মঙ্গলবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৩

সময়ের সাফ কথা....রাজনীতিকদের ব্যবসা ও ব্যবসায়ীদের রাজনীতি



সময়ের সাফ কথা....
রাজনীতিকদের ব্যবসা ও ব্যবসায়ীদের রাজনীতি

আরিফীন হক ॥ রাজনীতি কি এবং কেন এসব বিষয় নিয়ে তাত্ত্বিক আলোচনা এখন অনাবশ্যক ও হাস্যকর। যে সব তত্ত্বের কোন প্রয়োগ নেই সেসব নিয়ে কথা বলে কোন লাভও নেই। যখন কোন রাজনীতিক দেশ ও জাতির কল্যাণে নয়, নিজেদের দলের স্বার্থে এবং নিজের সাময়িক লাভ-ক্ষতির নিমিত্তে দলাদলি এবং কর্মনীতি পরিচালনা করেন তখন তাকে রাজনীতিক বলা যায় না। বলতে হয় - রাজনীতিকদের ব্যবসা।
দেশে এখন এই রাজনীতিক ব্যবসারই জয়জয়কার। রাজনীতিকদের সকল কর্মকান্ড ক্ষমতাকে ঘিরে। কেউ ক্ষমতায় যেতে চায় আর যারা ক্ষমতায় আছে তারা ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে চান। এর বাইরে মানুষের জন্য কোন রাজনৈতিক কর্মতৎপরতা এখন আর চোখে পড়ে না। কে কতটা দেশ ও জাতির কল্যাণ করতে পেরেছেন  এর উপর ভিত্তি করে আর রাজনীতিকদের মর্যাদা দেয়া হয় না। রাজনীতিকদের মর্যাদা এখন ক্ষমতা কেন্দ্রিক।
দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে  এখন ছড়িয়ে পড়েছে রাজনীতি। এমন কোন প্রতিষ্ঠান নেই যে প্রতিষ্ঠানে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে রাজনীতি লালিত হয় না। দেশে এখন কোন বিশুদ্ধ শিল্পপতি বা বুদ্ধিজীবী নেই, আছেন এদল বা ওদলের সমর্থক।
ব্যসায়ীরাও রাজনীতি করতে পারেন আবার রাজনীতিকরাও ব্যবসা করতে পারেন, কোন বাধা নেই। কিন্তু যেসব ব্যবসায়ী রাজনীতিতে এসেছেন তাদের উদ্দেশ্য কি দেশ ও জনগণের কল্যাণ, না-কি রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তি ও ক্ষমতাকে ব্যবহার করে নিজের ব্যবসা সমপ্রসারণ - এটি দেখতে হবে। অন্যদিকে যেসব রাজনীতিক ব্যবসায় জড়িয়ে  পড়েছেন তারাও কি ক্ষমতাকে নিজ স্বার্থে ব্যবহার করছেন না?
আসলে বাংলাদেশের রাজনীতি এখন অতি সামান্য ব্যতিক্রম ব্যতিত আগে ব্যবসায়ী ও পরে রাজনীতিক এবং আগে রাজনীতিক ও পরে ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে। দেশের রাজনীতি বিপর্যস্ত হবার এটাই মূল কারণ।
সাধারণ মানুষও এ বলয়ে আবদ্ধ হয়ে আছে। জনগণের একটা বিরাট অংশ তাদের রায় অল্পমূল্যে বিক্রি করে। তাই দলের মনোনয়ন পেতে এখন নীতি, আদর্শ বা ত্যাগ বিবেচনায় আসে না, কে কতটা অর্থ-বিত্তের মালিক  সেটাই হয়ে আছে যোগ্যতার মানদন্ড। মনোনয়নের এ অগণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতাই রাজনীতিকদের ব্যবসার দিকে এবং ব্যাবসায়ীদের রাজনীতির দিকে আকর্ষণ সৃষ্টি করছে। ফলে বাংলাদেশ একটি জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র না হয়ে ক্রমেই ব্যক্তি-দল এবং গোষ্ঠীকল্যাণ মূলক রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে। দেশে এখন গণতন্ত্রের বদলে কায়েম হতে চলেছে ব্যবসাতন্ত্র!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন