বুধবার, ১ জানুয়ারী, ২০১৪

দেশবাসীকে কঠোর অবস্থানে যেতে হবে



দেশবাসীকে কঠোর অবস্থানে যেতে হবে

সংলাপ ॥ দেশের বর্তমান অবস্থায় দেশবাসীকে কঠোর অবস্থানে যাওয়া জরুরি হয়ে?উঠেছে। ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আজ যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে তাতে দেশবাসীর নমনীয় পন্থা অবলম্বনের কোনো সুযোগ নেই। প্রচলিত আইন ও সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধীনে দেশে এখন নির্বাচনী হাওয়া বইছে। এ নির্বাচন অনুষ্ঠান ছাড়া ভিন্ন  কোনো পথ দেশবাসী তথা সরকারের সামনে খোলা নেই। যারা এখনো ঘরে বসে চুপ রয়েছেন তাদেরকে এই বাস্তবতাটুকু বোঝানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকেই উদ্যোগী হতে হবে। প্রয়োজনে সকল মানুষকে ঘর থেকে রাস্তায় নেমে এসে এ ব্যাপারে সরকারকে কঠোর পন্থা অবলম্বনে বাধ্য করতে হবে।  যেমনটি তারা করেছে শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের মাধ্যমে রাজাকার কাদের মোল্লার ফাঁসি নিশ্চিত করে। যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে কেউ যদি ভুলেও নির্বাচন বানচাল করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় তাদের সে পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে জনগণকে রাস্তায় নেমে আসতে হবে। অবশ্য সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে ৩০ ডিসেম্বর সোমবার 'গণতন্ত্রের অভিযাত্রা' কর্মসূচি পালন করতে পারেনি বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজিরবিহীন তৎপরতায় সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন ঢাকার রাজপথ ছিল আওয়ামী লীগেরই দখলে। এ কর্মসূচি পালনের জন্য বিএনপির পক্ষ থেকেও কোনো ধরনের চেষ্টা লক্ষ্য করা যায়নি। কর্মসূচি ডেকে দলের কেন্দ্রীয়  নেতাদের নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় ইতোমধ্যে হতাশ হয়ে পড়েছে বিএনপির অধিকাংশ  নেতাকর্মী।
এদিকে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বাতিল ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে মঙ্গলবার বিক্ষোভ সমাবেশ এবং ১ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি রয়েছে ১৮ দলীয় জোটের। এই জোটের 'গণতন্ত্রের অভিযাত্রা' কর্মসূচি প- হলে দলীয়  চেয়ারপারসন ক্ষুব্ধ কণ্ঠে সোমবারও এ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। কিন্তু  সোমবার এ কর্মসূচি পালনে বিএনপির পক্ষ থেকে ন্যূনতম তৎপরতাও দেখা যায়নি। এর আগে ২৪ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া কর্মসূচি  ঘোষণার পর যে নেতারা ভিডিওবার্তা পাঠিয়ে যে কোনো ত্যাগের বিনিময়ে কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানিয়েছিলেন,  দেখা গেল সেই আত্মগোপনে থাকা নেতারা অন্তরালেই থাকলেন। সরকারি বাধার অজুহাত আর গ্রেফতার এড়াতে  কেন্দ্রীয় নেতাদের এ অবস্থানের কারণে তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও  কোনো তৎপরতা দেখাননি বলে জানা  গেছে।
জোটের এই রকম সমন্বয়হীনতায় ইতোমধ্যেই চরমভাবে হতাশ বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের  নেতাকর্মী। তাদের জন্য নেই  কোনো প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনাও। এ অবস্থায় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে  রেখে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি  দেশবাসীকে নতুন করে ফেলে দিয়েছে চরম উৎকন্ঠায়। বড় দল হিসেবে বিএনপিকে যারা সমর্থন করতো তারাও এ অবস্থায় ভীষণভাবে বিব্রত। এ অবস্থায় দেশে অর্থনৈতিক কর্মকা- সচল করাসহ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সরকারকে অবশ্যই কঠোর হস্তে সকল বিশৃঙ্খলাকে দমনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না  যে, সবার ওপরে দেশ তথা দেশের সংবিধান।  এই সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়েও যারা এর অমান্য করে তাদের প্রতি বিন্দু পরিমাণ সহানুভূতি দেখানোর আর কোনো সুযোগ নেই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন