনিই
নভোমন্ডলকে নির্মাণ করেছেন কোনো খুঁটি ছাড়া, যা তোমরা নিজ চোখেই দেখতে পাচ্ছ। তিনিই
পৃথিবীতে পাহাড় সমূহ স্থাপন করেছেন ভারসাম্য বজায় রাখার জন্যে। তাতে সকল প্রকারের বিচরণশীল
প্রাণীকুলের বিস্তারের ব্যবস্থা করেছেন’। (সূরা লুকমান: আয়াত-১০)।
·
‘আমি
জমিনকে বিছিয়ে দিয়েছি, আমি তার মধ্যে স্থাপন করেছি মজবুত পাহাড়সমূহ, আবার এ জমিনে আমি
উদ্গত করেছি নানা ধরনের গাছপালা’। (সূরা ক্বাফ: আয়াত-৭)।
·
‘তিনিই
জমিনের ওপর থেকে পাহাড় সমুহ স্থাপন করেছেন ও তাতে বহুমূখী কল্যাণ রেখে দিয়েছেন এবং
তাতে সকলের আহারের পরিমান নির্ধারণ করে দিয়েছেন’। (সূরা হামীম আস-সাজদাহ : আয়াত-১০)।
সংলাপ ॥ প্রকৃতি জগতের সবকিছুই সুমহান আল্লাহর নির্ধারিত
বিধানে পরিচালিত হয়। প্রকৃতি জগতের স্বাভাবিক নিয়মে বাধা আসলে প্রকৃতির বিরূপ প্রভাব
দেখা যায়। মানুষ প্রকৃতির উপর নিজেদের অস্বাভাবিক প্রভাব বিস্তার করতে গিয়ে প্রকৃতির
যে ক্ষতি সাধন করে চলেছে তা পরিনামে নিজের দিকেই ফিরে আসছে। পবিত্র কুরআনে ঘোষিত হয়েছে
- ‘প্রত্যেকেই তার কর্মফল ভোগ করবে’। এটাই স্রষ্টার বিধান। প্রকৃতির উপর আঘাত করার
কারণে প্রকৃতি প্রতিঘাত করবে এটাই স্বাভাবিক। সারাবিশ্ব জুড়েই প্রকৃতির এই প্রতিঘাত
লক্ষণীয়। বিশেষ করে বাংলাদেশে এই চিত্র যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া
পার্বত্য এলাকার মহা বিপর্যয় মানবসৃষ্ট অপকর্মের এক নিদারুন প্রতিঘাত। বাংলাদেশে পাহাড়
ধ্বসের কারণে নানা সময়ে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। বিশেষ করে পার্বত্য জেলা চট্টগ্রাম,
রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও বান্দরবানে প্রতি বছরই বর্ষার শুরুতে পাহাড় ধ্বস
ও মাটি চাপায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে এবং মূল্যবান সম্পদ বিনষ্ট হয়। সতর্কতামূলক প্রচার-প্রচারণা
সত্ত্বেও পাহাড় ধ্বসে মৃত্যুর মিছিল থামানো যাচ্ছে না। সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে টানা
দু’দিনের অবিরাম বৃষ্টির পর গত কয়েকদিনে তিন পার্বত্য জেলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১৫৪
জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে রাঙামাটি জেলায়। এর আগেও
২০০৭ সালের ১১ জুন পাহাড় ধ্বসে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল বন্দর নগরী চট্টগ্রামের
বিভিন্ন স্থানে। সে ঘটনায় সরকারী হিসেবে মারা গিয়েছিল ১২৭ মানব প্রাণ। ২০০৮ সালে ১৪
জন, ২০০৯ সালে ৩ জন, ২০১০ সালে ৩ জন, ২০১১ সালে ১৭ জন, ২০১২ সালে ৯৪ জন, ২০১৩ সালে
২ জন, ২০১৪ সালে ৩ জন, ২০১৫ সালে ১৯ জনের প্রাণহানি হয়। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে গত ১০
বছরে ৪০১ জনেরও বেশি মানুষ পাহাড় ধ্বসের ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে কয়েক হাজার
মানুষ। পার্বত্য জেলাগুলোতে প্রতিবছরই এভাবে লাশের ভারে পাহাড় কাঁদে। থরে থরে সাজানো
লাশ দেখে স্বজনের কান্না আর অবিরাম বৃষ্টি যেন মিলেমিশে বেদনার্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেছে
পাহাড়ি এলাকায়। এবারের দুর্ঘটনায় অনেকে হারিয়েছেন স্ত্রী-সন্তান, কেউ হারিয়েছেন মা,
কেউ বাবা, কেউবা ভাই-বোন। তাদের মধ্যে রয়েছেন সেনাবাহিনীর দুই কর্মকর্তা ও দুই সৈনিক।
কোনো কোনো পরিবারের এখন আর কেউই বেঁচে নেই। পাহাড় ধ্বসের পর উদ্ধার কাজের সময় মাটিচাপা
পড়ে প্রাণ হারান তারা। কিন্তু কেন এখানে বার বার পাহাড় ধ্বসের ঘটনা ঘটে? প্রাণহানিও
কেন এত বেশি? খোঁজা যাক তার উত্তর।
জানা গেছে, বান্দরবান জেলার ৭টি উপজেলায় প্রায় ৩০
হাজার পরিবার, রাঙামাটি জেলার ১০টি উপজেলায় প্রায় ৮০ হাজার পরিবার এবং খাগড়াছড়ি জেলার
৯টি উপজেলায় প্রায় ৬০ হাজার পরিবারের বসতি রয়েছে। এরা উঁচু-নিচু পাহাড়, পাহাড় ঘেঁষে
কিংবা পাহাড়ের পাদদেশে থাকেন। এসব পরিবার যুগ যুগ ধরে এখানে বসবাস করে আসছে। কিন্তু
জেলা ও উপজেলা প্রশাসন বর্ষায় মাইকিং করে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ প্রদান
করা ছাড়া বাস্তবমুখী কোনো পদক্ষেপ নেয় না বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রায় ২৫ বছর ধরে তিন পার্বত্য জেলায় ভূমি বন্দোবস্ত
প্রদান বন্ধ থাকায় ভূমিহারা বা ভূমিহীন হাজার হাজার পরিবার অসহায় অবস্থায় দিনযাপন করছে।
এসব জেলায় একদিকে ভূমি বন্দোবস্ত বন্ধ রয়েছে, অপরদিকে পার্বত্য শান্তি চুক্তির বিশেষ
বিধিমতে ‘যারা স্থায়ীভাবে বসবাস করেন এবং জায়গা-জমি আছে, কেবল তারাই পার্বত্য অঞ্চলের
জায়গা-জমি কিনতে পারবেন বা স্থায়ী বাসিন্দার অধিকার রাখেন’ বলে উল্লেখ রয়েছে। এ কারণেই
বাঙালি জনগোষ্ঠী ভূমিহীন হয়ে পড়ছে। এক খন্ড ভূমি কিনতে পারছে না বা ব্যবহারের সুযোগও
নেই সাধারণ মানুষের, বিশেষ করে মধ্য ও নিম্নবিত্ত শ্রেণীর। ফলে বাধ্য হয়ে বৈধ-অবৈধ
উপায়ে যে যার মতো পাহাড়ে কিংবা পাহাড়ের পাদদেশে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছে। এসব
পরিবার খুবই ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করে এলেও তাদেরকে স্থায়ীভাবে সরিয়ে দেয়ার কোনো উদ্যোগ
নেয়া হচ্ছে না। তাছাড়া ইউনিয়ন, উপজেলা বা পৌরসভাভিত্তিক পাহাড়ে ঝূঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত
পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে পুনর্বাসন করার কোনো সরকারি পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়নি। গত
কয়েক বছরে পার্বত্য জেলাগুলোয় পাহাড়ের নিচে দখল আর বসতি এত বেড়েছে, এ নিয়ে আর শঙ্কিত
না হয়ে উপায় নেই। যৎসামান্য তৎপরতা ছাড়া সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবারো উদাসীন। কানে তুলা দিয়ে
চোখ বন্ধ করে ঘুমে বিভোর প্রশাসন। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। দেশবাসীকে পাহাড় চাপাপড়া
লাশের স্তুপ দেখতে হচ্ছে বারবার। নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও তা ঠেকানো যাচ্ছে না কেন? চাইলেই
ঠেকানো যায়; কিন্তু ঠেকানো হচ্ছে না। আর মানুষও অতি লোভে তা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু
কেন?
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য মতে- বান্দরবান, রাঙ্গামাটি
এবং খাগড়াছড়ি জেলার পাহাড়ের মাটি অপেক্ষাকৃত নরম এবং মাটির ধরন হচ্ছে বেলে। তাই টানা
বৃষ্টিতে পাহাড়ের মাটিতে ব্যাপক ধ্বস নামে। এবার বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও চট্টগ্রামে
পাহাড়ের মাটি ধ্বসে যে পরিমাণ প্রাণহানি ঘটেছে, তা শুধু পাহাড় কাটার কারণ নয়, অবাধে অপরিকল্পিতভাবে পাহাড়ে
সৃজিত গাছপালা কর্তন এবং পাহাড় খোদাই করে নিষিদ্ধ বারুদ ব্যবহার করে বোল্ডার পাথর ভাঙন
ও উত্তোলন করা। পাহাড়ের ওপর অত্যাচার হলে পাহাড় প্রতিঘাত করবেই।
পাহাড় ধ্বসের আরেকটি অন্যতম কারণ হলো আমাদের পাহাড়ি
অঞ্চলের উপরের দিকের মাটিতে কঠিন শিলার উপস্থিতি নেই বললেই চলে। তাই বৃষ্টির কারণে
এ ধরনের মাটি পানি শুষে ফুলতে থাকে। তাছাড়া কঠিন শিলা না থাকায় মাটিগুলো নরম ও পিচ্ছিল
হয়ে যায়। ফলে ভারি বর্ষণের সাথে সাথে মাটি ভেঙ্গে পড়ে। তাছাড়া যারা পাহাড়ে থাকেন তারা
ঘর নির্মাণের জন্য পাহাড়ের সবচেয়ে শক্ত মাটির স্তরও কেটে ফেলেন। এতে পাহাড় ধ্বসের শঙ্কা
আরও তীব্র হয়।
জিও সায়েন্স অস্ট্রেলিয়ার এক গবেষণায় বলা হয়েছে,
পাহাড় ধ্বসের পেছনে প্রাকৃতিক কারণ এবং মানুষের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড মূল প্রভাবক হিসেবে
কাজ করে। প্রাকৃতিক কারণ হলো পাহাড়ের ঢাল যদি এমন হয় যে ঢালের কোনো অংশে বেশি গর্ত
থাকে, তখন অতিবৃষ্টিতে ভূমি ধ্বস হতে পারে। এছাড়া ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত
এবং পাহাড়ের পাদদেশের নদী ও সাগরের ঢেউ থেকেও পাহাড় ধ্বস হতে পারে। আর মনুষ্য সৃষ্ট
কারণ হিসেবে গবেষণায় বলা হয়েছে, পাহাড়ের গাছ পালা কেটে ফেলা, মাটি কেটে ফেলা, পাহাড়ে
প্রাকৃতিক খাল বা ঝর্ণার গতি পরিবর্তন, পাহাড়ের ঢালুতে অতিরিক্ত ভার দেয়া এবং খনি খননের
কারণে পাহাড় ধ্বস হতে পারে। তবে আমাদের ভূতাত্ত্বিকরা বলছেন, বাংলাদেশে মূলত পাহাড়ের
উপরের দিকে কঠিন শিলার অভাব, পাহাড়ের মাটি কেটে ফেলা এবং বড় গাছপালা কেটে ফেলার কারণেই
পাহাড় ধ্বস হয়ে থাকে।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, পাহাড় ধ্বসের মূল কারণ হলো
পাহাড় থেকে মাটি কাটা। পাহাড়গুলো ৩০ ডিগ্রির বেশি ঢালু হলে সে পাহাড়ের পাদদেশে বিপজ্জনক
অবস্থা তৈরি হয়। পার্বত্য জেলাগুলোয় রয়েছে ৯০ ডিগ্রি পর্যন্ত অসংখ্য ঢালু পাহাড়। মাটির
জমাট বাঁধা পাহাড় যখন কাটার মহোৎসব চলে তখন প্রবল বর্ষণ হলে মাটির ওপরের আবরণ না থাকায়
যে প্রবল জলধারা নিচে ধাবিত হয় তার সঙ্গে বিপুল পরিমাণ মাটি এসে পাহাড়ের পাদদেশে আছড়ে
পড়ে। আর তখনই ঘটে মর্মান্তিক ঘটনা।
২০০৭ সালে যখন পাহাড় ধ্বসে ব্যাপক প্রাণহানি হয় তখন
তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। পাহাড়ি ভূমি ধ্বসের সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখসহ সুনির্দিষ্ট
সুপারিশমালা পেশও করেছিল কমিটি। কিন্তু দুর্ভাগ্য এর অধিকাংশই মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়িত
হয়নি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একটি জরিপের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে
চিহ্নিত করার সুপারিশ ছিল, যা আজ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। তেমনিভাবে বাস্তবায়িত হয়নি
পাহাড়ের পাদদেশে বিপদসঙ্কুল অবস্থায় বসবাসকারী বস্তিবাসীকে উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাসহ
নিরাপদ স্থানে পুনর্বাসনের কর্মসূচি। বাস্তবায়িত হয়নি পাহাড় কাটার আশঙ্কা কিংবা বন
উজাড়ের ঘটনা। পাহাড় হন্তারকদের পাহাড় কাটা থেকে বিরত করা যায়নি। অন্যদিকে প্রশাসন,
সিটি করপোরেশনের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর লোভাতুর হাত গুটিয়ে না নেয়ায় অশিক্ষিত এ
জনগোষ্ঠী টুপাইস দিয়ে পাহাড়ের পাদদেশেই ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস অব্যাহত রাখে। এক শ্রেণীর
তথাকথিত রাজনৈতিক নেতারা জোরপূর্বক এসব পাহাড় দখল করে সেখানে টিনশেড ঘর তুলে তা ৫০০
থেকে ১০০০ টাকায় ভাড়া দিচ্ছে। চট্টগ্রামের খুলশী ও রেলওয়ে সংলগ্ন একাধিক এলাকার পাহাড়ে
এখন রমরমা পাহাড় বাণিজ্য চলছে। যেভাবে বসতি গড়া হচ্ছে তাতে আর পাহাড় থাকবে না। আগের
ঘটনা থেকে মানুষ শিক্ষা নেয়নি বলেই তাদের এ করুণ পরিণতি বরণ করতে হচ্ছে। পাহাড়ে এখন
যারা বসবাস করছেন তারা দ্রুত অন্যত্র আশ্রয় না নিলে পাহাড়ের আক্রোশ থেকে রেহাই পাবে
না।
একের পর এক পাহাড় চাপা পড়ে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায়
পাহাড় ব্যবস্থাপনায় আমাদের অক্ষমতাকেই প্রকাশ করছে। আপাতত এই দেড়শ’ প্রাণের চালানকে
‘নিয়তি’র পরিহাস বলে সবাই মেনে নিলেও মৃত্যুর এই অস্বাভাবিক মিছিলটির দীর্ঘায়ণের জন্য
কেবলমাত্র ‘সৃষ্টিকর্তা’র উপর ছেড়ে দিয়ে পার পাওয়া যাবে না। এগুলো এক প্রকারের হত্যাকান্ড।
প্রতিদিন পত্রিকায় পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড় কাটার খবর আসে। স্থানীয় প্রভাবশালীর দোহাই
দিয়ে পাহাড় কেটে শিল্প-কলকারখানা তৈরি হচ্ছে, ব্যাপকহারে বৃক্ষ নিধন হচ্ছে। অপরিকল্পিত
গর্ভধারণের মতো পাহাড়ের বুকে রাতারাতি বাড়ি তুলছে। এতো অরাজকতা চলার পরও এই দেশের সরকার
চুপ মেরে বসে আছে। কারণ একটাই, যারা পাহাড় কাটছে কিংবা অবৈধ কারখানা পাহাড়ে বুকে তুলছে,
তারা কোনো না কোনোভাবে রাজনৈতিক মেরুদন্ড শক্তপোক্ত। শুধুমাত্র সদিচ্ছা থাকলেই পাহাড়ে
ভূমিধ্বস রোধ করা সম্ভব। সরকারের উচিত পাহাড়ে পরিকল্পিত বসতি কিংবা বসতির জন্য আধুনিক
প্রযুক্তি নির্ভর হওয়া। জাপানের মতো দেশে যেখানে বছরে সাড়ে চার হাজার ভূমিকম্প হয়েও
প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত্যুর হার এক শতাংশে নিয়ে এসেছে, সেখানে আমরা কেন পারি না? তারা
তো প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে পাহাড়কে শাসন করছে, আমরা কেন পাহাড়িদের দুঃখ লাঘবে বাস্তবসম্মত
পদক্ষেপ গ্রহণ করছি না?
সময়ের দাবি সরকার শুধুমাত্র পাহাড়ের সুরক্ষায় বাস্তবমূখী
পদক্ষেপ গ্রহন করুক। পাহাড়ে বসবাসরতদের উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে টেকশই বাড়ি-রাস্তাঘাট
করে দিক। পাহাড়ি ভূমি-খেকোদের শাস্তির বিধান করে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করুক। অন্যরা
পারলে আমরাও পারবো। আমরা মনে প্রাণে চাই, আর যেন পাহাড় ধসে কারো নির্মম মৃত্যু না হয়।
আল্লাহর বিধান মেনে আমরা সবাই যেন পাহাড় রক্ষায় সচেতন হই। নয়তো আমাদের কর্মফল আমাদেরকেই
ভোগ করতে হবে।