মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৩

নির্বাচনই কি সমাধান ?

নির্বাচনই কি সমাধান ?

মহিউদ্দীন মাসউদ ॥ সংবিধানের বাইরে কিছুই হবে না - ক্ষমতাসীনদের এক কথা। নির্বাচন তারা করবেন তবে তা সংবিধান মোতাবেকই হতে হবে। আমরাও   তাই-ই বলবো সংবিধানের বাইরে গিয়ে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা চলতে পারে না। নির্বাচন  সাংবিধানিক বিধি মোতাবেকই হতে হবে। কিন্তু ক্ষমতাকাঙক্ষী বিরোধীরা তা মানবেন না, তাই তাদের সিদ্ধান্ত নির্বাচন প্রতিহতের। তাদের নেত্রী ঘোষণা দিয়েই রেখেছেন - নির্বাচন প্রতিহতের জন্য সংগ্রাম কমিটি করার। এরকম দুই ধারী তলোয়ারের উপর দাঁড়িয়ে আমরা সাধারণ মানুষ। আমাদের রাজনীতিতে এটা কোন নতুন ঘটনা নয়, যারা যখন ক্ষমতায় থাকেন তখন ক্ষমতায় টিকে থাকবার জন্য সংবিধান একটি অস্ত্র হয়ে যায়। কিন্তু যেই সংবিধান মানুষদের রক্ষাকবজ বলে স্বীকৃত সেই সংবিধান মানুষকে কোন কালেই রক্ষা করতে পারেনি।
এই সরকারের মেয়াদ শেষ। বলতে গেলে হাতে গোনা কয়টি দিন মাত্র। তারপর কী হবে ? নির্বাচন কী হবে? হলে কোন্‌ নির্বাচন হবে? বিরোধীরা কী নির্বাচন করতে দেবে? না দিলে তাদের রাজনীতি কোন্‌ পথে চলবে? এসব প্রশ্নে এখন আলোড়িত সারাদেশ। আমরা জানি, আমাদের রাজনীতিতে গ্রহণযোগ্যতা আর বিশ্বাসযোগ্যতা বলে কোন শব্দ নেই। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য একটি মধ্যস্থতাকারী সরকার প্রস্তুত হলে তাতে সংবিধানের পবিত্রতা নষ্ট হবে এমনটা কোন যৌক্তিক মানুষ বিশ্বাস করবে না।
যে রাজনীতি আমাদেরকে সাড়ে চার দশকে এখানে এনে দাঁড় করিয়েছে সে রাজনীতি সম্পর্কে আমরা উদাসীন কেন? একটি জাতি তার স্বাধীনতার চার দশক পার করে বার বার একই আবর্তে আবর্তিত হতে পারে না। একদিন যে দেশ রক্তের বন্যা বইয়ে স্বাধীনতা এনেছিলো গণতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষতার মতো মৌলিক চেতনাকে ধারণ করে, আজ তারাই গণতন্ত্রের দুর্ভিক্ষে।
এক ভাষা এক সংস্কৃতির এক জাতি এখন ভিন্ন দুই ধারায়। আমরা নির্বোধের মতো যুগ যুগ ধরে এদেরই হাতে প্রতারিত হবার পরও এদের ক্ষমতায়নের রাজনীতিকে সমর্থন যুগিয়ে যাচ্ছি।
নির্বাচন আজ আর আমাদের রাজনীতির কোন সমাধান নয়। সংকট সমাধানের জন্য ভোগবাদের আসুরিক রাজনীতিকে 'না' বলতে হবে। নয়তো বার বারই একই সংকটের আবর্তে আবর্তিত হবে এ দেশের গণমানুষ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন