সময়ের
সাফ কথা....
নতুন
প্রজন্মের জাগ্রত হোক বিবেক
বাংলা বাঙালি বাংলাদেশ-এর
জাতীয় জীবনে ৭ মার্চ ধ্রুব সত্য। সেই সত্য প্রতিষ্ঠিত, ৭ কোটি মানুষ সাক্ষী, বঙ্গবন্ধুর
ঘোষণা ছিলো যুদ্ধের ঘোষণা, মুক্তির ঘোষণা, যুদ্ধের কলা-কৌশলের ঘোষণা সর্বোপরি সরকার
পরিচালনার ঘোষণা। পরবর্তীতে যা কিছু ঘটেছে তা ৭ মার্চের ফসল।
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ
বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষনার পর থেকে পরিকল্পিত এবং অপরিকল্পিত, জান্তে ও অজান্তে তৈরি
হয়েছে বাংলার রাজনৈতিক অঙ্গনে সকল বিভ্রান্তি। যার মূলে রয়েছে, যার নেপথ্যে সক্রিয়
কেবলই ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থ এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়া-আসার লোভ।
এ বিভ্রান্তি এবং বিভক্তি নয় কোন জাতীয় স্বার্থ উদ্ধার করতে। স্বাধীনতার সুফলকে ব্যক্তিকরণ
ও দলীয়করণ করা, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে চালিয়ে যাওয়া একচেটিয়া ব্যবসা নিরাপদ করে তোলা, সে
ব্যবসায় অন্য কেউ যাতে ভাগ বসাতে না পারে তারই কারণে রাজনৈতিক ইসলাম বাজারজাত করা হয়েছে,
বিতর্ক তৈরি করা হয়েছে, জিইয়ে রাখা হয়েছে এবং এখনও রাখা হচ্ছে।
অপরদিকে, দেখা যাচ্ছে
সত্য উদ্ঘাটন করতে নয়, মিথ্যা ও বিভ্রান্তির অবসান করতে নয় - বরং, ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠা,
পদ পদবী ও ভবিষ্যৎ প্রাপ্তির পথ সুগম করার জন্যই একদল বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও গবেষক
বৈদ্যুতিন ও মুদ্রণ মাধ্যমে মাঠে নেমে পড়েছে ধর্ম, দারিদ্র এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কে।
যা চাটুকারিতার স্থূলতম ধাপকেও অতিক্রম করে যাচ্ছে। বলাই বাহুল্য, গভীর সংকটে পতিত
হচ্ছে জাতির ইতিহাস। বিভ্রান্তির কবলে পড়ছে, ভবিষ্যতেও পড়বে বর্তমান ও আগামী প্রজন্ম।
বিকৃত ইতিহাসের বিষবাষ্প নষ্ট করে দিচ্ছে বাংলার মানুষের আত্মবিশ্বাস, যার একটা গুরুত্বপূর্ণ
অঙ্গ জাতীয় গরিমা, জাতীয় গর্ব। তিক্ত হলেও বাস্তবতা হচ্ছে জাতির ইতিহাস নিয়ে চলা এই
মিথ্যাচারিতার নদী স্রোতে রাজনৈতিক ইসলাম বিদেশ থেকে ভেসে এসে এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে
দেশ আজ দুর্নীতির সাগরের মুখে। আর্থিক দুর্নীতির পেছনে চালিকা শক্তি হয়ে কাজ করছে বুদ্ধিবৃত্তিক
দুর্নীতি। যে দেশের প্রধান প্রধান দলের জাতীয় নেতা এবং রাজনীতিকরা (সে সঙ্গে স্থানীয়
নেতৃত্বও) জাতির বিবেক এবং বুদ্ধিজীবীরা পথপ্রদর্শক বলে জাতির কাছে বিবেচিত হওয়ার কথা
সেখানে আজ তারা পরিচিত হচ্ছেন মিথ্যাচারিতার উৎসমুখ হিসেবে। দেশে তাদের দ্বারা পরিচালিত
সরকার, দল, প্রশাসন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান যে দুর্নীতির শিকার তা প্রমাণ দিয়ে বুঝাতে হবে
না, জাতি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করতে
গিয়ে অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হচ্ছেন দিনদিন। চিন্তাবিদরা ও নীতি নির্ধারকরা বলছেন মানসিকতার
পরিবর্তন করতে না পারলে কেবল মামলা দিয়ে দুর্নীতি দূর করা যাবে না। অর্থাৎ মানসিকতা
তথা চিন্তাজগতে চেতনার স্তরে বাংলার মানুষকে শিক্ষার মাধ্যমে তুলে আনতে না পারলে এবং
সর্বস্তরে সত্য প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রত্যয়ী না হলে দুর্নীতির প্রতিরোধ সম্ভব নয়। এজন্য
প্রয়োজন নতুন প্রজন্মের জাগ্রত বিবেক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন