বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৩

ধর্মান্ধরা নবী-রাসুলদের চরম


ধর্মান্ধরা নবী-রাসুলদের চরম

অপমান করেছে এখনও করছে

 

সংলাপ ॥

 

গত ৬ এপ্রিল স্বঘোষিত  হেফাজতিদের লংমার্চ-পরবর্তী মতিঝিলের জনসমাবেশে সংগঠনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন- আল্লাহ যুগে যুগে কাফের-বেঈমানদের শাস্তি দানের জন্য নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন। নমরুদকে শিক্ষা দেবার জন্য ইব্রাহিম (আ.)-কে প্রেরণ করেন, ফেরাউনকে শায়েস্তা করার জন্য পাঠান হজরত মূসা (আ.)-কে, মক্কার কাফের-বেঈমানদেরকে শিক্ষা দেবার জন্য রাসূল (সা.)-কে পাঠিয়েছেন; ঠিক অনুরূপভাবে বর্তমানে বাংলাদেশের নাস্তিক ব্লগার আর ইসলামের দুশমনদেরকে শাস্তি দেবার জন্য আল্লাহ পাক আল্লামা আহমেদ শফীকে পাঠিয়েছেন।’ (নাউজুবিল্লাহ)    হেফাজতি স্বঘোষিত নেতার এ বক্তব্য মানব ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম মহাপুরুষ হিসেবে স্বীকৃত ও নবী-রাসূলগণের কাফেলার অগ্রদূত হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও হজরত মূসা (আ.)-এঁর সুউচ্চ মর্যাদা ও অতুলনীয় শানের প্রতি চরম অবমাননা। বিশেষ করে রাহমাতুল্লিল আলামিন বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এঁর শানের প্রতি অমার্জনীয় ধৃষ্টতা প্রদর্শন। তার এ বক্তব্যে দেশের সাধারণ মানুষের ধর্মবেত্তা ও ধর্মব্যবসায়ীদের  প্রতি ক্ষোভ ও ঘৃণার সৃষ্টি হয়েছে।

নবী-রাসূলগণ পৃথিবীর অধঃপতিত, দুর্দশাগ্রস্ত, দিশেহারা মানবজাতিকে শান্তি ও মঙ্গলের পথ প্রদর্শন করতে আবির্ভূত হয়েছেন। কাউকে শাস্তি দেয়ার জন্য, কাউকে শায়েস্তা করার জন্য তারা আসেননি। 

তথাকথিত হেফাজতি নেতা নবুয়ত ও রেসালতের মহান দায়িত্ব পালনকারী নবী-রাসূলগণের সঙ্গে আল্লামা আহমেদ শফীকে সমান্তরাল করে দিয়েছেন যা শিরিকের অন্তর্ভুক্তি বলে?ইসলামী চিন্তাবিদরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মানুষ যত বড় হোক না কেন তাকে কখনো নবী-রাসুলদের সাথে তুলনা করা যায় না। অথচ ওই বক্তা প্রকাশ্য দিবালোকে, স্বজ্ঞানে এবং সুস্থ মস্তিষ্কে তাই করলেন। ওই বক্তব্যের সময় আল্লামা আহমেদ শফী মঞ্চেই ছিলেন কিন্তু তাকে কোনো প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি।
বাংলাদেশ হেফাজতি স্বঘোষিত নেতাদের ভাষায় কাফের-বেঈমান ইসলামের দুশমন অধ্যুষিত কোনো জনপদ নয়। এটি অজস্র অলি-আউলিয়া, সুফি-সাধক ও গাউস-কুতুবের দেশ। এদেশের শতকরা নব্বই ভাগ মানুষ মুসলমান। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির হাজার বছরের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রয়েছে এদেশের। এই দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনমানুষের আক্বিদা-বিশ্বাসের পরিপন্থী বক্তব্য দিয়ে হেফাজতি বক্তা শুধু ইসলামের বিরুদ্ধেই যে অবস্থান নিলেন তাই নয়; তার এ অপরাধ রাষ্ট্রদ্রোহিতার পর্যায়েও পড়ে। ধর্মীয় উসকানি দিয়ে মুসলমানদের মাঝে উন্মাদনা সৃষ্টি এবং সন্ত্রাসের মাধ্যমে একটি মুসলিম রাষ্ট্রের শান্তি বিনষ্টের অপচেষ্টায় মেতে ওঠা সমাজের স্থীতিশীলতা নষ্ট করা- কোনোমতেই ইসলাম সম্মত নয় বলেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আর যেহেতু তা ধর্মের মোড়কে, ইসলামের নামে বা ইসলাম রক্ষার নামে করা হয়েছে সেহেতু তা অমার্জনীয় অপরাধ। নবী-রাসূলগণের অবমাননাকারী ও ইসলামকে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীগত স্বার্থে ব্যবহারকারী এসব চিহ্নিত ব্যক্তিকে অবিলম্বে দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন