মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০১৩

গণজাগরণ মঞ্চের ধ্বনি - জয় বাংলা




গণজাগরণ মঞ্চের ধ্বনি -
জয় বাংলা

শাহ্‌ আব্দুল বাতেন ॥ স্বাধীন বাংলাদেশে ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধী, মানবতা বিরোধী দেশ দ্রোহীদের অপরাধের বয়স ৪২ বছর। সময়ের ব্যবধানে সর্বক্ষেত্রে ওদের বৃদ্ধির শিকড় অতি গভীরে প্রবেশ করলেও অপরাধের সীলমোহর ওদের কপাল থেকে মুছে যায়নি। চিরাচরিত ভাষায় কথিত আছে, অপরাধ তথা অপরাধীকে আশ্রয়-প্রশ্রয়, পূনর্বাসন ও নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা প্রদানকারী মূলত উভয়ই সমান দোষে দোষী। গত ৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৩। সত্যের পথে পথিক নতুন প্রজন্ম। ঢাকার শাহবাগ চত্বর। চত্বর জুড়ে নীরব ক্ষোভের আল্পনা আঁকায় মত্ত ছিল মাত্র কজন। ব্যস্ততম রাজপথ। আল্পনার আকর্ষণে দিনে দিনে ভীড় মহাভীড়। প্রজন্মের জোয়ার। এরই এক সন্ধিক্ষণে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিবাদের বিস্ফোরণ ঘটায় নতুন প্রজন্ম। যে বিস্ফোরণের প্রথম শাব্দিক উচ্চারণ বা ধ্বনি ‘জয় বাংলা। ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই। ‘সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। দেশ জাতি ও মানবতা বিরোধী এক অপরাধীর বিরুদ্ধে মহামান্য আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট হতে না পেরে সমবেত প্রজন্মের ‘জয় বাংলা ধ্বনিতে বাঙালি এতদিনের আবদ্ধ হৃদয়ে জেগে উঠে সত্যের বাঁধ ভাঙ্গা জাগরণ। শুধু ঢাকা শহর নয়, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নেমে আসা দেশ ও স্বাধীনতা প্রেমী মানুষের ঢলে শাহবাগ পরিণত হয় জন সমুদ্রে। যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে জনতার ‘জয় বাংলা ধ্বনিত তরঙ্গে তরঙ্গায়িত দেশ আর অবাক বিশ্ব। সতর্ক অবস্থায় সরকার। নতুন প্রজন্মের আপোষহীন দৃঢ় প্রত্যয়ী নেতৃত্বে, বিবর্তনের পথ ধরে শাহবাগ চত্বরের স্বার্থক নামকরণ হয়ে উঠে ‘গণজাগণ মঞ্চ। যে মঞ্চ হতে জাগরণের ধ্বনি ‘জয় বাংলা
একাত্তরে বাঙালির মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রাণশক্তি ধ্বনি ছিল ‘জয় বাংলা। শত্রুকে পরাভূত করার অস্ত্র ছিল ‘জয় বাংলা। আর সেই মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। পরাধীনতার শৃংখলে আবদ্ধ বাঙালির মুক্তির লড়াইয়ে যে নেতাকে তৎকালীন গোটা জাতি ‘বঙ্গবন্ধু খেতাবে ভূষিত করেছিল তখনই। যাঁর সারা জীবনের আন্দোলন সংগ্রামের নেতৃত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের ডাকে আজ ‘বাঙালি স্বাধীন দেশের স্বাধীন জাতি। তিনি কোন দলের নন। তিনি দলমত জাত ধর্ম নির্বিশেষে সর্বকালের- সকলের। ‘জয়বাংলা ধ্বনি পরিপূর্ণ রূপ পেল নতুন প্রজন্মের হাতে। উল্লেখ্য যে, গণজাগরণ মঞ্চ ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপনের মধ্যদিয়ে, ১৫ আগষ্টের জাতীয় শোক দিবস পালন করে বঙ্গবন্ধুর প্রতি তাদের গভীর শ্রদ্ধার বহির্প্রকাশ ঘটায়।
এখন থেকে আর কোন রাজনীতি বা দলীয় ভাবধারার আশংকায় নয়, গণজোয়ারের সার্বজনিন ভাবধারায় গণজাগরণ মঞ্চের আরও সাহস জোগানো দুঃসাহসী ধ্বনি  ‘জয় বাংলা- এখন জাতীয় প্রজন্মের আকুতি ও দৃঢ় প্রত্যয়। ৪২ বছর আগে যে ধ্বনিতে উজ্জীবিত হয়ে এই বাংলার মাটিতে শত্রুদের পরাজিত করা হয়েছিল, সে ধ্বনির সম্মোহনী শক্তির বলে, যুদ্ধাপরাধী দেশীয় শত্রুদের যথোপযুক্ত বিচারের রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত গণজাগরণ মঞ্চের উজ্জিবীত প্রতিবাদী অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক এটাই বাঙালি জাতির প্রত্যাশা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন