বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০১৫

বাংলাদেশ ‘জনগণতন্ত্রী’ না ‘জনপ্রজাতন্ত্রী’

বাংলাদেশ ‘জনগণতন্ত্রী’না ‘জনপ্রজাতন্ত্রী’

আল্লামা মোহাম্মদ সাদেক নূরী ॥ অধুনা কয়েকটি সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কন্ঠে বার বার শোনা যায়, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মালিক জনগণ’। ‘বাংলাদেশের মালিক জনগণ’ এটা শতসিদ্ধ; তারপরও দেশের প্রধানমন্ত্রীর মুখে তা বার বার উচ্চারণ অবশ্যই আলাদা তাৎপর্যবহ। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক সাধুবাদ।
প্রশ্ন হলো, যে বাংলাদেশের মালিক জনগণ, সে বাংলাদেশ ‘জনগণতন্ত্রী’ না হয়ে ‘প্রজাতন্ত্রী’ হলো কেন? এক সময়ে দেশটা বৃটিশ রাজের অধীনই ছিল এবং জনগণও প্রজা-ই ছিলেন বটে; কিন' এখন তো আর তা নেই; এখন দেশটি স্বাধীন জনগণও কারো প্রজা নন। অতএব, এ স্বাধীন দেশটির বিশেষণ হিসাবে ‘প্রজাতন্ত্রী’ শব্দটি বেমানানই শুধু নয়, অস্বস্তিকরও বটে।
বাংলাদেশের সংবিধানে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী’ বিশেষণটি সংযোজনের যৌক্তিকতা ও সচেতনতা নিয়ে যতই প্রশ্ন থাক, শব্দটি প্রথম থেকেই সংবিধানে রয়েছে; অতএব প্রধানমন্ত্রী তো তা-ই আওড়াবেন, তবে শব্দটি সাধারণ্যে প্রায় অনুচ্চারিত বলেই বিষয়টি উপেক্ষিত রয়ে গেছে। অধুনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘন ঘন উচ্চারিত হওয়ার কারণে বিষয়টি চাউর হয়; কেবলই নিজের মধ্যে প্রশ্নের পর প্রশ্ন চারা দিয়ে ওঠে, তা হলে আমরা এখনও কারো প্রজা? রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ ‘কমনওয়েলথ এর সদস্য মানে কি আমরা জনগণ এখনও বৃটিশ রাজের প্রজা? আমি এবং আমরা জনগণ তা মানে কি? বাংলার মানুষ নিজেদেরকে কারো প্রজা মনে করলে ক্ষোভ এবং লজ্জা বোধ  করে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীবর্গ এবং সংসদ সদস্যগণেরও তা-ই হয় বলে চিন্তাবিদদের দৃঢ় ধারণা।

অতএব, সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট জনগণের মানবিক দাবী, অনতিবিলম্বে সংবিধানে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী’ শব্দের স'লে ‘জনগণতন্ত্রী’ প্রতিস্থাপন করে জাতিকে ক্ষোভ ও লজ্জা থেকে বাঁচান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন