মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৪

চিন্তার সংযম ও একরৈখিকতা

চিন্তার সংযম ও একরৈখিকতা

আল্লামা নূরী ॥ চিন্তা চেতনার একপ্রকার ক্রিয়া। মস্তিষ্কের বিভিন্ন চেম্বার অথবা কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন ঘটনার সূত্র ধরে চিন্তা, উদ্রেক উদ্‌গত ও উৎসারিত হয় এবং হৃদয়যন্ত্রে এসে তা নিবস্তু ও বস্তু নির্বিশেষে বিষয়াদি অবলম্বনে স্বতন্ত্র নাম ও রূপ লাভ ও ধারণ করে।
হৃদয়যন্ত্রে এসে নানান স্বতন্ত্র নাম ও রূপ লাভ ও ধারণ করার পূর্ব পর্যন্ত কোন ব্যক্তির মস্তিষ্কে ষাট/সত্তর অথবা আরো বেশি চিন্তা থাকলেও থাকতে পারে; কিন্তু তা হৃদয়যন্ত্রের ছকে এসে বিভিন্ন বিষয় আশ্রয়ী রূপ ও নাম লাভ ও ধারণ করার পর চিন্তা সততই সীমিত সংখ্যায় উপনীত হয়। এ সীমিত সংখ্যক চিন্তাকে নিজের পছন্দ ও প্রয়োজনানুযায়ী আরো সীমিত করার নাম চিন্তার সংযম। মনে রাখা প্রয়োজন যে, চিন্তার সংযম অর্থ চিন্তাকে সংখ্যায় কমিয়ে আনা, চিন্তার পরিসর অথবা প্রসারতা বা সীমাকে সংকোচিত করা নয়।
উল্লেখ্য যে, চিন্তাকে সংখ্যায় সীমিত বা সংযত করা হলে কোন বিষয়ে চিন্তার কার্যকারিতা, শক্তি নিপুণতা এবং নির্ভুলতা বা বিশুদ্ধতা ততই বৃদ্ধি পায়। এজন্যই সাধকগণ সাধারণত একরৈখিক অর্থাৎ বস্তু ও নিবস্তু নির্বিশেষে একই সময়ে কেবল কোন একটি বিষয়ে নিজ নিজ চিন্তাকে নিবিষ্ট নিবদ্ধ করা ও রাখার অভ্যাস করার উপদেশ দিয়ে থাকেন; কারণ তাতে চিন্তা শক্তিশালী ও নির্ভুলভাবে সফল হয়।
উল্লেখ্য যে, চূড়ান্ত অর্থে চিন্তার সংযমের মর্মার্থই হলো চিন্তাকে একরৈখিক তথা এক সময়ে একচিন্তায় নিজ সর্বশক্তি নিয়োগ-নিবিষ্ট করার সাধনা কিংবা অভ্যাস করা।

সার্থক ও সফল কার্যকর চিন্তার জন্য এর কোন বিকল্প নেই। প্রসঙ্গক্রমে স্মর্তব্য যে, চিন্তার মূল উপাদান ও উৎস ইন্দ্রয়াদি অর্থাৎ যে সকল দেহ-যন্ত্র ও শক্তি দ্বারা বাহ্য বিষয় সম্বন্ধে জ্ঞান ও বিভিন্ন ক্রিয়া সম্পাদনের সামর্থ জন্মে। সে সবের সংগৃহীত তথ্যাদি। মস্তিষ্ক হলো চিন্তার প্রক্রিয়া ও প্রকর্ষণযন্ত্র; আর হৃদয় হলো চিন্তার শ্রেণী বিন্যাস যন্ত্র বিশেষ, এ যন্ত্রে এসে চিন্তা বিশেষায়িত এবং বিশিষ্ট হয়। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন