মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৩

সময়ের সাফ কথা .... গণপ্রতিরোধের বিকল্প নেই



সময়ের সাফ কথা ....
গণপ্রতিরোধের বিকল্প নেই

সাদি ॥ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসরদের পরাজিত করে বিজয় অর্জন করেছিলাম। বিজয়ের মাসে যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়েছে। এটি যেমন ন্যায়ের বিজয়, তেমনি বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার সূচনাও। কসাই কাদেরের ফাঁসির দন্ড কার্যকর হওয়ার পর যেখানে সারা দেশের মানুষ স্বস্তিবোধ করার কথা, যেখানে বিজয় মিছিল বের করার কথা, সেখানে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। জামাত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা দেশজুড়ে নাশকতা চালাচ্ছে। আগুন দিয়ে মানুষ পোড়াচ্ছে। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে। একজন যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর জামাত নৈতিকভাবে পরাস্ত, অবনত ও অনুতপ্ত হওয়ার কথা। কিন্তু অবনত ও অনুতপ্ত না হয়ে তারা উদ্ধত হয়ে আক্রমণ করছে '৭১ এর মতই। এই বিজয়ের মাসে কী করে রাজাকারদের দলটি সারা দেশের মানুষকে জিম্মি করে ফেলল? কী করে জনজীবনের স্বস্তি কেড়ে নিল? এই শক্তি তারা পেল কোথায়? রাজাকারদের বিচারের প্রতি জনগণের সমর্থন আছে। সমর্থন আছে ফাঁসির রায়ের প্রতিও। তার পরও এ রকম নাশকতা ঘটানোর সুযোগ কীভাবে পেল দুর্বৃত্তরা?
অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, খুব সহজে এই স্বাধীনতাবিরোধী দুর্বৃত্তরা থামবে না। এরা মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ, গণতন্ত্র ও স্বাধীন বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চায়। কারণ জামায়াত-শিবির চক্র অবিকল একাত্তরের কায়দায় বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে। সরকারের উচিত, জনগণের এই শত্রুর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলা এবং সহিংসতা বন্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
তবে কেবল সরকারের উপর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে বসে থাকলে চলবে না। জামাত-শিবিরের বর্বরদের প্রতিরোধে সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি জনগণকেও ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে। গণপ্রতিরোধ জামাত-শিবিরের তান্ডব থামানো যাবে না। '৭১ এর মত দল-মত নির্বিশেষে আবার গর্জে ওঠার সময় এসেছে। সকল বিভেদ ভুলে গিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের সময় এসেছে এখন। জামাত এখন তাদের অস্তিত্ব রক্ষায় মরণ কামড় দিচ্ছে। তাই আমাদের সবাইকে সাবধান হতে হবে। রাষ্ট্রকে হতে হবে সতর্ক এবং আরও বেশি তৎপর। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে এই অপশক্তির মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ধর্মান্ধ মৌলবাদী শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। এ সময় কারও চুপ করে থাকা ঠিক হবে না। বিরোধী দলেও অনেক মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তবুদ্ধির মানুষ আছেন। তাদেরও বুঝতে হবে, উগ্রপন্থী-ধর্মান্ধরা কেবল ক্ষমতাসীনদের জন্য বিপদ নয়, গোটা দেশের জন্যই বিপজ্জনক। অতএব, এই মুহূর্তে স্বাধীনতা রক্ষায় সবাইকে সোচ্চার হতে হবে জামাতের দেশদ্রোহী ধর্মান্ধ রাজনীতির বিরুদ্ধে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন