বুধবার, ২৫ জুন, ২০১৪

হাক্কানী কথা - ৪



হাক্কানী কথা - ৪

সংলাপ ॥ সব অসুখ কি এক ব্যবস্থাপত্রে সারবে? চিন্তাজগতে আমরা একেকজন একেক রকমভাবে চিন্তা করব তবে কি এক নীতিতে আমরা চলতে পারবো? এইভাবে কতটুকু যাওয়া যাবে? যে সময় পৃথিবীতে ৫০কোটি মানুষ ছিল, সে সময় যে কাজটি করা গেছে, যে সময় পৃথিবীতে ১০কোটি মানুষ ছিল, সে সময় যে কাজটি করা গেছে আজ ৭০০কোটি মানুষের পৃথিবীতে কি সে কাজটি করা যাবে? একই পদ্ধতিতে? নাকি তার সংস্কার করতে হবে? প্রতিনিয়তই ব্যক্তির যে পরিবর্তন হচ্ছে ব্যক্তি সেটা ধরে না, জানতেও চায় না। নিজের যে পরিবর্তন হচ্ছে, নিজের চিন্তারও যে পরিবর্তন হচ্ছে, নিজে অভ্যাসের দাস হয়ে যেগুলো করছে তার মধ্যেও যে পরিবর্তন হচ্ছে সেটাও উপলব্ধি করে না।
যখন কেউ এক সত্য ধরার জন্য সিদ্ধান্ত নিবে তখন জানতে হবে কোন একটা বিষয় বা ব্যক্তি, সে নিজের মধ্যে উপলব্ধি করে কিনা। সব কিছু বাদ দিয়ে শুধু এক কে নিয়ে থাকার সিদ্ধান্তে আসতে পারছি কি না। যারা হাক্কানীতে আসছেন তাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যারা পার্থিব চাওয়া-পাওয়া নিয়ে দরবারে আসছেন তাদের জন্য এটা প্রযোজ্য নয়, তারা আসবেন, উপদেশ মানবেন কাজ হবে, আবার আসবেন, আবার কাজ সম্পন্ন হলে চলে যাবেন। এ রকম হাজার হাজার মানুষ আসছে। লাখ লাখ মানুষ আসছে হাক্কানীর সব দরবারে, তারা তাদের কার্য হাসিল করে চলেও যাচ্ছেন। কুরআনে বলা আছে - যে তার আল্লাহর দিকে এগিয়ে যাবে পূর্ব পশ্চিম উত্তর দক্ষিণ কোন দিক থেকে সহযোগিতা আসবে তা তুমি জানো না। তুমি আল্লাহর দিকে ধাবিত হও। আল্লাহ কি? এক। এক-এ আমি কোন্‌ জায়গায় আছি? আমার চিন্তা কি এক-কে কেন্দ্র করে? আমার যে অভ্যাসগুলো গড়ে উঠছে তা কি এক-কে কেন্দ্র করে? আমার যে সম্পদ তা কি এক-কে কেন্দ্র করে? আমার যে বিদ্যা তা কি এক-কে কেন্দ্র করে? তাহলে অবশ্যই সেখানে সহযোগিতা আসবে। কুরআন তো মিথ্যা হতে পারে না, কোন ধর্মপুস্তক, কোন শাস্ত্র মিথ্যা হতে পারে না।
কুরআনে লেখা রয়েছে - যে তার আল্লাহর দিকে এগিয়ে যাবে পূর্ব পশ্চিম উত্তর দক্ষিণ কোন্‌ দিক থেকে সহযোগিতা আসবে তা তুমি জানো না। প্রশ্ন আসবে কতক্ষণ পর্যন্ত সে জানবে না? যতক্ষণ পর্যন্ত হাবুডুবু খাবে, মুখে বলবে আমি এক-এর মধ্যে আছি কিন্তু ৫মিনিট চোখ বন্ধ করে আত্মদর্শন করার তার সময় নেই। ২৪ ঘন্টা আপনি হাজার হাজার বিষয় চিন্তা করছেন আর ৫ মিনিট যখন চোখ বন্ধ করলেন তখন সেগুলো কি আসবে না? ওর প্রভাব কি পড়বে না? অবশ্যই পড়বে। সেইখানে 'এক' ধারণ করে আমি লালন করছি কিনা, 'এক'-এর শক্তি আমি উপলব্ধি করতে পারছি কিনা তা দেখতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত 'এক' বোধ না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত হাবুডুবু খাবো, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এগিয়ে যেতেও পারবো, যা আমার সহায়ক হবে।
সূফী সাধক আনোয়ারুল হক উপলব্ধি করেছেন, বর্তমান জগতে আজ থেকে হাজার হাজার বছর লক্ষ লক্ষ বছর ধরে যারা সত্যকে লালন করে আসছে, ১৪০০ বছর আগে নবী মোহাম্মদ (সা.) যেভাবে বললেন যে, সত্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, সত্য লালন করতে হবে, সত্য ধারণ করতে হবে এবং সেই ধারায় আমরা দেখছি বহু সূফী সাধক করে গেছেন কিন্তু তার ধারাবাহিকতায় যে সংস্কারের প্রয়োজন ততটা আসে নাই। অপরদিকে এই সত্যের বিরুদ্ধে যে শক্তি, সত্য একটি শক্তি এবং সত্যের বিরুদ্ধে যত শক্তি আছে তারা যখন দেখে তখন এই সত্যের সাথে দ্বন্দ্ব শুরু করে, যা আজও চলছে এবং শেষ পর্যন্ত চলবে। তখনকার যে পদ্ধতি, যে পদ্ধতিতে সত্য অন্বেষণ করতে গেছেন সূফী সাধকরা সেই পদ্ধতির অনেক পরিবর্তন, সংস্কার নেয়া হয়েছে হাক্কানীতে। (চলবে)।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন