দেশবাসী
চায়ঃ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তির মহাজোট
* সত্যের জাগরণে * সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে
* বুদ্ধিবৃত্তিক দূর্নীতি রোধে * সম্পদের সুষম বন্টনে * ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে * ধৈর্যশীল ও স্বনির্ভরশীল হতে * দৃঢ় প্রত্যয়ী
হতে
সংলাপ ॥ বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে বেশ
কিছু অভিযোগ উঠেছে। কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারও কারও চিন্তায় হাসিনা সরকারের
পক্ষে জনসমর্থন বেশ কিছুটা কমে গেছে। যারা এসব চিন্তায় মগ্ন তারা ভুল ভাবছেন। ভেবে
যদি ভাল লাগে, ভাবতে পারেন। বাস্তব হল এই যে, ক্ষমতায় আসার সুবাদে আরও খানিকটা শক্তি
বাড়াতে পেরেছে আওয়ামী লীগ। সুসময়ে অনেক বন্ধু জড়ো হয়েছেন। তাদের প্রভাবও সামান্য নয়।
সমালোচনার অনেক জায়গা আছে, কিন্তু হাসিনার ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা কমেনি। দেশের পরিস্থিতি
বদলের কথা ভাবারও কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ এখনও দেখা যাচ্ছে না।
সমাজের নানা স্তরে নানান সমস্যাগুলো বর্তমান
সরকারকে বুঝতে সাহায্য করছে, রাজনৈতিক সংগঠনগুলো কে কোথায় দাঁড়িয়ে আছে। অতীতে যে যে
ভুল হয়েছিল, চিহ্নিত করা হচ্ছে। সংশোধনের চেষ্টাও আরো দ্রুত করা দরকার। মতাদর্শগত দলিল তৈরি করার সময় এসেছে। ভোগবাদী জমানায় পোড়খাওয়া
কর্মীদের মধ্যেও কেউ কেউ অধঃপতিত হয়েছেন, সেখানে সংগঠন শক্তিশালী করার কাজটা খুবই জরুরি।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সুবিধা না
পেয়ে বা হতাশায় যারা ভুগছেন, তাদের কথা আলাদা। এরকম হয়েই থাকে। যারা আছেন, তারা কীভাবে
নতুন পরিস্থিতি বুঝে লড়াই করতে প্রস্তুত, সেটাই আসল কথা।
দল নির্দিষ্ট কারণে কিছু সদস্যকে দূরে
সরিয়ে রেখেছে। অনেকে সরে গেছেন হতাশায়, ভয়ে, কেউ কেউ লোভেও। সংবাদ মাধ্যমে বিপরীত ধর্মী
সিন্ডিকেট তৈরি করে সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে। সংগঠনের মূল শক্তি
অক্ষত থাকলে কর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনা থাকে, শুদ্ধির প্রক্রিয়া চালু থাকে এবং দল এগিয়ে
চলে।
সমালোচনা হচ্ছে। স্বাভাবিক। সরকারের বিরুদ্ধে
ষড়যন্ত্রের কারণ একটা নয়, অনেক।
কিন্তু সর্বোচ্চ নেতৃত্বের ভুলত্রুটি নিয়ে সমালোচনা হবে না? না হলে আর রাজনীতি কেন?
সমালোচনা হবে, বিতর্ক হবে, আবার নতুন করে লড়াই করার দৃঢ় প্রত্যয় উচ্চারিত হবে, রাস্তায়
নামা তো সেজন্যই।
স্তরে স্তরে দুর্নীতি, দুর্ব্যবহার ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।
ভুলত্রুটি নিয়ে আলোচনা হোক, সমালোচনা হোক, কিন্তু অতীত নিয়েই পড়ে থাকলে হয় না। অতীতের
ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবেই। আরও বড় কথা, ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে যথাযথ পথ খুঁজে নিতে
হবে, শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে একশো ভাগ, বিরোধী দলের ব্যর্থতার জায়গা চিহ্নিত
করে দায়িত্বশীল আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে জনগণকে নিয়ে যেহেতু জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। কিন্তু,
তাই বলে ভাড়াটে বাহিনী দিয়ে নয়। সংগঠনের পুনর্নিমাণ জরুরি।
মানুষের আস্তুা আরো বাড়াতে হবে। প্রক্রিয়াটা শুরু হওয়া চাই। শক্তি প্রাসঙ্গিক
থাকুক, দ্রব্যমূল্য কম হোক, সন্ত্রাসকে সত্য ও কৌশল দিয়ে প্রতিহত হোক, মিথ্যাচার যুক্তি
দিয়ে নিয়ন্ত্রণ হোক এটাই আসল কথা। সরকারের সাফল্য আসবে সেই পথ ধরে। ভবিষ্যতের কথা আগে
ভেবে লাভ নেই বরং বর্তমানের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে ভাবতে হবে। বর্তমান রাজনীতির প্রবাহমান
সত্য বার্তা জনগণের মধ্যে প্রচারের জন্যও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল রাজনৈতিক (ছোট বা
বড়ো) শক্তির জোরদার মহাজোট সংগঠন চায় দেশবাসী।
সমস্যাকে জিইয়ে রাখতে দেয়া নয়। কূটনীতিজ্ঞ
নেতা তিনিই, যিনি সমস্যার যথাযথ এবং দ্রুত সমাধান করেন। ২০২০ সালে উন্নত দেশে পরিণত
হতে গেলে বাংলাদেশে সর্বস্তরে একরৈখিক নিষ্ঠাবান নেতৃত্বের দরকার। নেতা তিনিই, যিনি
নিজের বিচার নিজে করে নিজের পথ নিজেই তৈরি করেন। তার
মধ্যে দায়িত্ব ও কর্তব্য এবং সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার গুণ থাকতে হয়। দৃঢ় প্রত্যয় থাকলেই
আসল নেতা হওয়া যায়। ২০২০ সালে পৌঁছাতে এখনও ৫ বছর বাকি। গড় বার্ষিক উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধির হার ১০
শতাংশে নিয়ে ধারাবাহিকভাবে ধরে রাখা গেলে তবেই বাংলাদেশ উন্নত দেশ হতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোকে
তরুণ প্রজন্মকে জেগে স্বপ্ন দেখা ও লক্ষ্য স্থির রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার ‘শপথ’ করাতে হবে। লক্ষ্য,
উপলব্ধি ও বাস্তবতা-বোধ জনগণের মধ্যে জাগিয়ে তুলতে পারলে তবেই দেশের উন্নতি সম্ভব।
রাজনীতিকদের স্মরণ রাখতে হবে, সব কিছুর পরেও দলের থেকে দেশের স্বার্থ দেখা অনেক বেশি
জরুরি। তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্ব দিয়ে নেতা হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করার এখনই সময়। লক্ষ্য, বিচার এবং আদেশ অন্তরে থাকলে,
অনুস্মরণকারী এবং দৃঢ় প্রত্যয়ী মানুষ হলে তবেই দেশের তরুণরা যোগ্য নেতা হয়ে উঠতে পারবেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন