সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০১৪

হাক্কানী কথা



হাক্কানী কথা - ৭

সংলাপ ॥ আমরা যখন স্বীকার করি নবী মোহাম্মদ (সা.) সর্বশ্রেষ্ঠ নবী তখন তার সাথে কি আর কারো তুলনা করতে পারি? পারি না। কিন্তু এজিদ তা করেছে। 'ইব্রাহিম (আ.)-এঁর বংশধরদের প্রতি যেরূপ শান্তি বর্ষণ করেছো, মোহাম্মদ (সা.) -এঁর বংশধরদের প্রতিও সেরূপ শন্তি বর্ষণ করো' - এটা এজিদের দোয়া। এজিদই প্রথম এই দোয়া পড়েছিল যখন ইমাম হোসেনকে হত্যার সংবাদ পেয়েছিল। যখন ইমাম হোসেনের খণ্ডিত মস্তক এজিদের দরবারে আনা হয় তখনও সভাসদদের নিয়ে ভয় ভীতিতে এই দোয়া সে পাঠ করেছিল। অথচ এখন এই দোয়া পাঠের প্রচলন হয়ে গেছে। কোন সাধক এই দোয়া পাঠ করেন না। কারণ কোন সাধকই নবী মোহাম্মদ (সা.)-এঁর সাথে অন্য কোন নবীর তুলনা করেন না।
কয়েকদিন আগে আমার এক বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিল। তিনি বলছিলেন যে নবী মোহাম্মদ (সা.) নিজেও তো শান্তি আনার জন্য যুদ্ধ করেছেন, মানুষ হত্যা করেছেন। হ্যাঁ, তিনি তা করেছেন। প্রয়োজনের তাগিদে দেশবাসীকে বাঁচাবার জন্যে, হাজার হাজার মানুষকে বাঁচানোর জন্য, একজন বা কয়েকজনকে হত্যা করা যদি প্রয়োজন হয়ে পড়ে তাহলে তাতে অধর্ম হয় না। কিন্তু এটা প্রমাণ করে যেতে হবে যে, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যে, দেশের সমৃদ্ধির জন্যে, এই দেশকে একটা লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য তা করা হয়েছে। আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে হবে।
বাংলাদেশে কিছু ধর্মবেত্তা আছে তারা ভালো করেই জানে আল্লাহর নাম নিয়ে যত কিছুই করি না কেন কিছুই হবে না। আল্লাহ ব্যস্ত আছেন তাঁর পাগলদের নিয়ে, তাই তার নাম নিয়ে অন্যরা কে কি করছে তাতে তাঁর কিছু যায় আসে না। দুনিয়াদারিতেও তাই। সরকার প্রধানই জানেন কোথা দিয়ে কি ঘটছে, মাঠ কর্মী বা সাধারণ মানুষ তা জানতে, বুঝতে পারে না। যে বলবে যে উচ্চ পর্যায়ে যা ঘটছে তার সবই জানে সে নিশ্চয়ই মিথ্যা বলছে।
হাক্কানী লাকুম দ্বীনুকুম নিয়ে চলে। তোমার ধর্ম তোমার কাছে আমার ধর্ম আমার কাছে। হাক্কানীর মধ্যে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খৃষ্টান বলতে কিছু নেই। যার মধ্যে সত্য আছে, সত্যকে যে ধারণ ও লালন পালন করেন তিনিই হাক্কানী। হাক্কানী সবার ঊর্ধ্বে মানুষকে মূল্য দেয়। তাই বলে সব মানুষকে না। হাক্কানী সেই মানুষকেই মূল্য দেয় যিনি এক সত্যকে ধারণ করেছেন। সব তরিকার সারমর্ম নিয়ে তৈরি হয়েছে হাক্কানী তরিকা। হাক্কানী ওজায়িফ এসেছে ১৯৯০ সনে। প্রতিটি হাক্কানী দরবারে রবিবার ও বৃহস্পতিবার হাক্কানী ওজায়িফ পাঠ ও চর্চা করা হয়। যারা হাক্কানী ওজায়িফের পথ ধরে যেতে চায় তারা এগিয়ে যাবে। কিন্তু শুধু এই পথেই তুমি তোমার লক্ষ্য অর্জন করবে তা না। এমন কোন পথ নেই যে পথ তাকে আল্লাহর কাছে পৌঁছে দেবে না। তুমি কোন পথ ভালোবাস? তুমি কি ভালোলাগার স্তরে আছ নাকি ভালোবাসার স্তরে আছো? তুমি তোমার ভালোবাসার স্তর থেকে নিজেকে প্রেম জগতের দিকে অগ্রসর করতে চাও কি না, তোমার লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে, যে লক্ষ্য তুমি নির্ধারণ করলে সেই লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে তুমি প্রেম জগতে যেতে পারবে কিনা তার উপরই নির্ভর করবে তোমার সফলতা। মোনাফেকি ও শির্‌ক ত্যাগ করতে হবে। মোনাফেকি হচ্ছে অন্তরে এক বাহিরে আরেক আর শির্‌ক হচ্ছে তুলনা করা। আমরা নিজেকে তুলনা করি অন্যের সাথে, ভুলেই যাই যে, আমরা প্রত্যেকে অনন্য মানুষ। ইসলামে নিজেকে অন্যের সাথে   তুলনা করাকে হারাম করা হয়েছে। দু'জন মানুষ কখনও এক হতে পারে না। (সমাপ্ত)।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন