মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

মুক্তির সঙিন যুব শক্তি হও আগুয়ান

এসেছে ফাল্গুন নিয়ে আহ্বান -
মুক্তির সঙিন যুব শক্তি হও আগুয়ান

সংলাপ ॥ জাগো যুব সম্প্রদায় জাগো। নেশাগ্রস্ত হয়ে ঘুমিয়ে থাকার দিন শেষ হয়ে গেছে। আর কত ঘুমাবে! বাংলার আকাশে আজ দূর্যোগের ঘনঘটা। ধর্মের নামে অধর্ম, রাজনীতির নামে এক শ্রেণীর রাজনীতিকদের ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থে উন্মাদনা, বিদেশীদের লোলুপ দৃষ্টি থেকে বাংলাকে বাঁচাতে - সামাজিক পরিবর্তনে মূল কাণ্ডারি যুব সম্প্রদায় - আগামী প্রজন্মের আলোর দিশারীদেরকে নেশাগ্রস্ত রাজনীতির ঘুম ভেঙে বাংলা মায়ের আহ্বানে আবার ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে মুক্তির জয়গান গেয়ে। সময় আজ দ্বারপ্রান্তে।
পরীক্ষিত, যুব সমাজের সার্বিক উন্নতি ছাড়া এদেশে উন্নতি হতে পারে না। সেইজন্যে যুব সমাজের উত্থান সময়ের দাবী। দারিদ্র, অজ্ঞতা আর রাজনীতিকদের নিপীড়নে হতবিহ্বল গণমানুষকে বাঁচাতে যুব সমাজের হৃদয় প্রসারিত হোক, মুক্তির চিন্তায় বিভোর হোক- সহানুভূতির ডালা নিয়ে সমাজের প্রতিটি স্তরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়ুক সব বাধা অতিক্রম করে - এটাই সময়ের আহ্বান।
ভাবতে অবাক লাগে, যে যুব শক্তিকে জাতি সালাম জানিয়েছে স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে আরম্ভ করে সাংস্কৃতিক আন্দোলন সমূহের জন্য, যে যুব শক্তি জাতির জন্যে জীবন দিয়ে শহীদ হয়েছে - সেই যুব শক্তি নেতিবাচক ও ব্যর্থ কাজে জড়িয়ে পড়েছে এবং পড়ছে। অল্প বয়সে জীবনের লক্ষ্য ও ব্রতকে পদদলিত করে কিভাবে নিজের এবং দেশের অমঙ্গল ডেকে আনছে রাজনৈতিক প্ররোচনায় হঠাৎ বড়লোক হওয়ার নেশায়।
রাজনীতিকরা বিপ্লব, পরিবর্তন, বিবর্তন, ধর্মযুদ্ধের কথা বলছে বাংলার মাটিতে - কিন্তু মুক্তির কথা বলছে না। সব রকমের মুক্তি পেতে হলে যুব সমাজের চিন্তা জগতের চিন্তাগুলোর পরিবর্তন কার্যক্রম প্রণয়ন করে মুক্তির পথে উত্তরণ ঘটাতে হবে। এর জন্য অধ্যাত্মবিদ্যায় স্ব-শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে কারণ বাংলার মাটি-বাতাস-পানি আধ্যাত্মিকতায়?ভরপুর। ১৪১৯ বঙ্গাব্দের ফাল্গুনে অর্থাৎ ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে যুবসমাজের শক্তি দেশ তথা বিশ্ববাসীকে সে কথাই আবারো নতুন করে জানিয়ে দিয়েছে।  
রাজনীতিকরা নিজ ও দলীয় স্বার্থে যুব সমাজকে বাধ্য করেছে এবং করছে বিদেশী সংস্কৃতির মধ্যে হাবুডুবু খেতে। জীবন চলার পথে ওই বিদেশী সংস্কৃতি প্রবাহিত করতে গিয়ে আজ যুব সমাজ দূষিত। বাংলার মাটির ঐতিহ্য হলো কর্মের মাঝে আধ্যাত্মিকতা।
সেই আধ্যাত্মিকতা যুব সমাজ ভুলতে বসেছে এবং নিজস্ব সংস্কৃতিহীন জীবন ধারায় জীবন চলার পথ বেছে নিয়েছে। সময় এসেছে, বতর্মান সরকারের প্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব যুব সমাজকে সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে জাগ্রত করে ঐতিহ্যবাহী বাংলার সহজ-সরল পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য প্রেরণা দেয়া। যুব শক্তিই রূপান্তর ঘটাবে দূষিত পরিবেশকে। যুব শক্তিকে অনুপ্রাণিত করতে হবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে শপথ নেয়ার জন্য এবং সমাজ পরিবর্তনে সরকারকে মদদ যোগাতে হবে।
অনেক দেরী হয়ে গেছে। এসেছে আর একটি ফাল্গুন। সরকারকে সব ভুল শুধরিয়ে যুব শক্তির পিছনে অতন্দ্র প্রহরীর মতো দাঁড়াতে হবে যাতে যুবশক্তি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে, চিন্তাজগতের প্রসারতা বাড়িয়ে, দেশের সামগ্রিক উন্নতি সাধন করতে পারে।
যুব সমাজের এক অংশ বিভিন্নরকম নেশায় মোহাচ্ছন্ন হয়ে জীবন ধ্বংস করে দিচ্ছে। নেতিবাচকতায় আবদ্ধ হয়ে গেছে। সুস্থ চিন্তা ও স্বাস্থ্যকে হারিয়ে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মিথ্যাচার যুব শক্তির অন্য এক অংশকে হিংসা, লোভ ও ক্রোধের  বন্ধু হতে সহায়তা করছে। তাদের মধ্যে নতুন করে মনুষ্যত্ববোধকে জাগ্রত করতে সরকারকে শপথ নিতে হবে, যুব সমাজকে লক্ষ্য অর্জনে কাণ্ডারি হতে হবে সার্বিক সহযোগিতার জন্য উন্নয়নের পথে।

সময় এসেছে সরকারের, সব মহৎকাজে যুব শক্তিকে ফিরিয়ে আনতে দৃঢ় হবার। যুব সমাজ এক জলন্ত মোমবাতি। বাংলার মানুষ ওই শক্তিকে আজও অনুস্মরণ করে-অনেক কিছু আশা করে। সরকার তাদের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করলে অধিকার পাওয়া যাবেই। যুব সমাজের আলোতেই আছে অগ্রগতি ও উন্নতি - দেশ ও জাতির উন্নয়নের ও পরিবর্তনের মূল কথা। কর্মের মাঝে আধ্যাত্মিকতার ছোঁয়াচ লাগলে ঘরে ঘরে আবার জয়ধ্বনি উঠবে এবং সেই জয়গানে বাংলার আকাশ বাতাস মোহিত হয়ে শান্তির পরশ আনবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন