সময়ের সাফ কথা....
অজ্ঞতার অন্ধকারে
সংলাপ ॥ মৌলবাদ শব্দটির উৎপত্তি আশির দশকে। পশ্চিমবঙ্গের
বুদ্ধিজীবীরা ফান্ডামেন্টালিজম-এর বাংলা করতে গিয়ে এই ‘মৌলবাদ’ শব্দটি গণমাধ্যমে চালু
করে। শেকড়ের সন্ধানে না গিয়ে, এখন এই শব্দটি ধর্মীয় উগ্রবাদীদের ক্ষেত্রে এক শ্রেণীর
রাজনীতিকদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে বাংলাদেশেও। আমেরিকার রক্ষণশীল প্রোটেষ্ট্যান্টরা
খ্রীষ্টান ধর্মের কতগুলো মৌল সত্য ধরে নিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলো বলে তাদের বলা হতো ফান্ডামেন্টালিস্ট।
রাষ্ট্রক্ষমতা দখল বা ধর্ম ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা তাদের লক্ষ্য ছিল না। এই আন্দোলন
পর্যালোচনা করে পুঁজিবাদী গোষ্ঠী পশ্চিমারা উপলব্ধি করতে পেরেছিলো যে, ধর্মের নামে
উগ্রপন্থী তৈরি করে ও তাদের রসদ জুগিয়ে যে কোন দেশে উন্নতিতে বাধা দেয়া এবং সামাজিক
অস্থিরতা সৃষ্টি করা সহজ। ফলে সেই দেশ তাদের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবে ও চাটুকার হয়ে পড়বে
দু’মুঠো ভাতের জন্য। এর প্রভাব পড়ে বিশেষ করে মুসলমান বিশ্বে। তারা প্রতিটি মুসলমান
অধ্যুষিত দেশে ধর্মের নামে উগ্রবাদী তৈরি করে তাদেরকে রসদ জোগাতে লাগল মুসলমান-মুসলমানের
মধ্যে লড়াইয়ের জন্য। আজও সেই ধারা বর্তমান। আজও অজ্ঞ মুসলমানরা প্রতিটি দেশে মেতে আছে
আনুষ্ঠানিকতা নিয়ে। ধর্মীয় মূল্যবোধ চর্চা ও চর্যা না করে ধর্মান্ধ হয়ে নিজেদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে চলছে।
ফলে রাষ্ট্রের উন্নতি বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এই উগ্রপন্থীরা চিৎকার করে ধর্ম গেল বলে,
বাংলাদেশে তথাকথিত ইসলামি শরিয়া প্রতিষ্ঠা ও ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নাম করে রাষ্ট্রীয়
ক্ষমতায় যাবার জন্য তারা এতো উন্মাদ হয়ে উঠেছে যে সমাজে যে কোন ধরনের সন্ত্রাস ও মিথ্যা
ফতোয়া থেকে আরম্ভ করে যে কোন জঘন্য কাজ, খুন, ডাকাতি, নির্যাতন, অগ্নি-সংযোগ ইত্যাদি
সব কিছু তারা করছে। জনসাধারণের মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় তাদের লক্ষ্য
নেই। বর্তমানে সন্ত্রাস আর এই ধর্মান্ধতা দেখে সাধারণ শিক্ষিত মানুষ তাদেরকে আখ্যায়িত
করছে মৌলবাদী বলে।
অপ্রিয় হলেও সত্য পৃথিবীর কোন মুসলমান রাষ্ট্রে পরিপূর্ণ
মোহাম্মদী ইসলাম আজ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত হয় নাই বা করার প্রচেষ্টাও নেয়া হয় নাই। কারণ
হিসেবে পাওয়া যায় - ‘শান্তি ও মানবতার’ ধর্ম রূপান্তরিত হয়ে চলছে ‘ব্যক্তি স্বার্থের’
ধর্মে নবী করীম (যাঁর কৃপা আমাদের উপর বর্ষিত হোক)-এঁর ওফাতের পর থেকে আজও।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন