সময়ের সাফ কথা....
বাংলা ও ইসলামের
শত্রুরা এক ও অভিন্ন
নজরুল ইশতিয়াক ॥ দেশকে দেখে দেশপ্রেম।
মানুষকে দেখে মানুষের প্রতি প্রেম আসে। যারা দেশ পরিচালনা করতে চান তাদেরকে পুরো দেশ,
দেশের মানুষ, মানুষের সক্ষমতা তথা কর্ম ক্ষমতা, চিন্তার ধরন, ঐতিহ্য ইতিহাস দেখে আসতে
হবে। না দেখে আসলে দেখা হবে না, প্রেম হবে না, করা হবে না। উপরন্তু কাল্পনিক দেশপ্রেমের
বলি হতে হবে। অন্ধকারে সাপ ছোবল মারবেই কারণ অন্ধকার অন্ধকারই। সেখান থেকে বের হবার
প্রচেষ্টায় তো জীবনেই ধর্ম।
বিজ্ঞানী উপাত্ত সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা
নিরীক্ষা করেন। এ পর্যায়ে তিনি উপাত্ত সংগ্রহ ও পরীক্ষার নিরীক্ষার আগের দেখা থেকে
ভিন্ন কিছু দেখেন। এটি তাকে বাহ্যিক দেখা থেকে ভিতরের দেখায় নিয়ে যায়। এভাবেই বস্তুর
রূপ বা বস্তুর কার্যকারণ সত্য বের হয়ে আসে। বিজ্ঞানী বস্তুর রূপান্তর ঘটান দীর্ঘ প্রক্রিয়ায়।
তাকে এই প্রক্রিয়ায় আসতে পরম্পরা গবেষণা তথ্য উপাত্ত জেনে আসতে হয়। জানতে জানতে তিনি
নিজেকে সেই জানার পথে স্থিত করেন। তিনি যে বস্তুর বা সূত্রের গবেষণা করতে চান তার মধ্যে
নিজেকে আবিস্কার করেন বা দেখেন। তার এই দেখা তাকে উপর্যুপরি দেখায় আসক্ত করে। এভাবেই
দেখা থেকে দেখার রূপান্তর। পুরো পৃথিবী একটি রূপান্তরিত অবস্থা। আমরা রূপান্তরের যাত্রা
পথে মানুষ আদি সত্যের আধার। নিজেকে যদি দেখতে পায় রূপান্তরের এই যাত্রায় আমরা কোথায়
আছি তবেই কেবল দেখতে পারবো কোথায় যাচ্ছি। বস্তুত মানুষ অন্য সব কিছুর মধ্যে নিজেকেই
খুঁজে ফেরে। নিজেকে দেখা তবু ফুরায় না।
রূপান্তরের যাত্রায় কল্পনা মিথস্ক্রিয়া
রূপকথা অদৃশ্য ভাবনার কোন স্থান নেই। আমরা যেখানে নিজেদের দেখতে চাই সেখানে যাবার ক্ষেত্র
প্রস্তুতি যাত্রা সম্পন্ন করলেই কেবল সেখানে যেতে পারি। প্রেম সৃষ্টি হয় দেখা থেকে।
কল্পনায় প্রেম সৃষ্টি হয় না। ফলে দেশপ্রেম সৃষ্টির প্রক্রিয়াও এক ও অভিন্ন। না দেখতে
পারলে কোন পরিকল্পনা কোন পদক্ষেপ সফল হয় না। পুরো দেশকে দেখতে না পারার ফল বর্তমানে
ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। আমরা দেখতেই পারছি না আমরা কি নিয়ে আছি আর কোথায় কারা
কি নিয়ে আছে আর তাদের নেপথ্যে কারা কি কারণে রসদ জোগাচ্ছে? না দেখতে পারার অর্থ হচ্ছে
হচ্ছে আমরা দেখার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি। বর্তমানে এসে ফলাফল ভোগ করছি মাত্র।
ব্যক্তি যে জনপদে ভুমিষ্ট হয়েছে সেই ভূমি
মাতৃতুল্য। গর্ভধারিনী মা যেমন তাকে ধারণ করেছে পরবর্তীতে লালন পালন করেছে তার দেশ
মা’ও তা-ই করছে। মা এবং দেশ কে অস্বীকার করা বা অমান্য করা মানে শেকড় বিচ্ছিন্ন হয়ে
যাওয়া। শেকড় বিচ্ছিন্ন গাছ বাঁচে না। মা ও মাতৃভূমির মধ্যেই তার সত্য নিহিত রয়েছে।
এটিই যদি না হতো তবে পৃথিবীতে এত জনপদ, এত ভাষা, এত সংস্কৃতির সৃষ্টি হতো না। স্রষ্টার
সৃষ্টির এই বিপুল নিকেতন আমরা দেখতাম না। পুরো পৃথিবী একটা বাগান তবে তা বিশ্বময় ছড়িয়ে
থাকা ছোট চোট হাজারও বাগানের সমষ্টি। জনপদের দীর্ঘ জীবনাচার ভৌগলিক বৈচিত্র শুধু মাত্র
ভাষা চেহারা বর্ণ ও চিন্তন পদ্ধতিকে একটা আবরণ
দিয়েছে মাত্র। এই আবরণ ভেদ করলেই সব কিছু দৃশ্যমান রূপ নেবে। ফলে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্
ঘোষণা করেছে আমি পৃথিবীর সমস্ত জনপদে স্ব-স্ব ভাষার উপযোগী রাসুল প্রেরণ করেছি। যাতে
তারা নিজেদের মত করে বুঝতে পারে।
নিজেকে দেশপ্রেমিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে
হলে দেখার শক্তিকে জাগ্রত করতে হবে। এ জন্য নিজেকে বারবার দেখাটা জরুরী। দেশের মানুষের
অভাব অভিযোগ সংকট সমস্যাকে বারবার দেখতে হবে। দেশপরিচালনার ক্ষেত্রে যারা পুরো দেশকে
দেখার সামর্থ্য অর্জন করবেন কেবল তারা দায়িত্ব পাবার অধিকারী হবেন। কাউকে বঞ্চিত করে
লুটেরা পাচারকারী মুনাফেকি যেমন স্রষ্টা পছন্দ করেন না তেমনি যারা আল্লাহ্ দ্বীন প্রতিষ্ঠার
নামে খুন হত্যা জখমের তাবেদারী অভিযান শুরু করেছেন তাদেরও বাংলায় স্থান হবে না। নিঃসন্দেহে
এরা বিপথগামী। বিদেশী মেহমান যারা এদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে আমন্ত্রিত তাদের উপর
হামলা প্রমান করছে বাংলা ও ইসলামের শত্রুরা এক ও অভিন্ন। দেশ পরিচালনা হবে লক্ষ্য ভিত্তিক।
সেখানে নীতি নৈতিকতার রং রূপ লক্ষ্য পুরোনের সাথে সঙ্গতিপূর্ন। বাংলার শত্রুদের চিহ্নিত
করতে পারলেই বাংলায় ইসলামের নামে যারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করছেন তাদের চিহ্নিত করা
সহজ হবে। সোনার বাংলা বিনির্মাণের পথে সকল কাটা দূর হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন