মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০১৩

তরীকাপন্থীদের পবিত্র কর্তব্য প্রজন্ম যোদ্ধাদের সঙ্গে এখনি একাত্মতা


তরীকাপন্থীদের পবিত্র কর্তব্য

প্রজন্ম যোদ্ধাদের সঙ্গে এখনি একাত্মতা

লুটেরা ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজীরা নয়, শোষক চরিত্রের শাসক মোঘল-পাঠান নয়, ভারতবর্ষে শান্তি ধর্ম ইসলাম  নিয়ে এসেছিলেন, ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সূফী সাধকগণ জনসাধারণে যাঁদের পরিচিতি অলি-আউলিয়া, দরবেশ নামে। শান্তিধর্ম ইসলাম মাতৃভক্তি শেখায়, মাতৃভাষা প্রীতি শেখায়, মাতৃভূমি প্রেম শেখায়। শান্তিধর্ম ইসলাম বিভেদ-ফ্যাসাদকে পরিহার করে, হিংসা, ঘৃণা, সহিংসতা থেকে দূরে রাখে। শান্তিধর্ম ইসলাম অন্যায়ের অসত্যের বিপক্ষে থাকে।
এই উপমহাদেশের ইতিহাসে, এই বাংলার, এই বাংলাদেশের ইতিহাসে এর নজির পাওয়া যায় ভুরি ভুরি। সে হাজার বছরের দূর অতীতেই হোক কিংবা নিকট অতীতের ইতিহাসের পাতাতেই হোক। নিকট অতীতে যেমন সাধক ফকির মজনু শাহ্‌ থেকে সাধক মাওলানা ভাসানী লড়াইয়ে রাজপথে দাঁড়িয়েছিলেন মজলুম জনতার পাশে; সাধক নজরুলকে দেখা গেছে শাণিত লেখনী নিয়ে অন্যায়-অসত্যের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে; তেমনি, আড়ালে থেকে প্রচারবিমুখ নিভৃতচারী কত যে সাধক নিরবে, অগোচরে ন্যায়যুদ্ধে ভূমিকা রেখে গেছেন; এখনও রাখছেন তা রয়ে গেছে, রয়ে যায় ইতিহাসের পাতার বাইরে!
এর সাক্ষী অন্তত ১৯৭১ এর বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ। সে সময়ে নিভৃতচারী আধ্যাত্মিক সাধকগণের সংস্পর্শে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিলো যাদের, তাদের সাক্ষ্য নিলে পাওয়া যাবে যুদ্ধের পক্ষে নিরস্ত্র মানুষদের বাঁচাতে সাধকগণের লৌকিকতায় থেকে  অলৌকিক  ক্ষমতার প্রয়োগের ঘটনাবলী।
আজকের বাংলাদেশে ২০১৩ তে এসে সূচীত দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধে পক্ষ ভাগ হয়ে গেছে সুস্পষ্টভাবে। যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী, যুদ্ধাপরাধের পক্ষ শক্তি, নারকীয় তা-বের স্রষ্টাশক্তি, ধর্মান্ধ ধর্মব্যবসায়ী শক্তি একদিকে আর তার অপরদিকে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের তথা মুক্তিকামী মানুষের শক্তি, ধর্মযুদ্ধে ধর্মপ্রাণ মানুষের শক্তি, ন্যায়ের যুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠাকামীদের শক্তি।
প্রশ্ন হচ্ছে, সূফী সাধক, অলি-আউলিয়াগণের যারা অনুসারী, দেশের মানুষের ৭০ শতাংশ তরীকাপন্থী যে বিশাল জনগোষ্ঠী, যারা প্রতিনিধিত্ব করছেন আজকের এই লড়াইয়ে তাদের ভূমিকা কতটুকু সময়োপযোগী? তাদের ভূমিকা সাধকগণের দৃষ্টিতে কতটুকু গ্রহণযোগ্য? কতটুকু সন্তোষজনক? বিচ্ছিন্ন কিছু বিবৃতি অথবা প্রতীকী দু’একটি খন্ড বৈঠক, সেমিনার, সংবাদ সম্মেলনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে তরীকার দায় কি মিটানো সম্ভব? সাধককূলের প্রকাশ্য জনপ্রতিনিধিত্বের দায়িত্ব কি এতেই শেষ হয়ে যায়?
প্রশ্নগুলোর মুখোমুখি নিজেরাই নিজেদেরকে দাঁড় করাতে হবে তরীকাপন্থীদের। তখনই তারা দেখতে পাবেন সাধকগণের শিক্ষা আজ এ কথাই বলে যে তরীকাপন্থীদের সবকিছু নিয়ে এসে একাত্ম হওয়া দরকার এই যুদ্ধে শাহবাগের প্রজন্ম সেনানীদের সাথে। আর তখনই তাদের কাছে ধরা পড়বে অন্তরালে অতন্দ্র ক্রিয়াশীল সাধকগণের ইশারা। তারা দেখতে পাবেন, তাদের চোখে ধরা পড়বে প্রজন্মযোদ্ধাদের উপর সাধকগণের সতত বর্ষণরত আশীর্বাদের ধারা।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন