মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

চাঁদাবাজি

চাঁদাবাজি

সংলাপ ॥ আমাদের দেশে দীর্ঘ দিনের সমস্যা চাঁদাবাজি। চাঁদাবাজদের কারণে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। ঈদকে সামনে রেখে তাদের তৎপরতা বাড়ছে। এদের ব্যাপারে এখনই সতর্ক হওয়া দরকার।
রাজধানী কিংবা দেশের সর্বত্র নির্মাণ খাত, পরিবহন খাতসহ সব ধরনের ব্যবসা এদের হাতে জিম্মি। চাঁদার জন্য এরা হুমকি দেয় বিভিন্ন মাধ্যমে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাঁদা না দিলে অনেক সময় জীবন নিয়েও সংশয় দেখা দেয়। ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও ঠিকাদাররা এদের প্রধান টার্গেট। সাধারণত এ চার পেশায় নিয়োজিতদের আয় রোজগার বেশি; তাই চাঁদাবাজদের কোপানলে তাদেরই পড়তে হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে পারে না। চাঁদাবাজি দমনে সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

সুস্থ সমাজ সর্বদাই শুভবোধ, বুদ্ধি এবং আইনের ওপর প্রতিষ্ঠিত। চাঁদাবাজি একটি বৃহত্তর সমাজ কাঠামোকে ধ্বংস করে দেয় । সর্বস্তরে সুশাসন নিশ্চিত হলে চাঁদাবাজি কমে আসবে বলে ধারণা করা হয়। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজদের তৎপরতা বেড়ে থাকে এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তা না হলে এরা এত সাহস পায় কোথা থেকে? শোনা যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশের সঙ্গে চাঁদাবাজদের সংযোগ রয়েছে। জোরপূর্বক চাঁদা আদায় অপরাধ। কোন কোন সংগঠনের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগও রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন দল ও সংস্থার নামেও চাঁদা আদায় করে থাকে। বিশেষ করে পরিবহন খাতে এ ধরনের চাঁদাবাজি বেশি লক্ষ্য করা যায়। চাঁদা আদায় হয় হাট-বাজারে, ফেরিঘাটে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রভাবশালীর নামে। দেখা গেছে ঈদের সময় বাস ভাড়া বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে যায়। এর পেছনে সংশ্লিষ্টদের স্বেচ্ছাচারিতা যেমন রয়েছে তেমনি চাঁদাবাজরাও এর জন্য দায়ী। চাঁদা না দিয়ে কোন ব্যবসাই করা সম্ভব নয়। প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে কোন কোন চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে মামলা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গড়িমসি করে। তাহলে দুর্নীতি রোধ করবে কে? উন্নয়ন, শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য চাঁদাবাজি অন্যতম অন্তরায়। দেশ থেকে সব ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধ করতে আইনের কঠোর প্রয়োগ দরকার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ যদি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবেও জড়িত থাকে, তাদেরও আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন