রাজনৈতিক অঙ্গনে ভন্ডামি!
সংলাপ
॥ ধর্মীয় অঙ্গনে ভন্ডামি চলছে। ১৯৮৬ সালে এরশাদের অধীনে নির্বাচন নিয়ে রাজনীতিকরা ভন্ডামি
করেছিলো।
যে
মহল থেকে বিএনপি’র জন্ম সেই মহলের নির্দেশে ’৮৬
সালে নির্বাচনে না গিয়ে ‘আপসহীন’ ভাবমূর্তি গড়ে তোলার প্রচেষ্টায়
ছিলেন খালেদা জিয়া।?
অভিজ্ঞ
মহলের মতে, হিসাবে বড় ভুল করে ফেলছে বিএনপি ১৯৮৬ সনে নেতৃত্ব এবং তাদের নেপথ্যের মুরুব্বিরা।
তারা ভুলে গেছেন যে, এটা ১৯৮৬ সাল নয়, আর বর্তমান সরকারটি আর যাই হোক এরশাদ সরকার নয়।
বিএনপি’র মূল নেতৃত্ব খালেদা জিয়ার পরিবার
অর্থাৎ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, হাওয়া ভবনের তারেক জিয়া, কোকো, খালেদা জিয়ার
ভগ্নি, ভাগ্নে, ভাইরা মিলে পুরো পরিবার দুর্নীতি, লুটপাট, অপশাসন, বিদেশে সম্পদ পাচার,
এতিমখানার অর্থ লুট করা থেকে হেন অপকর্ম নেই যা করেননি এই মর্মে দৈনিক সংবাদপত্রগুলোতে
তৎকালীন সময়ে অনেক সংবাদ দেশবাসী জেনেছে। ছেঁড়া গেঞ্জি আর ভাঙ্গা স্যুটকেস থেকে কোটি
কোটি টাকার মালিক হয়েছেন, বিদেশে পাচার করেছেন। ক্ষমতার শেষভাগে এসে কয়েক ডজন স্যুটকেস
(কারো কারো মতে ৫৫টি) লুন্ঠিত মালামাল নিয়ে সৌদি আরব রেখে এসেছে এসব খবর দেশের মানুষ
এখনও ভুলে যায়নি। ট্যাক্স না দিয়ে খালেদা জিয়ার কালো টাকার মালিক হওয়া, হত্যা-খুন-গ্রেনেড
হামলা, ধর্মের নামে জঙ্গি উত্থানের কথাও মানুষ ভুলে যায়নি। কোটি কোটি টাকা নিয়ে হাওয়া
ভবন খ্যাত-তারেক খুনিকে বিদেশে যে পাচার করে দিয়েছে সে কথাও বিভিন্ন পত্রিকায় এসেছে।
তারেক-মামুন-বাবর গংয়ের চাঁদাবাজি, ব্যাংক লুট, সন্ত্রাসী লালনের কথাও এসেছে দেশ বিদেশের
বিভিন্ন পত্রিকায়। এই বাস্তবতায় সম্প্রতি বেগম খালেদা যে আবার ‘আপসহীন’ হওয়ার মহড়া দেয়ার প্রচেষ্টা চালিয়েছিলো। সেটা ব্যর্থ
হয়েছে। বর্তমানে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। ১৯৮৬-তে সফল হলেও ২০১৩ তে ‘আপসহীন’ হওয়ার চালটি একেবারে মাঠে মারা গেছে। দেশের মানুষকে
এখন বোকা ভাবলে নিজেই বোকা বা ধূর্ত বলে প্রমাণিত হবেন দেশের মানুষের কাছে। কিন্তু
রাজনৈতিক ভন্ডামিটা এখনও রয়ে গেছে দুঃখজনকভাবে।
রাজনীতিতে
তারেক-কোকোকে ইস্যু করার চেষ্টা করছেন বিএনপি তথা খালেদা জিয়া। এটা তিনি ভালো করেই
জানেন এবং অন্য সবার চেয়ে বেশি করেই জানেন দেশে থাকলে বিচারে তারেক-কোকোর শাস্তি হয়ে
যাবে হয়তো। সুতরাং তাদের রক্ষা করার একমাত্র উপায় হিসাবে ‘চিকিৎসার জন্য’ পাঠিয়েছেন
এবং নিজেও গেছেন। কিন্তু ‘বিদেশে চিকিৎসা’ যখন রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে যায় তখন কী সেটা সমর্থনযোগ্য? তারেক
এবং কোকোর সম্পর্কে দলের ‘রাজনৈতিক ইস্যু’ তৈরি করে চাপ দেয়ার কৌশলটি খুব উৎকটভাবে জনগণের সামনে প্রকাশ
হয়ে পড়ছে এবং রাজনীতিকে জটিল করে তুলছে। ব্যক্তিগত সমস্যাকে জাতির জন্য রাজনৈতিক সমস্যায়
পরিণত করে খালেদা রাজনীতিকে আরও সংকটের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন।
সরকার
যে কালো টাকা এবং পেশীশক্তিমুক্ত নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে সেটাও ব্যর্থ হতে পারে
বলে আশংকা করছে অভিজ্ঞমহল। ৪ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে যারা জয়ী হয়েছেন তাদের মধ্যে
অনেকেই পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত এবং অনেক দলীয় (আওয়ামী
লীগ এবং বিএনপি’র) ক্যাডার প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচনে প্রার্থীদের অনেকের বিরুদ্ধেই থানায় হত্যা,
অস্ত্রবাজি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, টেন্ডারবাজি, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আজও আছে।
অনেক এলাকায় এসব অভিযুক্ত প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী মাঠে নেমেছে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা।
কালো টাকা, পেশীশক্তি এবং সন্ত্রাস আবার ফিরে আসছে। সারা দেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে
সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, হত্যা যে বেড়েছে সেটা এখন অস্বীকার করার উপায় নেই।
সরকারের
ঘোষণা অনুযায়ী কিছুই ঘটছে না যেমন, তেমনি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও দায়িত্বশীলতার কোনো
লক্ষণ নেই। থাকলে খালেদা জিয়া সংসদে দাঁড়িয়ে নির্লজ্জভাবে তার আমলের দুর্নীতি, লুটপাট,
অপশাসন আর ধর্মীয়?মিথ্যাচারের পক্ষে সাফাই গাইতে পারতেন না। রাজনীতির এই জটিলতা, ধর্মীয়
সন্ত্রাস-কালো টাকা-পেশীশক্তির পুনরুত্থান এবং সরকারের নিজস্ব ‘স্কিম’ বাস্তবায়নের পরিকল্পনার মধ্য দিয়েই মিথ্যাচারের
পথ ধরে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে ২০১৪ সালের দিকে।
কী হবে সেটা সময় বলে দেবে তবে আন্দাজ করা সাধারণ মানুষের জন্য কঠিন নয়!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন