বুধবার, ৮ মে, ২০১৩

তাকিয়ে থাকি .... দিক্‌ হতে দিগন্তে


তাকিয়ে থাকি .... দিক্‌ হতে দিগন্তে

 

মাহমুদা রুনু ॥

 

দায় নেই, দায় নেই কারো? কোথাও।

ডোবায় বালি ঢেলে

অননুমোদিত নয় তলা ইমারত

ছয় তলার ভিতের উপর .....

রাজউকের জ্ঞানচক্ষু উন্মোদিত হয়

ধ্বংসের মাঝে মৃত আর অর্ধমৃতদের মর্মন্তুদ পরিণতি দর্শনে।

সমূহ বিপদের সংকেত উপেক্ষা,

শ্রমিকের পাজড়ে সাড়াশি ধরে মৃত্যুফাঁদে ঢোকানো,

বাণিজ্যলক্ষি বৃদ্ধির অন্ধনেশায়।

যেন নাৎসি কায়দায় গ্যাস চেম্বারে প্রেরণ সহস্র নিরীহ কর্মজীবীকে।

মানুষের দাম বুঝি সবচাইতে কম এই পোড়ার বঙ্গদেশে।

দায় নেই কারখানার মালিকের,

দায় নেই সাংসদপুষ্ট প্লাজা মালিকের,

দায় নেই কারখানার অনুমোদন বিশেষজ্ঞদের।

রাষ্ট্র কর্মযজ্ঞ চলে নির্বিকার

রাষ্ট্রপ্রধানের শপথ চলে জমকালো উতসবে

যখন ধ্বংসস্তুপে রাষ্ট্রের ডলার তৈরির হাজারো

মহান শ্রমিক ...

যাদের ভোটে জোটে তাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লাউন যেন এক!!!

বিবৃতি ঝাড়েন বিশ্ব-গণ মাধ্যমে

মানুষের ঝাঁকুনিতে ধ্বসে গেছে নয়তলা অট্টালিকা ......

এ কোন বাংলাদেশ ? একি কোন সভ্য মানবের বিবৃতি?

সহ্য হয় না ...........।

ঘেন্না ধরে গেছে ..... ঘেন্না ধরে গেছে .....

অর্থনীতির লোভী ও খুনি চালিকাশক্তির উপর,

নির্বিকার রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারক গোষ্ঠীর উপর।

তবুও জেগে থাকে হৃদয়বান মানুষ

সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় হাজারে হাজার

মুহূর্তে কাতারে কাতার ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র ক্ষমতাহীন মানুষ

দুটো হাত আর একবুক ভালোবাসা নিয়ে।

তাকিয়ে থাকি ওদের দিকে গভীর শ্রদ্ধাভরে।

ভরসার আশা নিয়ে তাকিয়ে থাকি ..

শক্ত মাটিতে পা রেখে দাঁড়িয়ে থাকা

সাধারণ দেশপ্রেমী মানুষের অসীম ক্ষমতার দিকে।

এ কোন মৃত্যুর হোলি খেলা?

ক্ষমতায়র নেশায় এ কেমন নৃশংসতা?

বাঙালির জাতীয়তার তকমা গায়ে

এতো বিশাল যুদ্ধপরাধীপক্ষ স্বাধীনতা বিরোধী?

রক্ত হীম হয়ে যাওয়া সহিংসতা।

একটি জানোয়ার, একটি হায়নাওকি

একবার কাঁপে না স্বপ্রজাতিকে খুন করবার আগে?

বাংলাদেশের এই হায়নারা খুনের উল্লাসে জন্তুর স্বরূপ

পুলিশ তোমায় স্যালুট মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকায় অপরূপ

জন্তুকে রুখতে জান্তব হতে হয়; দাঁড়াও রুখে সেই রূপ।

ওহে মানুষ আর নয় বিলম্ব

নামাজ শেষে মন্দিরে যাও

পুজো শেষে মসজিদে যাও

যিশুকে বুকে নিয়ে হাত বাড়িয়ে দাও

গৌতম বুদ্ধের অহিংসাকে হাতিয়ার করো

মানুষকে দাঁড়াতে হয় মানব প্রেম-ধর্ম নিয়ে মানুষের পাশে

সকল মত-পথের ঊর্ধ্বে

তবেই রুধতে পারে জল্লাদের নৃশংসতা।

অপশক্তির এ প্রকান্ডতায় হীম হয়ে থাকা

দেশপ্রেমী প্রকান্ড অহিংস শক্তি

চায় তোমার বজ্রমুষ্টি হাত।

এসো বন্ধু ধরো হাত

আর নয় বসন্ত হোলি খেলার ক্ষণ

জবাব দিতে হবে রক্তহোলী খেলার,

পিশাচের দলকে পিশে দিতে হবে শাশ্বত চেতনায়

জাগো মানুষ মিনতি করছে নগন্য কবি করজোড়ে

থামাও মৃত্যু হোলি

স্বাধীনতাকে দিওনা বলি

হায়নার হাতে তুলি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন